১৯৭০ সালে আফ্রিকায় প্রথম কোনো ব্যক্তি মাঙ্কিপক্স ভাইরাসে আক্রান্ত হলেও এ পর্যন্ত বাংলাদেশে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে, বাংলাদেশ থেকে যারা আফ্রিকা ভ্রমণে যাবেন তাদের সতর্ক থাকতে হবে।আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ থেকে বাংলাদেশে আসা ব্যক্তিদের নজরদারিতে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনার মহামারির পর বিশ্বজুড়ে নতুন করে মাথা ব্যাথা হিসেবে দেখা দিয়েছে মাঙ্কিপক্স। ১৬টি দেশে ১৩০ জনের বেশি ব্যক্তি মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়েছেন বলে নিশ্চিত করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা। আগে ভাইরাসটির বিস্তার আফ্রিকার দেশগুলোর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকলেও এবার ইউরোপ এবং আমেরিকার কয়েকটি দেশে এতে আক্রান্ত ব্যক্তি শনাক্ত হয়েছেন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. এ এস এম আলমগীর জানান, আফ্রিকার দেশ কঙ্গোতে মাঙ্কিপক্সের যে ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে তা জটিল ধরনের এবং সেখানে মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার প্রায় ১০ শতাংশ। তবে, পশ্চিমা দেশগুলোতে মাঙ্কিপক্সের যে ভ্যারিয়েন্ট পাওয়া গেছে সেটি ততটা ভয়ঙ্কর নয়। এমনকি এখানে মৃত্যু হারও তুলনামূলক কম।
মাঙ্কিপক্সের প্রাথমিক উপসর্গের মধ্যে রয়েছে জ্বর, মাথা যন্ত্রণা, পিঠ ও গায়ে ব্যথা। আইইডিসিআর এর প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জানান, শুরুতে শরীর প্রচণ্ড দুর্বল থাকে এরপর প্রথমে মুখে র্যাশ ওঠে, সেখান থেকে সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
গুটিবসন্তের মতোই মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিরা ওষুধ ছাড়াই তিন সপ্তাহের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠেন। তবে বিশেষক্ষেত্রে জ্বরের ওষুধ লাগে।
বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট-আইইডিসিআর এর সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ডাক্তার বে-নজির আহমেদ জানান, মাঙ্কিপক্সে আক্রান্ত হওয়ার পর লক্ষণ অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে। যেমন, জ্বর থাকলে সে অনুযায়ী ওষুধ দিতে হবে। তবে, গা চুলকালে বা ঘা হলে অ্যান্টি স্টেমিন জাতীয় ওষুধ দিতে হবে। এ সময় প্রচুর পানি খাওয়ার পরামর্শ দিলেন বে-নজির আহমেদ।
যারা দেশের বাইরে ভ্রমণ করছেন তাদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন আইইডিসিআর এর সাবেক পরিচালক বে-নজির আহমেদ। বাংলাদেশের মানুষের জন্য আতঙ্ক তো নয়ই বরং মাঙ্কিপক্স নিয়ে মাথা না ঘামানোর কথাও বললেন এ বিশেষজ্ঞ।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশের জন্য মাঙ্কিপক্স নিয়ে উদ্বেগের কিছুই নেই। ১৯৫৮ সালে আফ্রিকায় প্রথম ভাইরাসটি এবং ১৯৭০ সালে প্রথম কোনো ব্যক্তি এতে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা শনাক্ত হয়। তবে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত কেউ আক্রান্ত হয়নি।
যেকোন ধরনের ভাইরাসের সংক্রমণ থেকে নিজেকে নিরাপদ রাখতে মাস্ক ব্যবহার এবং নিয়মিত সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।