ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যানজট কমিয়ে আনতে তিনটি আন্ডারপাস ও একটি ইউলুপ নির্মাণ করবে সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতর। সওজ বলছে, এই আন্ডারপাস ও ইউলুপ নির্মাণ হলে যানজট কমিয়ে যানবাহনের গতি বাড়ার পাশাপাশি দুর্ঘটনা কমে যাবে। পরিকল্পনা কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
পরিকল্পনা কমিশনের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেন, এই প্রকল্পের আওতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১) ও কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাদুয়ার বাজার ইন্টারসেকশনে ইউলুপ ও একটি আন্ডারপাস, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা গেইট এবং কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের বেলতলী গেইট সংলগ্ন স্থানে ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১)-এ দুইটি আন্ডারপাস নির্মাণ করা হবে।
বুধবার (২৮ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ‘ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়কে ৩টি আন্ডারপাস এবং পাদুয়ার বাজার ইন্টারসেকশনে ইউলুপ নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি উপস্থাপন করা হবে। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে একনেক সভার সভাপতিত্ব করবেন প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা। অন্যদিকে শেরে বাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও সচিবরা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে গণভবনের সঙ্গে যুক্ত থাকবেন। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান সংবাদ সম্মেলন করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন।
একনেক কার্যপত্রে বলা হয়েছে, অধিকাংশ সময় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে তীব্র যানজটের সৃষ্টি হয়। এছাড়া প্রায়ই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। এসব সমস্যা সমাধানে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের প্রস্তাবনায় এই প্রকল্পটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হচ্ছে। পুনর্গঠিত উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) অনুযায়ী প্রকল্পটির বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৬৯ কোটি টাকা। অনুমোদনের পর চলতি বছর থেকে ২০২৪ সালের জুনে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
সওজ জানায়, ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১) রাজধানী ঢাকাকে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামের সঙ্গে সংযোগকারী যোগাযোগের অন্যতম করিডর হিসেবে বিবেচিত। এই করিডরের মাধ্যমে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের সঙ্গে ভবিষ্যতে যোগাযোগের পরিকল্পনা রয়েছে। যেহেতু সড়কটি আঞ্চলিক, জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মহাসড়কের মেরুদণ্ড, এটির বর্তমান এবং ভবিষ্যতের ট্রাফিক চাহিদা পূরণের জন্য পর্যাপ্ত ক্ষমতা এবং গতিশীলতা থাকা অপরিহার্য।
ঢাকা-চট্টগ্রাম জাতীয় মহাসড়ক (এন-১) এবং কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়ক (আর-১৪০) দুটি পদুয়ার বাজারে এসে মিলিত হয়ে চার রাস্তার মোড় তৈরি করেছে। এই মোড়ে ঢাকা-চাঁদপুর, চট্টগ্রাম-কুমিল্লা, কুমিল্লা-চাঁদপুর এবং চাঁদপুর-চট্টগ্রামগামী অনেক যানবাহনকে কম-বেশি ৫০০ মিটারের মধ্যে ইউটার্ন করতে হয়। ফলে এ জায়গায় অধিকাংশ সময় তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়ে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত করে এবং প্রায়ই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে থাকে।
প্রকল্পের মূল কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে- অ্যাপ্রোচ সড়কসহ ২ হাজার ১৪২ মিটার ইউলুপ নির্মাণ, ৩টি আন্ডারপাস নির্মাণ, ১ দশমিক ৫৩ হেক্টর ভূমি অধিগ্রহণ ও ক্ষতিপূরণ প্রদান এবং ১টি গ্রেডার, ১টি ডবল কেবিন পিকআপ, ১টি মোটরসাইকেল ও ১টি ট্রাক ক্রয়। এছাড়া প্রকল্পের আওতায় ল্যান্ডস্কেপ, ইউটিলিটি শিফটিং এবং বৃক্ষরোপণসহ অন্যান্য কাজ সম্পন্ন করা হবে।