পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন জানিয়েছেন, মিয়ানমার থেকে অবৈধ অস্ত্র, মাদক, চোরাচালান ও মানবপাচার বন্ধে প্রয়োজনে সীমান্তে গুলি চালানো হবে। মন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার ও বাংলাদেশ বর্ডারে গুলি না চালানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল।
কিন্তু অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে এখন থেকে গুলি চালানো হবে। তাহলে মানব, মাদক ও অস্ত্র চোরাচালান বন্ধ হবে। তবে এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সিদ্ধান্ত নেবে।
মঙ্গলবার (০৫ অক্টোবর) দুপুরে সিলেট ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভারত সরকারের উপহারের অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠান শেষে স্থানীয় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, ১৯৭৮ সালে দুই লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আসে। ১৯৯২ সালে আসে দুই লাখ ৫৩ হাজার। মিয়ানমার সরকার প্রায় দুই লাখ ৩৬ হাজার নিয়ে যায় আলোচনার মাধ্যমে। আর বাকিরা জাতিসংঘের আশ্রয়ণে থেকে যায়। এখন সংখ্যা অনেক বেশি, ১১ লাখ। এনজিওগুলো ওদের ফিরিয়ে দেওয়ার কথা না বলে, দীর্ঘমেয়াদি চিন্তা করে। অথচ গত ৪ বছর রাখাইনে কোনো মারামারি নেই। তারা বলে না, ওখানে যাও। এখানে রেখে তারা তাদের ভালো রাখার চিন্তা করছে। তারা কথা বলতে গেলে বিভিন্ন শর্ত দিচ্ছে।
ড. মোমেন বলেন, বিভিন্ন দেশ রোহিঙ্গাদের জন্য অনেক টাকা দিচ্ছে। কিন্তু সেই টাকা কীভাবে খরচ হচ্ছে, তা আমরা জানি না।
রোহিঙ্গা নেতা মুহিবুল্লাহ হত্যার বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ছেলেটা রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফিরিয়ে নিতে কথা বলেছিল। ওকে মেরে ফেলা হলো। সে বলতো বাংলাদেশে আমাদের ভবিষ্যত নেই। ওখানে গেলে আমরা ভালো থাকবো। কিন্তু তাকে মেরেই ফেললো! মুহিবুল্লাহর হত্যার বিষয়টি তদন্ত করে সঠিক তথ্য নেবো, খুনিদের শাস্তি হবে।
বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত হত্যা প্রসঙ্গে ড. মোমেন বলেন, আমরা খুবই দানবীর। আমরা বর্ডারে কাউকে মারি না। মাঝেমধ্যে প্রতিবেশী দেশের হাতে এক-দু’জন মারা গেলে মিডিয়া আমাদের জান শেষ করে দেয়। কেউ মরলে মিডিয়ায় চিৎকার শুরু হয়। বাংলাদেশ-ভারত নীতিগতভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বর্ডারে একটি লোকও মরবে না।
মিয়ানমার সীমান্ত ঝামেলাপূর্ণ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার বর্ডারে গুলির সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও ভালো বলতে পারবে। এই বর্ডার খুবই ডিফিকাল্ট।
অ্যাম্বুলেন্স হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম কুমার দোরাইস্বামী, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমান, ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ব্রায়ান বঙ্কিম হালদার, প্রমুখ।