যুক্তরাষ্ট্রে লাখো নারী আর গর্ভপাতের আইনি অধিকার পাবেন না। দেশব্যাপী গর্ভপাতকে বৈধতা দেওয়া প্রায় ৫০ বছরের পুরোনো একটি আইনি সিদ্ধান্ত উল্টে দিয়ে নারীদের এ অধিকার কেড়ে নিয়েছেন সুপ্রিম কোর্ট। খবর বিবিসিও রয়টার্সের।
গত মাসের শুরুর দিকেই সুপ্রিম কোর্টের ফাঁস হওয়া একটি গোপন খসড়া নথিতে ঐতিহাসিক গর্ভপাত অধিকার আইন বাতিল হতে পারে বলে আভাস মিলেছিল। রাজনীতি বিষয়ক সংবাদমাধ্যম পলিটিকো সেই নথি প্রকাশ করে।
তাতে বলা হয়েছিল, যুক্তরাষ্ট্রের সর্বোচ্চ আদালত দেশব্যাপী গর্ভপাতকে বৈধতা দেওয়া ১৯৭৩ সালের আইনি সিদ্ধান্ত ‘রো বনাম ওয়েড’ উল্টে দেওয়ার পক্ষে রয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা শিগগিরই এ বিষয়ে রায় ঘোষণা করতে পারেন।
শুক্রবার সে রায়ই শোনালেন আদালত। এই রায়ের ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্ধেক অঙ্গরাজ্যেই গর্ভপাত নিষিদ্ধ হওয়ার পট প্রস্তুত হল। প্রতিটি অঙ্গরাজ্যই এখন নিজস্বভাবে গর্ভপাত নিষিদ্ধের পদক্ষেপ নিতে পারবে।
বিবিসি জানায়, ১৩টি অঙ্গরাজ্য আগে থেকেই গর্ভপাতকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করতে আইন এবং সংবিধান সংশোধনের মতো পদক্ষেপ নিয়েছিল। সুপ্রিম কোর্টের এ রায়ের ফলে সেগুলো নিজে থেকেই গর্ভপাত নিষিদ্ধে কার্যকর হয়ে যাবে। আর অন্যান্য আরও অনেক অঙ্গরাজ্য শিগগিরই নতুন আইন পাস করবে।
সব মিলিয়ে দেশটিতে প্রজননক্ষম প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ নারী গর্ভপাতের অধিকার হারাতে পারে বলে হিসাব দেওয়া হয়েছে গর্ভপাত নিয়ে কাজ করা স্বাস্থ্যসেবা সংগঠন ‘প্ল্যানড প্যারেন্টহুড’ এর গবেষণায়।
মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের (গর্ভধারণের ১৫ সপ্তাহ পর) গর্ভপাত নিষিদ্ধের পদক্ষেপকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে নারীদের একটি স্বাস্থ্য সংগঠন ‘ডব্বস বনাম জ্যাকসনের’ করা মামলা পক্রিয়ায় সুপ্রিম কোর্ট এই রায় শুনিয়েছেন।
কনজারভেটিভ-সংখ্যাগরিষ্ঠ আদালত আদর্শগত দিক থেকে মিসিসিপি অঙ্গরাজ্যের পক্ষেই রায় দেওয়ায় কার্যত গর্ভপাতের সাংবিধানিক অধিকারের অবসান ঘটেছে।
মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের স্পিকার সুপ্রিম কোর্টের রায়কে নির্মম আখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘আমেরিকার নারীরা আজ তাদের মায়েদের চেয়ে কম স্বাধীনতা ভোগ করছে।’