অর্থনীতিতে মূল্যস্ফীতি যেন বর্ণহীন কার্বন মনোক্সাইডের মতোই। ধূসর করছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জীবন। এই অভিঘাতেই ভুগছেন রিকশাচালক বাবুল। পেটের দায়ে ব্যস্ত ঢাকায় যেসব মজুর আর ভ্রাম্যমাণ ব্যবসায়ীরা রয়েছেন, তাদের জীবনের গল্পটাও অনেকটা এমনই।
দ্রব্যমূল্যের চাপে বরাবরের মতোই ধুকছে নিম্ন ও মধ্যবিত্তের জীবন। সরকারি পরিসংখ্যানেও স্পষ্ট মানুষ ভালো নেই। গত নয় বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ মূল্যস্ফীতি ঘটেছে দেশে। তবে এই হার আরও বেশি বলে দাবি অর্থনীতিবিদদের।
টিসিবির হিসাবে, গত এক বছরে চালের দাম ১১ শতাংশ, আটা ৫০, ডাল ও তেলের দাম অন্তত ৪৫ শতাংশ বেড়েছে। খাদ্য বহির্ভূত খাতেও খরচটা বাড়ছে সমানতালে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসাবে, জুনে গত ৯ বছরে সর্বোচ্চ ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ মূল্যস্ফীতি রেকর্ড করা হয়। তবে অর্থনীতিবিদের মতে এই হার আরও বেশি।
বিআইডিএস সাবেক মহাপরিচালক এম কে মুজেরী জানান, বাস্তবে বাজারে যে মূল্যের বৃদ্ধি দেখছি এটা হয়তো পরিসংখ্যানে সঠিক ভাবে উপস্থাপিত হচ্ছে না।
মূল্যস্ফীতির চাপে সমাজে ভাঙ্গন তৈরি হচ্ছে বলে মনে করেন এই অর্থনীতিবিদ। উত্তরণে বাজার ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী জোরদারের আহবান জানান তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রাশেদ আল মাহমুদ তিতুমীর জানান, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের যে নিয়ন্ত্রণহীনতা এবং মধ্যস্থতাকারীদের দৌরাত্ম্য আর এ পরিস্থিতেতে রাষ্ট্রের যে ভূমিকা রাখার কথা, তার অভাবে আমরা সমাজে একটা বড় ধরনের ভাঙনে পড়ছি।
শুধু বাংলাদেশই নয়, আমেরিকা ও ইউরোপের বেশ কয়েকটি দেশও ধুঁকছে উচ্চ মূল্যস্ফীতিতে।