কয়েকদিনের টানা বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চর এলাকা প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে ফসলের খেত, রাস্তা।
আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় লালমনিরহাটে তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার নিচে, কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা ব্রিজ পয়েন্টে ধরলা নদীর পানি বিপৎসীমার ৭৬ সেন্টিমিটার নিচে ও চিলমারী ঘাট পয়েন্টে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বিপৎসীমার ১০৫ সেন্টিমিটার নিচে প্রবাহিত হচ্ছিল।
টানা বৃষ্টি ও উজানের ঢলে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ এলাকায় তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল আজ শুক্রবার সকালে প্লাবিত হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ নিয়ম অনুযায়ী খনন না করায় নদ-নদীর বুকে পলি জমে ভরাট হয়ে গেছে। যে কারণে উজানের ঢল এলেই পানি উপচে তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো ডুবে যায়।
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার শিমুলবাড়ী গ্রামের কৃষক মনসের আলী বলেন, ‘আমাদের গ্রামে ধরলা নদীর তীরবর্তী প্রায় ২০০ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। আজ সকাল থেকেই পানি বাড়ছে। গ্রামের ফসলের খেতগুলো তলিয়ে গেছে।’
সদর উপজেলার চর পার্বতী এলাকার কৃষক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। চরগুলো তলিয়ে গেছে। এখনই আমাদের নৌকায় যাতায়াত করতে হচ্ছে। অনেক বাড়ির উঠানে এখন হাঁটু পানি।’
লালমনিরহাট সদর উপজেলার তিস্তা নদী তীরবর্তী খুনিয়াগাছ গ্রামের কৃষক মোস্তাক আলী বলেন, ‘আজ সকাল থেকে আমাদের গ্রামে নদীর পানি ঢুকতে শুরু করেছে। অনেক বাড়িতে এখন হাঁটু পানি। রাস্তা তলিয়ে যাওয়ায় চলাচলে সমস্যা হচ্ছে।’
আদিতমারী উপজেলার মহিষখোঁচা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোসাদ্দেক হোসেন চৌধুরী বলেন, ‘আমার ইউনিয়নের ৭০ শতাংশ ভূমিই তিস্তা নদী তীরবর্তী। তিস্তার পানি বেড়ে যাওয়ায় প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।’
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন, ‘নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচে রয়েছে। তবে অনবরত বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এই অবস্থা চললে আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে নদীপাড়ে বন্যা পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে। ঝুঁকিপূর্ণ গ্রামগুলো থেকে বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিতে ও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধগুলো রক্ষায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রস্তুতি রয়েছে।’