নিজস্ব প্রতিবেদক
জাতীয় দক্ষতামান (৩৬০ ঘন্টা) মেয়াদি শর্টকোর্সকে বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে সড়িয়ে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আর তাতেই নিজেদের অস্তিত্বের শংকায় ফুঁসে উঠছে অনুমোদিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শর্টকোর্স ঐক্য পরিষদ। তারা ২১ সেপ্টেম্বর বুধবার বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের প্রধান ফটকে বিক্ষোভ,সংবাদ সম্মেলন,মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে। সারা দেশ থেকে শর্টকোর্স ঐক্য পরিষদের সামনে শত শত পরিচালকগণ উপস্থিত হন।
সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত স্ব উদ্যোগে পরিচালিত জাতীয় দক্ষতামান (৩৬০ ঘন্টা) মেয়াদি শর্টকোর্স। এখানে সারাদেশে প্রায় ৪ হাজার প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২০ হাজার পরিবারের কর্মসংস্থান রয়েছে। চার হাজার প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছরে সরকারের আয় হচ্ছে প্রায় ১৬ কোটি টাকা। মহামারী করোনা কালীন প্রতিষ্ঠান ক্ষতি লোকসানে খুব কষ্টে দাড়িয়ে আছে। ক্ষতি লোকসান কাটিয়ে উঠতে না উঠতে সাম্প্রতি সময়ে NSDA নামক সরকারের একটি প্রতিষ্ঠান কারিগরি বোর্ড হইতে প্রতিষ্ঠান প্রধানদের কোন ধরণের অবহিত না করে এনএসডিএ এর এক রেজুলেশনে উল্লেখ করেন ৬.১ থেকে ৬.৬ নম্বর রেজুলেশনের মাধ্যমে বাকাশিবো শর্ট কোর্স কারিকুলামের অধীন জাতীয় দক্ষতামান বেসিক (৩৬০ ঘন্টা মেয়াদি) কোর্স এনএসডিএ’তে স্থানান্তরের নিমিত্তে কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা (বিটিইবি) আইন ২০১৮ এর ৮(ছ)(ঞ) সংশোধন) গ্রহনের জন্য বলা হয়েছে। যার নম্বর ০৩.১৪.২৬৯২.৮৭৬.১১.০০২.২১.৭৯০, তারিখ ২৩/০৮/২০২২খ্রি.১।
উক্ত চিঠির আলোকে সারাদেশ থেকে আসা শত শত প্রতিষ্ঠান পরিচালক উক্ত নোটিশের প্রতিবাদ বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড প্রাঙ্গনে জড়ো হয়। বাংলাদেশ কারিগরি শিক্ষা বোর্ড অনুমোদিত প্রতিষ্ঠান পরিচালকদের পাঁচটি সংগঠনের সম্বনয়ে গঠিত শর্টকোর্স ঐক্য পরিষদ নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন। শর্ট কোর্স ঐক্য পরিষদের প্রধান সমন্বয়ক নাসির উদ্দিন ভুইয়া, মোদাচ্ছের হোসেন সিরাজী, মোস্তাফিজুর রহমান, শামিমআরা বেগম, আফসার হোসেন, মোঃ আব্দুল জব্বার, নিত্যনন্দ সরকার, শওকত আলী, ইঞ্জিনিয়ার জোবাইর আহাম্মদ রানা, শহিদুল্লাহ সাদা, উজ্জ্বল দত্ত, মোঃ ফিরুজ, আব্দুর রহমান পরান,সদস্যদের নামের সাথে আরো দুইটা নাম দিয়ে দিয়েনএডঃ হুমায়ুন কবীর, ফয়সাল হাসান মিরাজ, আক্তার ভুইয়াসহ অনেক প্রতিষ্ঠান প্রধানগণ।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তরা বলেন প্রাথমিক অবস্থায় বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবর প্রতিষ্ঠানের প্যাডে ও সম্মলিত ঐক্য পরিষদের প্যাডে আবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
তারা বলেন ,আমরা কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের আওতায় থাকতে চাই। আমাদের জোর করে কারিগরি শিক্ষাবোর্ড থেকে বিচ্ছিন্ন করা যাবে না। আমরা তা হতে দিতে পারি না। আন্দোলনকারীগণ শ্লোগানে শ্লোগানে উত্তাল করে তুলে কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের ক্যাম্পাস।
আন্দোলনকারীরা বলেন, আমরা সরকার থেকে বেতন পাই না। আমরা সরকার থেকে কোন সুবিধাও নিই না। তিল তিল করে আমরা আমাদের প্রতিষ্ঠান গড়েছি। এখন শিক্ষাবোর্ড থেকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করণে আমরা নতুন নিয়মে পথে বসেত হবে। তারা বলেন এদেশের ডিজিটাল করার পেছনেও আমাদের ভূমিকা রয়েছে। আমরা খুবই কম খরচে দক্ষতা প্রশিক্ষণ দেয়ার কারণে হাজার হাজার দক্ষ কর্মী তৈরি হচ্ছে। তারা বিদেশে গিয়ে দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখছে। করোনা মহামারির সময় আমরা অনেক লোকসান দিতে হয়েছে। আমাদের অর্থনৈতিক কষ্টের খবর কেউ রাখে না। অথচ আমাদের উপর খবরদারি করার জন্য একের পর এক আইন হচ্ছে । যা আমরা মেনে নিতে পারি না। আমরা মেনে নিবো না। যদি আমাদের কারিগরি শিক্ষা বোর্ড থেকে সড়িয়ে দেয়ার বিন্দু মাত্র চেষ্টা করা হয় আমরা দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলবো।
প্রতিবাদ সমাবেশ চলাকালে এক পর্যায়ে নিজ কার্যালয় থেকে নীচে নেমে আসেন কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান মোঃ আলী আকবর খান।তিনি উপস্থিত প্রতিবাদকারীদের বলেন, আপনাদের দাবির প্রতি আমি শ্রদ্ধাশীল। আমরা আপনাদের দাবিসমূহ সরকারের উচ্চ পর্যায়ে প্রেরণ করবো।এ সময় আন্দোলনকারীরা চেয়ারম্যান আলী আকবর খানকে একটি লিখিত দাবি পত্র তুলে দেন। এসময় অনুমোদিত কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের শর্টকোর্স ঐক্য পরিষদের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
Notifications
অবশ্যই সহমত পোষন করছি যে দাবি মোদের একটাই
কারিগরি বোর্ডে থাকতে চাই।