ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের কথিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে নেমে আটক হয়েছেন রাজ্যটির বিরোধী দল বিজেপির বেশ কয়েকজন নেতা। আটককৃতদের মধ্যে বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চ্যাটার্জিসহ আরও বেশ কয়েকজন রয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) রাজ্যটির রাজধানী কলকাতায় বিক্ষোভে নামলে তাদের আটক করে পুলিশ। মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের কথিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদের অংশ হিসাবে মঙ্গলবার রাস্তায় নামেন বিরোধী দলীয় নেতা শুভেন্দু অধিকারীসহ রাজ্যটির বেশ কয়েকজন বিজেপি নেতা। পরে মিছিল নিয়ে রাজ্য সচিবালয় ‘নবান্ন’-এর দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের আটক করে।
এনডিটিভি বলছে, শুভেন্দু অধিকারী, বিজেপি সংসদ সদস্য লকেট চ্যাটার্জি এবং রাহুল সিনহাসহ দলের অন্য নেতারা সচিবালয়ের কাছে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর দিকে যাওয়ার সময় পুলিশ বাধা দেয় এবং একটি প্রিজন ভ্যানে করে তুলে নিয়ে যায়।
এর আগে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের শত শত বিজেপি সমর্থক মঙ্গলবার সকালে ‘নবান্ন অভিযান’ বা সচিবালয়মুখী পদযাত্রায় অংশ নিতে কলকাতা এবং পার্শ্ববর্তী হাওড়ায় জড়ো হন।
সংবাদমাধ্যম বলছে, আটকের পর লালবাজারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে শুভেন্দু অধিকারী, লকেট চট্টোপাধ্যায়, রাহুল সিনহাকে। এর মধ্যে হাওড়া স্টেশনে বিজেপি রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারকে ঘিরে উত্তেজনা দেখা দেয়।
হাওড়া স্টেশনেই বিজেপি কর্মী সমর্থকদের উদ্দেশে বার্তা দিতে শোনা যায় তাকে। মিছিল নিয়ে সেখান থেকে নবান্নের উদ্দেশে যাত্রা করেন বিজেপি রাজ্য সভাপতি। সুকান্ত বলেন, ‘গণতান্ত্রিক বিচার ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। জরুরি অবস্থার সময় যে ধরনের ব্যরিকেড করা হয়েছিল সেই একই জিনিস দেখতে পেলাম কলকাতার রাস্তায়। অগণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে বিরোধী দলনেতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
এদিকে নবান্ন অভিযান সফল করতে মরিয়া বিজেপির কর্মী সমর্থকরা। অন্যদিকে রাজ্য পুলিশও তা রুখতে কোনো কমতি রাখতে চায়নি। আর এই দু’য়ের মাঝে পড়ে নাজেহাল কলকাতার সাধারণ মানুষ।
পুলিশ-বিজেপির অনড় অবস্থানে দ্বিতীয় হুগলি সেতুতে কলকাতা অভিমুখী রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফুঁসছেন সাধারণ মানুষ। বন্ধ রাস্তায় একের পর এক গাড়ি দাঁড়িয়ে পড়েছে। দাঁড়িয়ে অ্যাম্বুলেন্সও। নবান্ন অভিমুখে সবগুলো রাস্তায়ই মঙ্গলবার কার্যত বন্ধ রয়েছে।
আটকের আগে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দিয়ে শুভেন্দু বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি কখনও বলেনি নির্বাচন ছাড়া চেয়ারে বসে পড়বে। কিন্তু তৃণমূল কংগ্রেস সরকার পশ্চিমবঙ্গকে উত্তর কোরিয়া (নর্থ কোরিয়া) বানিয়ে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে পালিয়ে গোটা রাজ্যের পুলিশকে রাস্তায় নামিয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘পুলিশের ভেতরেও আমার লোক আছে প্রচুর। আমি ব্যক্তিবাদে বিশ্বাস করি না। এটা বিজেপির কর্মসূচি।’