নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী বলেছেন, পদ্মা সেতুর পিলারে ধাক্কার ঘটনায় শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌপথে ফেরিতে যাত্রী ও পণ্যবাহী গাড়ি পারাপার বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অর্থাৎ পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে এসব ভারী যানবাহন নিয়ে ফেরি চলাচল করতে পারবে না।
মঙ্গলবার (১০ আগস্ট) সচিবালয়ে এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভা শেষে নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
সোমবার (৯ আগস্ট) সন্ধ্যায় পদ্মা সেতুর ১০ নম্বর পিলারে আঘাত হানে ফেরি বীরশ্রেষ্ঠ জাহাঙ্গীর। এ সময় ২০ যাত্রী আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত একজনকে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ওই ঘটনায় দুই জনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন। ঘটনা তদন্তে গঠন করা হয়েছে ৫ সদস্যের কমিটি।
এর আগে গত ২৩ জুলাই সকাল ১০টার দিকে পদ্মা সেতুর ৭ নম্বর পিলারের সঙ্গে ধাক্কা খায় রো রো ফেরি শাহ জালাল। এতে ২০ জন যাত্রী আহত হন। ফেরিটি মাদারীপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে রওনা দিয়ে মুন্সিগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসছিল।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর সঙ্গে আমাদের অনুভূতি জড়িয়ে আছে, এই অনুভূতি হচ্ছে আত্মসম্মানের অনুভূতি। আমরা খুবই বিব্রত এবং খুবই দুঃখজনক হলেও বলতে হচ্ছে, পরপর দুটি ঘটনা ঘটে গেল পদ্মা সেতুতে, আমাদের ফেরি পিলারের সঙ্গে যে সংঘর্ষটা হলো।
প্রথম যখন এই সংঘর্ষ হয়েছিল, সে সময় তাৎক্ষণিকভাবে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছিল। পরে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিবও একটি তদন্ত কমিটি করেছিলেন। সেই তদন্ত কমিটির রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। তাদের সুপারিশগুলো নিয়ে এখানে (সভায়) দীর্ঘক্ষণ আলোচনা হয়েছে, বলেন খালিদ মাহ্মুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে আমরা যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছি সেটা হচ্ছে, মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া প্রান্ত এবং মাদারীপুরের বাংলাবাজার প্রান্ত, পদ্মানদীর এই জায়গায় (রুটে) স্রোতের প্রচণ্ড তীব্রতার কারণে এখানে ওভারলোডেড ফেরিগুলো চলাচল কঠিন হয়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে ফেরিগুলো কন্ট্রোল করার জন্য পুরোপুরি সক্ষমতা… আমাদের ফেরি পরিচালনার সঙ্গে যারা যুক্ত আছেন, সেখানে দুর্বলতা আছে।’
সে কারণে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত, স্রোতের তীব্রতা নিয়ন্ত্রণ না আসা পর্যন্ত এই রুটে ভারী যানবাহন নিয়ে ফেরি চলাচল করবে না। হালকা যে যানবাহন আছে এবং জরুরিভিত্তিতে যেগুলো চলে, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার- এ ধরনের যানবাহন ফেরিতে পারাপার করা যাবে।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, পণ্যবাহী এবং যাত্রীবাহীর জন্য ডেডিকেটেড যেটি করেছি সেটি হচ্ছে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথ। সেখানে ফেরির সংখ্যা বাড়ানো হবে। পণ্যবাহীর জন্য চাঁদপুরের হরিনা-শরীয়তপুরের আলুর বাজার, সেখানেও ফেরির সংখ্যা বাড়িয়ে দেওয়া হবে। সেই রুটটা পণ্যবাহী পারাপারের জন্য ব্যবহার করা হবে।
তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর নিচ দিয়ে যে ফেরিগুলো যাবে, এগুলো হালকা যানবাহনই পারাপার করবে। নিয়ন্ত্রণ না আসা পর্যন্ত বাকি সব বন্ধ থাকবে।