দেশে বর্তমানে সরবরাহ সংকট না থাকলেও কিছু অসাধু আমদানিকারক ও ব্যবসায়ীদের একটি অংশ রমজানকে সামনে রেখে বাড়তি মুনাফা পেতে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রতিবেদনে এমনটিই বলা হয়েছে।
দাম বাড়ানোর এই প্রবণতা আগামী ১১ মার্চ থেকে শুরু হতে হওয়া পবিত্র রমজানে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এবং এটি বন্ধে ব্যবস্থা না নিলে রোজার মাসে বাজার অস্থির হয়ে উঠতে পারে।
সর্বশেষ খবর দ্য ডেইলি স্টার বাংলার গুগল নিউজ চ্যানেলে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ গত মাসে প্রতিবেদনটি তৈরি করে বাণিজ্য, কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রণালয় এবং জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কয়েকটি কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছে। বাজারের স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে এতে কিছু সুপারিশও করা হয়েছে।
প্রতি বছর রমজানকে সামনে রেখে ভোজ্যতেল, চিনি, ছোলা, ডাল, খেজুর ও পেঁয়াজের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়তে থাকে।
আন্তর্জাতিক বাজারে কিছু পণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় রমজান শুরু হওয়ার প্রায় এক মাস বাকি থাকলেও ঢাকায় ছোলা, খেজুর ও সয়াবিন তেলের দাম ইতোমধ্যে বেড়ে গেছে। এর ফলে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ইতোমধ্যে হিমশিম খাওয়া নিম্ন ও সীমিত আয়ের মানুষের ওপর চাপ আরও বাড়ছে।
গত বছরের জানুয়ারিতে চিনির দাম প্রতি কেজি ১১০ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা হয়। আর চলতি বছরের জানুয়ারিতে তা বেড়ে ১৪০-১৪৫ টাকায় দাঁড়ায়। গত বছর রমজানের প্রথম দিন অর্থাৎ ২৪ মার্চ এর দাম ১১৫ টাকা থেকে বেড়ে ১২০ টাকা হয়।
এদিকে এ সময়ের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে ৩০-৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৭৫-৮০ টাকা হয়েছে।
২০২২ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর ও ২০২৩ পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্যের ওপেনিং লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) বিশ্লেষণ করে প্রতিবেদনে বলা হয়, সয়াবিন তেল, পাম তেল, চিনি, মসুর ডাল, ছোলা ও খেজুরের এলসি আগের বছরের তুলনায় কম খোলা হয়েছে।
তবে রমজান মাসকে কেন্দ্র করে জানুয়ারিতে এলসি খোলার হার বেড়েছে।
দেশের অন্যতম বৃহৎ পণ্য আমদানিকারক ও প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজের সিনিয়র সহকারী মহাব্যবস্থাপক তসলিম শাহরিয়ার বলেন, আমরা চাহিদা অনুযায়ী এলসি খোলার চেষ্টা করছি। সরকার পণ্য পরিবহনে চাঁদাবাজি বন্ধ করতে পারলে ভোক্তারা কম দামে পণ্য কিনতে পারবে।
‘নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা গেলে গ্রাহকরাও এর সুফল ভোগ করতে পারবেন’, বলেন তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে আরেক বড় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের এক কর্মকর্তা বলেন, ডলার সংকটের কারণে প্রয়োজন অনুযায়ী এলসি খুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাদের।
বাংলাদেশ চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি আবুল হাশেম বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের চাহিদা, আমদানি ও পাইপলাইনের তথ্য সরকারকে যাচাই করতে হবে।