জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে নিজের শরীরে আগুন দেওয়া কবি-ব্যবসায়ী মো. আনিসুর রহমান গাজী (গাজী আনিস) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মঙ্গলবার (৫ জুলাই) ভোরে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন ছাত্রলীগের সাবেক এই জেলা সভাপতি।
তার শরীরের ৯০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন চিকিৎসকরা। ১৯৯১-১৯৯৫ মেয়াদে কুষ্টিয়া জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন গাজী আনিস।
এর আগে সোমবার (৪ জুলাই) বিকেলে কুষ্টিয়ার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ও ব্যবসায়ী গাজী আনিস নিজ শরীরে আগুন দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন।
জানা গেছে, হেনোলাক্স নামে একটি কোম্পানির কাছে ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা পান আনিস। দীর্ঘদিন ধরে এ টাকা না দেওয়ায় হতাশাগ্রস্ত হয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনি।
গত ৩১ মে জাতীয় প্রেস ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন গাজী আনিস। সেখানে তিনি বলেন, ২০১৬ সালে হেনোলাক্স গ্রুপের কর্ণধার মো. নুরুল আমিন ও তার স্ত্রী ফাতেমা আমিনের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়। ধীরে ধীরে তাদের সাথে আমার সখ্যতা ও আন্তরিকতা গড়ে ওঠে। ২০১৮ সালে কলকাতায় হোটেল বালাজিতে একইসঙ্গে অবস্থানকালে তারা আমাকে হেনোলাক্স গ্রুপে বিনিয়োগ করে যথেষ্ট লাভবান হওয়ার সুযোগ আছে বলে জানান। আমি প্রথমে অসম্মতি জ্ঞাপন করলেও পরে রাজি হই। প্রাথমিকভাবে এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করি আমি। পরে আরও ২৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করি। অধিকাংশ টাকা ঋণ হিসেবে আত্মীয় স্বজন বন্ধু বান্ধবের কাছ থেকে নেওয়া।
তিনি বলেন, বিনিয়োগ করার সময় পরস্পরের প্রতি সম্মান ও বিশ্বাসের কারণে এবং তাদের অনুরোধে চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তি করা হয়নি, তবে প্রাথমিক চুক্তি করা হয়েছে। বিনিয়োগ পরবর্তী চূড়ান্ত রেজিস্ট্রি চুক্তিপত্র সম্পাদন করার জন্য বারবার অনুরোধ করলেও তারা গড়িমসি করতে থাকেন। এক পর্যায়ে তারা প্রতিমাসে যে লভ্যাংশ প্রদান করতেন সেটাও বন্ধ করে দেন এবং কয়েকবার তাদের লোকজন দিয়ে আমাকে হেনস্তা ও ব্ল্যাকমেইল করেন। বর্তমানে তাদের কাছে লভ্যাংশসহ আমার ন্যায্য পাওনা তিন কোটি টাকার বেশি। এ বিষয়ে কুষ্টিয়া আদালতে আমি তাদের আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করেছি, যা বিচারাধীন।
এদিকে কুষ্টিয়ায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজী আনিস একসময় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ছিলেন। তিনি কুমারখালী উপজেলার পান্টি ইউনিয়নের পান্টি বাজার এলাকার মৃত ইব্রাহিম বিশ্বাসের ছেলে।