শ্রীলঙ্কার হাতে এখন যে পরিমাণ পেট্রোল বা ডিজেল মজুত আছে, তা দিয়ে সর্বোচ্চ একদিনেরও কম সময় চলবে। এরপরে কি হবে তা কেউ জানেন না। ফলে এ সপ্তাহে অচল হয়ে যেতে পারে দেশটি।
এর মধ্যে নতুন করে তেলের কোনো শিপমেন্টও আসছে না। কারণ, অর্থ না থাকার কারণে শিপমেন্টের অর্ডার দেয়া যায়নি। আগে থেকে যেসব অর্ডার দেয়া ছিল, তাও ‘ব্যাংকিং’ কারণে আগামী সপ্তাহে আসছে না।
শ্রীলঙ্কান গণমাধ্যম ডেইলি মিররের প্রতিবেদন অনুযায়ী, রোববার রাতে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান সিলন পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (সিপিসি) ট্রেড ইউনিয়নের উচ্চ পদস্থ সূত্রগুলো বলেছেন, দ্রুত ফুরিয়ে যাচ্ছে জ্বালানি তেল।
তারা জানিয়েছেন, মাত্র ১১০০ টন পেট্রোল এবং ৭৫০০ টন ডিজেল তাদের কাছে মজুত আছে। এই জ্বালানি দিয়ে পুরো দেশ একদিনও চলতে পারবে না। গত সপ্তাহে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি মন্ত্রী কাঞ্চনা বিজেসেকারা জনগণকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে, জ্বালানিবাহী একটি জাহাজ পৌঁছাবে।
কিন্তু রোববার তিনি জাতির কাছে স্বীকার করেছেন যে, কখন ওই শিপমেন্ট আসবে সে বিষয়ে চূড়ান্তভাবে তিনি কিছু বলতে পারেন না। এ মাসের শুরুর দিকে এই জাহাজে করে ডিজেল ও পেট্রোল আনার জন্য ৯ কোটি ডলারের বিনিময়ে এলসি খোলা হয়েছে। কিন্তু কেন সেই জ্বালানি আসছে না, তা নিয়ে তদন্ত চলছে। অর্থমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী রণিল বিক্রমাসিংহেও এই এলসি খোলার বিষয়ে অবহিত।
জানা গেছে, জ্বালানি বিষয়ক কোম্পানিগুলো পাওনা পরিশোধের জন্য আন্তর্জাতিক গ্যারান্টি চেয়েছে। তারা স্থানীয় ব্যাংকের দেয়া গ্যারান্টির ওপর নির্ভর করতে পারছে না। সিপিসির সূত্রগুলো বলেছেন, গত সপ্তাহে শ্রীলঙ্কামুখে কোনো জাহাজ যাত্রা করেনি। কারণ, পাওনা পরিশোধে এবং আন্তর্জাতিক ব্যাংক গ্যারান্টি দিতে ব্যর্থ হয়েছে তারা।
এমনকি এখনও পর্যন্ত শিপমেন্টের জন্য কোনো অর্থ পরিশোধ করা হয়নি। পক্ষান্তরে আন্তর্জাতিক কোম্পানিগুলো শ্রীলঙ্কাকে কালোতালিকা ভুক্ত করেছে। কারণ, তারা ঋণ খেলাপি হয়েছে। তাই কোম্পানিগুলো এখন নতুন কোনো অর্ডারের জন্য আন্তর্জাতিক ব্যাংক গ্যারান্টি প্রয়োজন।
এর ফলে নিকট ভবিষ্যতে নতুন করে কোনো জ্বালানি সরবরাহ দেখা যাচ্ছে না। ফলে এ সপ্তাহে শ্রীলঙ্কা পুরো অচল হয়ে যেতে পারে। এমনকি গণপরিবহনও বন্ধ হয়ে যেতে পারে।