কোভিড মহামারীর পর ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে গত মার্চেই খাদ্যমূল্য রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছে যায়। তবে এর পরের দুই মাসে খাদ্যশস্য ও মাংস উভয়ের দাম কমতে শুরু করেছে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা- এফএও।
শুক্রবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে এসব তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে বলেই জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এফএও-র খাদ্যমূল্যের সূচকে মে মাসে গড় পয়েন্ট হয়েছে ১৫৭ দশমিক ৪, যা এপ্রিলে ছিল ১৫৮ দশমিক ৩। এপ্রিলে যা ছিল ১৫৮ দশমিক ৫।
আগের মাসের তুলনায় মে মাসে খাদ্যমূল্য কমলেও গত বছরের তুলনায় মাসটির সূচক এখনও ২২ দশমিক ৮ শতাংশ বেশি।
খাদ্যশস্য সরবরাহ ও চাহিদা নিয়ে পৃথক অনুমানে এফএও বলছে, চার বছরের মধ্যে ২০২২-২৩ সালেই প্রথমবার বিশ্বজুড়ে খাদ্যশস্যের উৎপাদন কমতে যাচ্ছে। বিশ্ব সংস্থাটির ধারণা মতে, ২০২১ সালের রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদনের চেয়ে এক কোটি ৬০ লাখ টন কমে এ বছর উৎপাদন ২ হাজার ৭৮৪ কোটি টনে দাঁড়াবে।
গত মাসে দুধ, চিনি ও উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্য সূচকগুলো কমলেও মাংসের সূচক বেড়ে সর্বকালের সর্বোচ্চের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। খাদ্যশস্যের সূচকও বেড়ে যায় ২ দশমিক ২ শতাংশ। আগের মাসের তুলনায় মে-তে গমের মূল্য সূচকও ৫ দশমিক ৬ শতাংশ বেড়েছে; গত বছরের একই সময়ের তুলনায় এই বৃদ্ধির হার ৫৬ দশমিক ২ শতাংশ।
জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থা বলছে, গমের দামের এই ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার জন্য ভারতের রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা এবং রাশিয়ার আক্রমণের কারণে ইউক্রেনে উৎপাদন কম হওয়ার সম্ভাবনাই ভূমিকা রাখছে।
এদিকে, এপ্রিলের তুলনায় গত মাসে উদ্ভিজ্জ তেলের মূল্য সূচক ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। এর পেছনে পাম তেল রপ্তানিতে ইন্দোনেশিয়া স্বল্প সময়ের জন্য যে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল, তা তুলে নেয়াকে অন্যতম কারণ বলা হচ্ছে।
এফএও-র প্রধান অর্থনীতিবিদ ম্যাক্সিমো টোরেরো কুলেন বলেন, “রপ্তানিতে বিধিনিষেধ বাজারে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি করে, যার ফলে দাম বেড়ে যেতে ও দাম নিয়ে অস্থিরতা তৈরি হতে পারে। বিধিনিষেধ প্রত্যাহার ও রপ্তানি সহজভাবে চলতে দেয়া যে কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তেলবীজের দাম কমে যাওয়াটা সেটাই প্রমাণ করে।”
বৈশ্বিক খাদ্যশস্য উৎপাদন নিয়ে প্রথমবারের মত দেয়া পূর্বাভাসে এফএও এবার ভুট্টা, গম ও চালের উৎপাদন কম হতে পারে বলেও ধারণা দিয়েছে।
বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি বিষয়ক সংস্থাটি বলছে, “মাটিতে থাকা শস্যের অবস্থা ও রোপণের অপেক্ষায় আছে- এই দুইয়ের ওপর ভিত্তি করেই পূর্বাভাসটি করা হয়েছে।” সূত্র- রয়টার্স।