শুক্রবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫:২৩ পূর্বাহ্ন

বিশিষ্ট প্রত্নতাত্ত্বিক এনামুল হক আর নেই

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুলাই ১০, ২০২২

একুশে ও স্বাধীনতা পদকপ্রাপ্ত বাংলাদেশের কিংবদন্তীতুল্য প্রত্নতাত্ত্বিক অধ্যাপক এনামুল হক মারা গেছেন। আজ রবিবার (১০শে জুলাই) তিনি রাজধানীতে নিজ বাসভবনে ৮৫ বছর বয়সে মারা যান তিনি। কাজের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১৭ সালে একুশে পদক ও ২০২০ সালে স্বাধীনতা পদক এবং ভারতের পদ্মশ্রী পদকে ভূষিত হন।

ড. এনামুল হকের মৃত্যুতে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এক শোকবার্তায় শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি প্রফেসর ড. এনামুল হকের ছিল প্রগাঢ় ভালোবাসা এবং গভীর শ্রদ্ধাবোধ। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নের সময় সাহিত্য পত্রিকা উত্তরণের প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি লন্ডন এবং নিউইয়র্ক সফর করে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পক্ষে বিশ্বজনমত সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘর প্রতিষ্ঠাসহ জাতীয় পর্যায়ে রবীন্দ্র ও নজরুল জয়ন্তী উদযাপন প্রচলনের ক্ষেত্রে তাঁর প্রয়াস অত্যন্ত প্রশংসনীয়। প্রত্নতত্ত্বে বিশেষ অবদানের জন্য বন্ধুপ্রতীম ভারত সরকারও তাঁকে ২০২০ সালে পদ্মশ্রী পদক প্রদান করে।

প্রধানমন্ত্রী মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।

বিকাল তিনটা ৩৫ মিনিটে ড. এনামুল হকের ঘুমের মধ্যে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন তাঁর সহকর্মী (রিসার্চ ফেলো) সাইফুল ইসলাম। সকাল থেকে তিনি কোরবানির যাবতীয় কাজ তত্ত¡াবধান করে দুপুরে খেয়ে ঘুমাতে যান। পরে সাড়া না পেয়ে তাকে ইউনাইটেড হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এনামুল হকের মরদেহ বারডেমের হিমঘরে রাখা হবে। তার মেয়ে আগামী মঙ্গলবার প্রবাস থেকে ফিরলে দাফনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

এনামুল হক ১৯৩৭ সালের ১ মার্চ বগুড়া জেলায় জন্মগ্রহণ করেন। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক বগুড়া থেকে শেষ করে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাস বিভাগে স্নাতক ও ইতিহাস-প্রত্নতত্ত্বে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। পরবর্তীতে অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে দক্ষিণ এশিয়ার শিল্প নিয়ে গবেষণা করে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

কর্মজীবনে ১৯৬২ সালে এনামুল হক তৎকালীন ঢাকা জাদুঘরে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৬৫ সালে পদোন্নতি পেয়ে অধ্যক্ষ, ১৯৬৯ সালে পরিচালক হিসেবে কাজ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ঢাকা জাদুঘরকে বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরে রূপান্তর করা হয় এবং এর প্রতিষ্ঠাকালীন মহাপরিচালক হিসেবে এনামুল হক যোগদান করে। জাদুঘরের উন্নতি ও আধুনিকীকরণে তার অবদান অনস্বীকার্য। মহাপরিচালক হিসেবে তিনি ১৯৮৩ সাল থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ