দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণের হার স্থিতিশীলই রয়েছে। গত পাঁচ দিন ধরে দৈনিক শনাক্তের হার রয়েছে ৫ শতাংশের নিচে। গত ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত রোগীর সংখ্যাও কমেছে। হাজারের নিচে নেমেছে প্রায় ৫ মাস পর। গত ১৭ মের এর চেয়ে কম শনাক্তের খবর জানিয়েছিল স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ওই দিন ৬৯৮ জন রোগী শনাক্ত হয়েছিল।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর শনিবার জানিয়েছে, গত এক দিনে ৮১৮ জন রোগী শনাক্ত হওয়ায় আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৫ লাখ ৫০ হাজার ৩৭১। এই সময়ে মারা গেছে ২৫ জন। তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৩৯৩। গত এক দিনে সেরে উঠেছে ৯৬৫ জন, তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠল ১৫ লাখ ১০ হাজার ১৬৭ জন।
২০১৯ সালের ডিসেম্বরে চীনের উহানে প্রথম করোনা সংক্রমণ দেখা দেয়। কয়েক মাসের মধ্যে এ ভাইরাস বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। বাংলাদেশে প্রথম করোনা সংক্রমণ শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। এরপর বিভিন্ন সময়ে সংক্রমণ কমবেশি হলেও গত জুন থেকে করোনার ডেলটা ধরনের দাপটে সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়ে।
দেশে সাড়ে ছয় মাস পর দৈনিক নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে শনাক্ত কোভিড রোগীর হার গত মঙ্গলবার ৫ শতাংশের নিচে নেমে আসে। গত এক দিনে মারা গেছে ২৫ জন। তাদের নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ২৭ হাজার ৩৯৩। গত এক দিনে সেরে উঠেছে ৯৬৫ জন, তাদের নিয়ে এই পর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠল ১৫ লাখ ১০ হাজার ১৬৭ জন। এই হিসাবে দেশে বর্তমানে সক্রিয় রোগীর সংখ্যা মাত্র ১২ হাজার ৮১১। অর্থাৎ দেশে এখন এই সংখ্যক মানুষ করোনাভাইরাস সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে।
অথচ করোনাভাইরাসের ডেল্টা ভ্যারিয়েন্টের দাপটে জুলাই-অগাস্ট জুড়ে দৈনিক সক্রিয় রোগীর সংখ্যা লাখের উপরও উঠেছিল। বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রথম সংক্রমণ ধরা পড়েছিল গত বছরের ৮ মার্চ। আর প্রথম মৃত্যুর ঘটনাটি ঘটেছিল তার ১০ দিন পর ১৮ মার্চ।
গত বছরের শেষ দিকটা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ডেল্টা সংক্রমণের বিস্তারে এ বছরের এপ্রিল থেকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে থাকে। এর মধ্যে জুলাই, অগাস্ট ভয়াবহ অবস্থা পার করে বাংলাদেশ। ২৮ জুলাই দেশে রেকর্ড ১৬ হাজার ২৩০ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়। ৫ অগাস্ট ও ১০ অগাস্ট দুদিনই ২৬৪ জন করে মৃত্যুর খবর আসে, যা মহামারীর মধ্যে এক দিনের সর্বোচ্চ সংখ্যা।
ভয়াল অগাস্ট পেরিয়ে সংক্রমণ ও মৃত্যু কমছে সেপ্টেম্বরে, যে কারণে দেড় বছর পর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খুলেছে। দৈনিক শনাক্ত রোগী কমে আসায় সংক্রমণের হারও আসছে কমে। দৈনিক সংক্রমণের হার ৫ শতাংশের নিচে নেমে তা অন্তত দুই সপ্তাহ থাকলে মহামারী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে ধরে নেন বিশেষজ্ঞরা।