শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:৪৫ পূর্বাহ্ন

মিলছে না রহস্যজনক অগ্নিকাণ্ডের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুন ১২, ২০২২

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে বিএম কনটেইনার ডিপোতে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ। কিন্তু সেই আগুন কিভাবে লাগল, এক সপ্তাহ পরও তার উত্তর মিলছে না।

তদন্তকারী কর্মকর্তারা ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ছবি খুঁজলেও মিলছে না তা। কারণ, নষ্ট হয়ে গেছে সব সার্ভার। ফুটেজ কেন্দ্রীয়ভাবে সংরক্ষণের কথা থাকলেও, নেই সেখানেও। ইতোমধ্যে পুলিশ ৭টি ডিভিআর জব্দ করেছে। অথচ, এখনও ডিপো কর্তৃপক্ষ দাবি করেই যাচ্ছে পুরো ঘটনাই নাকি রহস্যজনক।

সবপক্ষ থেকেই নিশ্চিতভাবে বলা হচ্ছে, ৪ জুন রাতে অগ্নিকাণ্ডের পরপরই বিস্ফোরণ ঘটে সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোতে। কিন্তু সেই আগুন কিভাবে লাগল, তার কারণ মিলছে না।

অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত খুঁজছে বিভিন্ন তদন্ত কমিটিও। এজন্য, ডিপোতে লাগানো ১১৮টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজকে এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু, সার্ভারে আগুন লেগে ৭টি ডিভিআর পুড়ে যাওয়ায় সেই ফুটেজ উদ্ধারের সম্ভাবনাও অনেকটা ক্ষীণ।

সিআইডি পরিদর্শক মোহাম্মদ শরীফ জানান, আগুনের উৎস খোঁজার জন্য ডিজিটাল এভিডেন্স সংগ্রহ করতে তারা কাজ করছেন। কিন্তু সার্ভার রুম থেকে সাতটি ডিভিআর মেশিন উদ্ধার করেছেন। তবে এগুলো আগুনে পুড়ে যাওয়া ফুটেজ উদ্ধার নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে কর্মকর্তারা।

তবে ডিভিআরগুলো আলামত হিসেবে জব্দ করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পরিদর্শক সুমন বণিক। তিনি এগুলোকে পরে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য সিআইডিতে পাঠাবেন বলে জানান।

ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণ হয়। ফলে সব ভিডিও ডিপোর বাইরেও সংরক্ষণের কথা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে গ্রুপের জিএম মেজর (অব.) শামসুল হায়দার সিদ্দিকী জানান, ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজ হেড অফিসে সংরক্ষণ করা কথা। কিন্তু কেন নেই তা যাচাই বাচাই করা হচ্ছে।

তবে আগুনের সূত্রপাত স্পষ্ট না হলেও এখনও ডিপোর মালিক আজিজুর রহমানের দাবি ডিপোতে ১৫টির ওপরে হাইড্রোজেন পারঅক্সাইডের কন্টেইনার আছে। যেগুলোর মধ্যে পাঁচ ছয়টি আগুনে পুড়েছে। কিন্তু সেগুলো বিস্ফোরণ হয়নি। কেবল একটিই বিস্ফোরণ হয়েছে। যদি বিস্ফোরণ হত তাহলে সবগুলোই বিস্ফোরণ হওয়ার কথা। কিন্তু একটি কনটেইনার বিস্ফোরণ রহস্যজনক। ঘটনাটিকে তিনি নাশকতা বলে দাবি করছেন।

বিষয়টি খতিয়ে দেখছে পুলিশও। সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আশরাফুল করিম বলেন, মামলার তদন্ত কাজ এখনও প্রাথমিক পর্যায়ে। তারা আলামত সংগ্রহ করে লিপিবদ্ধ করছেন। তবে তারা আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান করছেন। অগ্নিকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হলে ঘটনার দায় দায়িত্ব কার সেটি দেখে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।

যদিও এ ঘটনায় আটজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হলেও এখনো কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। এ ব্যাপারে অভিযান অব্যাহত আছে বলে জানান ওই পুলিশ কর্মকর্তা।

তবে ঘটনাস্থল ঘুরে আগুনের সূত্রপাতের একটি সঙ্গত কারণ বিশ্লেষণ করেছেন রসায়ন ও পরিবেশবিদ অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড জারক এবং বিজারক উভয়ই। আর এটি বিজারক হলে অক্সিজেন উৎপন্ন হয়। হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড নিজে জ্বলে এবং অক্সিজেন জ্বলতে সহায়তা করে। দুটির পদার্থের চাপ ও তাপে আগুন তৈরি হতে পারে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ