জীবন যুদ্ধে হার না মানা ক্যাপ্টেন কানিজ ফাতেমা পদোন্নতি পেয়েছেন। আজ শনিবার (৪ জুন) ঢাকা সেনানিবাসের আর্মি মাল্টিপারপাস কমপ্লেক্সে এক আড়ম্বরপূর্ণ পরিবেশে তাকে মেজর পদবীতে উন্নীত করা হয়েছে।
এসময় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল এস এম শফিউদ্দিন আহমেদ এবং সেনাবাহিনীর সব ফরমেশন কমান্ডার উপস্থিতি ছিলেন।
পক্ষাঘাতগ্রস্ত কানিজ শুধু বাংলাদেশ সেনাবাহিনী নয়, আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে সব নারী সমাজের জন্য অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। যে গল্পের শুরু হয় ২০১২ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে।
প্রশিক্ষণ চলাকালীন দুর্ঘটনায় পড়ে মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায় মেজর কানিজের। দেশ সেবার এক বুক স্বপ্ন নিয়ে ২০১১ সালে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন তিনি।
ওই ঘটনার পর সেনাবাহিনীর কঠোর ও সুশৃংখল স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব ছিল না কানিজের। কিন্তু ভাগ্যের কাছে হার না মেনে দেশের স্বার্থ রক্ষায় কাজ করতে দৃঢ় প্রত্যয়ী ছিলেন তিনি।
কানিজের এ অদম্য উদ্দীপনাকে সম্মান জানায় সেনাবাহিনী। সব বাধা উপেক্ষা করে ৬৯ বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সের সঙ্গে ২০১৩ সালে বিশেষ বিবেচনায় কমিশন পান তিনি।
পরবর্তীতে কানিজ হুইলচেয়ারের সাহায্যে চলাফেরা করলেও নিজের অদম্য মানসিক শক্তি এবং সহকর্মীদের সহায়তায় দৈনন্দিন কার্যক্রম স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করে আসছেন। তার ইচ্ছাশক্তির কাছে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা হার মেনেছে পদে পদে।
এখন দেশ ও জনগণের আস্থার প্রতীক কানিজ। তার প্রতি বিরল সম্মাননা দেশের প্রতিটি নারীর অগ্রযাত্রায় অনুকরণীয় হয়ে থাকবে। সেই সঙ্গে ইতিহাসের পাতায় উজ্জল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবেন।
নারীর ক্ষমতায়নের অংশ হিসেবে ২০০০ সালে বাহিনীতে সর্বপ্রথম নারী অফিসার নিয়োগ দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরই ধারাবাহিকতায় ২০১৫ সালে এ বাহিনীতে নারী সৈনিকের সংযোজন ঘটে।
নারী অফিসারদের ইউনিট কমান্ড, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী মিশনে নারী অফিসারদের নিয়োগসহ বিভিন্ন পদক্ষেপে দেশে উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করেছে। সেনাবাহিনী প্রধানের নির্দেশে এ বিশেষ আয়োজন জাতি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করবে।