শান্তিপূর্ণ উপায়ে আফগানিস্তানের ক্ষমতা হস্তান্তরের বিষয়ে আফগান সরকারের সংগে তালেবানের আলোচনা চলছে। রবিবার (১৫ আগস্ট) তালেবান যোদ্ধারা কাবুল ঘিরে ফেলার পর আফগান প্রেসিডেন্টের আর আর কোনো উপায় ছিলো না। ইতিমধ্যে তিনি পদত্যাগ করেছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
ক্ষমতা হস্তান্তর বিষয়ে আলোচনার জন্য প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে যান তালেবানের কয়েকজন নেতা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন, সরকারের সংগে শান্তি আলোচনায় তালেবানের নেতৃত্ব দেওয়া মোল্লা আব্দুল গনি বারাদার। ধারণা করা হচ্ছে, তিনিই হতে যাচ্ছেন আফগানিস্তানের নতুন প্রেসিডেন্ট।
তালেবানের শীর্ষ নেতা হায়বাতুল্লাহ আখুনজাদে’র পর মোল্লা বারাদার তালেবানের সবচেয়ে ক্ষমতাধর নেতা।
এদিকে কাবুলের ক্ষমতা দখলে নিয়েই সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা করেছে তালেবান। সংগঠনটির আন্তর্জাতিক মুখপাত্র সুহাইল শাহীন প্রতিবেদন লেখার কিছুক্ষণ আগে টুইটারে এক বিবৃতিতে বলেছেন, আফগানিস্তানে যারা এর আগে আগ্রাসনকারীদের জন্য কাজ করেছেন বা তাঁদের সাহায্য করেছেন, অথবা এখনও যাঁরা দুর্নীতিবাজ কাবুল প্রশাসনের বিভিন্ন পদে আসীন রয়েছেন- তাঁদের সবার জন্য ইসলামিক আমিরাত দরজা খোলা রেখেছে এবং ক্ষমা ঘোষণা করেছে।
তিনি আরও বলেছেন, আমরা আরেকবার তাঁদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, যেন তাঁরা দেশ ও জাতির জন্য কাজ করতে এগিয়ে আসেন।
বিবিসি জানিয়েছে, কাবুল থেকে বাসিন্দাদের পালানোর হিড়িক পড়েছে। তালেবানের অগ্রযাত্রা এবং রাজধানীর প্রবেশদ্বারে তাঁদের অবস্থান নেওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে শহরের বাসিন্দারা যে যেভাবে পারছেন, পালিয়ে যাচ্ছেন।
কোন পথে মানুষ শহর ছাড়বে তা ঠিক করতে হিমশিম খাওয়ায় রাস্তায় লম্বা যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। ব্যাংকগুলোতে প্রচণ্ড ব্যস্ততা চোখে পড়ছে, কারণ মানুষ তাদের সঞ্চিত অর্থ তুলে নেওয়ার চেষ্টায় ব্যাংকে ভিড় জমিয়েছে।
এর আগে এক বিবৃতিতে তালেবান জানায়, তারা কাবুল ঘিরে ফেলেছে। আফগানিস্তানের বড় বড় শহরগুলো দখল করে নেওয়ার পর রবিবারই তালেবান যোদ্ধারা রাজধানী কাবুলের প্রবেশদ্বারগুলোতে এসে উপস্থিত হয়।
তালেবানের একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের যোদ্ধাদেরকে আকাশে গুলি ছুঁড়ে উল্লাস করতে দেওয়া হবে না।
তালেবান বলছে, বিমানবন্দর ও হাসপাতালে স্বাভাবিক কাজকর্ম চলবে, এবং জরুরি কোনো সরবরাহে বাধা দেওয়া হবে না।
ইতিমধ্যে আফগান প্রেসিডেন্ট আশরাফ ঘানি পদত্যাগ করেছেন বলে জানা গেছে। তালেবানের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে। কাবুলে কোনো ধরণের হামলা হবে না- এমন শর্তে ক্ষমতা ছাড়তে রাজি হয়েছে আফগান সরকার।