শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সাইবার আইনের প্রত্যাহার হচ্ছে ৫৮১৮ মামলা নদী দূষণমুক্ত করা গেলে পরিবেশ উন্নত হবে ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক অফিস আদালত খুলেছে, যানচলাচল স্বাভাবিক ছাগলকাণ্ডে মতিউর ও তার স্ত্রী এবং সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত বরুড়ায় মামার বিরুদ্ধে ভাগিনার প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ! মোশারফ প্যারিস অলিম্পিকে ডাক পেলেন অলিম্পিক রিংয়ে সাজবে আইফেল টাওয়ার প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা! বরিশাল প্লে-অফে শক্তিশালী হচ্ছেন রওশন, দুর্বল জিএম কাদের! খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মিনিট পরপর চলবে মেট্রোরেল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন ৪৮ নারী প্রার্থী সিরিজ নির্বাচন করতে চায় ইসি

শারদীয় দুর্গাপূজার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন,আগামীকাল ষষ্ঠী

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : সেপ্টেম্বর ৩০, ২০২২

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীসহ সারাদেশের মণ্ডপগুলোতে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় বাংলাদেশ পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তারা জানিয়েছেন, দেবীর বোধন অনুষ্ঠিত হয়েছে আজ। আগামীকাল শনিবার (১ অক্টোবর) ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে।

সারাদেশে এবার ৩ হাজার ২৬৮টি মণ্ডপে দুর্গাপূজা উদযাপিত হবে। এরমধ্যে রাজধানীতে ২৪২টি মণ্ডপ রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দির, রামকৃষ্ণ মন্দির, ধানমন্ডি পূজামণ্ডপ ও বনানী সর্বজনীন পূজামণ্ডপকে বিশেষ হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করা হয়েছে। ঢাকার বৃহত্তর মন্দির হলো সিদ্ধেশ্বরী কালী মন্দির, রমনা কালী মন্দির, উত্তরা সর্বজনীন পূজামণ্ডপ, বসুন্ধরা সর্বজনীন পূজামণ্ডপ এবং কৃষিবিদ ইনস্টিটিউটের পূজামণ্ডপ। এছাড়া ২ তারকা চিহ্নিত ৮৬টি পূজামণ্ডপ, এক তারকাবিশিষ্ট ৭৭টি এবং সাধারণ শ্রেণির ৬১টি পূজামণ্ডপ রয়েছে।

পূজা-উৎসব

রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার পূজা মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখা গেছে, মঞ্চ তৈরি ও প্রতিমাকে কাপড় পরানোর কাজ শেষ হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রতিমাকে সাজিয়ে তোলার কাজও চলছে। মন্দিরের চারপাশও সাজানো হয়েছে বাহারি নকশায়। মন্দিরের প্রধান ফটকসহ অন্যান্য জায়গাগুলোও বর্ণিল হয়ে সেজে উঠেছে।

পূজা উদযাপনকে ঘিরে সরকারের নেওয়া পদক্ষেপে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি জে এল ভৌমিক। তিনি বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশের পূজা পণ্ডপগুলোতে প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি এরইমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। রাত পোহালেই আগামীকাল ষষ্ঠীর মধ্য দিয়ে পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে, ৫ অক্টোবর (বুধবার) বিসর্জনের মধ্য শেষ হবে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে এবারের পূজা উদযাপনের আশা করছি আশা করছি আমরা।

আতাতুর্ক পার্ক বনানী পূজামণ্ডপ 6
বনানীর কামাল পাশা আতাতুর্ক পার্কে পূজামণ্ডপের প্রস্তুতি। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন
তিনি আরও বলেন, দেশের বিদ্যমান পরিস্থিতির আলোকে সরকারের পক্ষ থেকে পূজা নির্বিঘ্নে করতে সচেতনভাবে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। আমরা বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার আশঙ্কা করছি না। তবে সুযোগ সন্ধানীরা সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে, সে ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি আমরাও যথেষ্ট ব্যবস্থা নিয়েছি। তিন শিফটে ভাগ হয়ে প্রতিটি মণ্ডপে আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা দায়িত্ব পালন করবে।

এদিন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় সভা করে পূজা উদযাপন কমিটির নেতারা। সেখানে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্কভাবে মন্দিরে ও মণ্ডপ পাহারা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন দলটির সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তি প্রকাশ্যে যতটা নিষ্ক্রিয় ভেতরে ভেতরে ততটা সক্রিয় আছে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দুর্গাপূজা উপলক্ষে আগের বছরের বিভিন্ন ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার কারণে এবার সরকার সতর্ক রয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি মন্দিরে মন্দিরে, মণ্ডপে মণ্ডপে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের সতর্কভাবে পাহারা দিতে হবে।

খামারবাড়ি 1
এর আগে বৃহস্পতিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, রাজধানীর চারটি বিশেষ মণ্ডপে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবে। নিরাপত্তার জন্য আর্চওয়ে থেকে শুরু করে সিসিটিভি ক্যামেরাসহ সবকিছু থাকবে। ঢাকার ৫টা বৃহত্তর মন্দিরেও সিসিটিভিসহ আমাদের পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। ২ তারকা চিহ্নিত, এক তারকাবিশিষ্ট ও সাধারণ শ্রেণির পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় সাধারণ ফোর্সের পাশাপাশি আয়োজকদের পক্ষ থেকে পর্যাপ্ত স্বেচ্ছাসেবক মোতায়েন থাকবে।

ডিএমপি কমিশনার বলেন, আমরা জঙ্গি হামলা প্রতিরোধ করতে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। কারণ, বেশ কিছু পূজামণ্ডপ ঝুঁকিতে রয়েছে। আমাদের কাছে তথ্য আছে, ৫০ যুবক জঙ্গি হামলার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হয়ে গেছে। তারা বিভিন্ন পূজামণ্ডপে হামলার জন্য ট্রেনিংও করছে, এগুলোর ব্যাপারে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে। পূজায় কোনও সহিংস ঘটনার আগে গোয়েন্দা তথ্য আমাদের থাকবে।

মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেন, যেকোনও পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য পূজামণ্ডপে আমাদের কন্ট্রোল রুমসহ সব জায়গায় আলাদা ফোর্স মোতায়েন থাকবে। পূজায় কোনও ধরনের নাশকতা যাতে না ঘটে সেই বিষয়ে খেয়াল রেখে আমরা কাজ করছি। তারপরেও কোথাও হামলা হলে সেটি মোকাবিলার জন্য আমাদের যথেষ্ট প্রস্তুতি রয়েছে। যেসব পুণ্যার্থী আসবেন তাদের তল্লাশিসহ যেসব জিনিস নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ নিষেধ তারা যেন সেগুলো নিয়ে প্রবেশ করতে না পারে, এ বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্তরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

পূজায় এসে নারীদের শ্লীলতাহানি কিংবা মাদক নিয়ে নাচানাচি প্রতিরোধ এবং সারা শহরে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার জন্য বিশেষ ব্যবস্থাপনা থাকবে। এছাড়া, বিসর্জনের দিন নির্দিষ্ট রুট ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে বিসর্জনস্থলে পৌঁছাবে। সুশৃঙ্খলভাবে বিসর্জন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ