সাভারের আশুলিয়ার চারিগ্রামে গড়ে উঠেছে শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামে একটি খামার। আর এই খামারে সন্ধান মিলেছে বিশ্বের কনিষ্ঠ গরু ‘রানী’র, যা পৃথিবীর সবচেয়ে ছোট গরু হিসেবে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম লেখার অপেক্ষায়। বক্সার ভুট্টি জাতের খর্বাকৃতির এ গরুটি প্রায় ১১ মাস ধরে লালনপালন করছে খামার কর্তৃপক্ষ।
খোঁজ নিয়ে নিয়ে জানা যায়, সর্বশেষ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে সবচেয়ে ছোট আকৃতির গরু হিসেবে রেকর্ড হয়েছিল ভারতের কেরালা রাজ্যের একটি গরু। ৪ বছর বয়সী ওই গরুটি উচ্চতায় ২৪ ইঞ্চি, আর ওজন ৪০ কেজি। সেই গরুটির চেয়েও আকার, উচ্চতা ও ওজনে ছোট গরু সাভারের রানী। বিশ্ব রেকর্ডে জায়গা পেতে ইতোমধ্যেই আবেদন করেছে গরুটির মালিক শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ কর্তৃপক্ষ।
খামার কর্তৃপক্ষ জানায়, শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ ফার্মের বক্সার ভুট্টি জাতের এ খর্বাকৃতির গরুটির ওজন ২৬ কেজি আর উচ্চতা ২০ ইঞ্চি, দুটি দাঁত আছে। গরুটির বয়স এখন ২ বছর। গরুটির মূল্য ৫ লাখ লাখ টাকা হলেও এটি বিক্রি করতে নারাজ কর্তৃপক্ষ। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের পরে বিক্রির বিষয়টি ভেবে দেখবেন তারা।
এদিকে রানীকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করছেন স্থানীয়রা। তবে করোনার কারণে দর্শনার্থীরা তাকে দেখতে পারছে না। এক দর্শনার্থী জানান, তিনি খবর পেয়ে ছুটে এসেছেন গরুটি দেখার জন্য। যেমনটি ভেবেছিলেন, তার চেয়েও ছোট এই গরুটি। তিনি আরও বলেন, আসলে প্রত্যাশার চেয়েও ছোট। আশা করি গিনেস রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হয়ে গরুটি বাংলাদেশকে আবারও নতুন করে বিশ্বের কাছে পরিচিত করাবে।
সাভার উপজেলা গরুর খামার মালিক সমিতির সভাপতি মাকসুদুর রহমান খান বলেন, আমাদের এলাকায় এমন একটি গরু সত্যিই খুব আনন্দের। আমরা সব সময় একে অপরের পাশে থেকেছি। গরুটির খোঁজখবর রেখেছি নিয়মিত। আশা করছি এটি গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে অন্তর্ভুক্ত হবে।
গরুটির লালনপালনকারী এক কর্মী বলেন, আমি যে গরুটি লালনপালন করেছি, সেই গরুই গিনেস বুকে নাম উঠতে যাচ্ছে। আসলেই আমি আনন্দিত। গরুটি সবার আদরের। এটি অত্যন্ত ছোট হওয়ায় সবাই তাকে ভালোবাসে।
শিকড় অ্যাগ্রো ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী মোহাম্মদ আবু সুফিয়ান বলেন, আমরা নওগাঁ জেলা থেকে গরুটি সংগ্রহ করেছি। প্রথমে এটি দিতে চাননি মালিক। তবে আমরা লেগে থেকেছি। একসময় গরুটি কেনার সুযোগ হলে আমরা এই ফার্মে নিয়ে আসি। প্রায় ১১ মাস ধরে এটি আমরা পালন করছি। এখন এটির দুটি দাঁত হয়েছে।
তবে এটি আর বড় হওয়ার সম্ভাবনা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, গত ২ জুলাই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেছি। আমরা এর উত্তরও পেয়েছি। আগামী ৯০ কার্যদিবসের মধ্যে পরবর্তী কার্যক্রম শেষ করবে তারা।
সাভার উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. সাজিদুল ইসলাম বলেন, আমরা শুরু থেকেই খর্বাকৃতির গরুটির খোঁজখবর রেখেছি। নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছি। এর আর বড় হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তবে ওজন বাড়তে পারে। গরুটি এখন সম্পূর্ণ সুস্থ রয়েছে।