বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য আবারো বিদেশে পাঠানোর দাবি জানিয়েছেন দলটির সংসদ সদস্যরা। দাবি মানা না হলে তারা সংসদ থেকে পদত্যাগের হুমকিও দিয়েছেন।
জবাবে আইনমন্ত্রী বলেছেন, আইনের বাইরে যাওয়ার সুযোগ সরকারের নেই। আইনের বিধান দেখাতে পারলে, তা বিবেচনা করা হবে।
বৃহস্পতিবার (১৮ নভেম্বর) জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে বক্তব্যের সুযোগ নিয়ে এ বিষয়ে আলোচনার সূত্রপাত করেন বিএনপির সংসদ সদস্য গোলাম মোহাম্মদ (জিএম) সিরাজ।
এ বিষয়ে বক্তৃতা করেন দলটির সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন ও মো. হারুনুর রশীদ। এই আলোচনা চলাকালে অধিবেশন কক্ষে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।
আলোচনার সূত্রপাত করে জি এম সিরাজ বলেন, আমরা ছয়জন এ সংসদে আছি। আওয়ামী লীগের বন্ধুরা বলেন, ‘এটা এ সংসদের জন্য অলংকার। ’ আজকে তাই বলতে চাই—প্রধানমন্ত্রী, যদি আমরা সত্যিকার অর্থে অলংকার হয়ে থাকি, তাহলে এ সংসদ অলংকারবিহীন করবেন না। আমাদের দলীয় সিদ্ধান্ত এমনও হতে পারে, ম্যাডাম যদি চরম অবস্থায় চলে যান, তাহলে আমাদের এই সংসদে থাকা সম্ভব নাও হতে পারে। আমি এটাকে শর্ত দিচ্ছি না। এ সময় তার মাইক বন্ধ হয়ে যায়।
এর আগে বিএনপির ওই সংসদ সদস্য বলেন, প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করতে চাই—মানবিক কারণে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে দু’একদিনের মধ্যে জামিন দিয়ে বিদেশে পাঠানো হোক। নচেৎ কিছু একটা হয়ে গেলে এর দায়ভার আওয়ামী লীগকে আজীবন বহন করতে হবে।
তিনি আরো বলেন, জামিনের বিষয়ে আইনমন্ত্রীর ৪০১ ধারার দীর্ঘ বক্তব্য শুনেছি। গতকাল (বুধবার) প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য শুনলাম। যা সব দৈনিক পত্রিকায় শিরোনাম হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শপথ নিয়েছিলেন, রাগ বিরাগের বশবর্তী হবেন না। কিন্তু গতকাল ওনার বক্তব্যের সঙ্গে শপথের ভাষা সাংঘর্ষিক। এটা কি সঠিক না, বেঠিক?
এ সময় দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েকজন নেতার বিদেশে চিকিৎসা নিতে যাওয়ার তুলে ধরে জিএম সিরাজ বলেন, সাজা থাকা অবস্থায় সাবেক সংসদ সদস্য আ স ম রবও বিদেশে গিয়েছিলেন। চিকিৎসার জন্য সংসদ নেতা বা আমরাও বিদেশে যাই। সে ক্ষেত্রে সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে কেন বিদেশে যেতে দেওয়া হবে না? এটা তার মৌলিক অধিকার। দেশের মানুষ মনে করে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী যা চাইবেন, তাই হবে। তাই করেন। সব ক্ষমতার মালিক তিনি।
অনির্ধারিত আলোচনায় অংশ নিয়ে জিএম সিরাজকে সমর্থন জানান বিএনপির এমপি মো. হারুনুর রশীদ। এর আগে বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে দলটির আরেক সংসদ সদস্য মোশারফ হোসেন বলেন, আমাদের নেত্রী খালেদা জিয়া কিডনি, লিভার, ফুসফুস, উচ্চ রক্তচাপসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। প্রধানমন্ত্রী অনেক মানবতা দেখিয়েছেন। আরেকটু মানবতা আমরা প্রত্যাশা করি।
জবাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সঠিকভাবে করা হচ্ছে। সেই চিকিৎসায় সন্তুষ্ট কি অসন্তুষ্ট সেটা ওনাদের ব্যাপার। কিন্তু ৪০১ ধারায় নিষ্পত্তি হওয়া বিষয়ে আবেদন করার সুযোগ নেই।