দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় নতুন করে ২৯৫ জন ডেঙ্গু রোগী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাসপাতালে ভর্তি হওয়া অধিকাংশ রোগীই রাজধানীর বাসিন্দা। এ সময়ে নতুন করে আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।
রাজধানী ঢাকার বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে ২৫০ জন এবং ঢাকার বাইরের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৫ জন ভর্তি হয়েছেন। বছরের শুরু থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৪৫ জন।
বুধবার বিকেলে সারাদেশের পরিস্থিতি নিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুমের নিয়মিত ডেঙ্গু বিষয়ক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন ২৯৫ জন ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে বর্তমানে দেশের বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে সর্বমোট ভর্তি থাকা রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ১৫৬ জনে।
ঢাকার ৪১টি সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন এক হাজার ১৫ জন এবং অন্যান্য বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন ১৪১ জন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে আজ (১ সেপ্টেম্বর) পর্যন্ত হাসপাতালে সর্বমোট রোগী ভর্তি হয়েছেন ১০ হাজার ৬৫১ জন। তাদের মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন নয় হাজার ৪৪৭ জন রোগী। ডেঙ্গুতে এ সময়ে ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গত জানুয়ারিতে ৩২ জনের দেহে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। জুনে এ সংখ্যা ১৭২ জনে ওঠে। জুলাই মাসে তা দাঁড়ায় দুই হাজার ২৮৬ জন। তাতে সব মিলিয়ে এ বছরের প্রথম সাত মাসে ডেঙ্গুতে মোট শনাক্ত দাঁড়ায় ২ হাজার ৬৫৮ জন।
জুলাই থেকেই পরিস্থিতি দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে। আগস্টে এসে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের চিত্র উদ্বেগজনক হয়ে পড়ে। সে মাসে ডেঙ্গু রোগী দাঁড়ায় সাত হাজার ৬৯৮ জনে। এরপর সেপ্টেম্বরে প্রথম দিনেই ২৯৫ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট (আইইডিসিআর) জানিয়েছে, বছরের প্রথম সাত মাসে ১২ জনের মৃত্যু হলেও পরের এক মাসেই (আগস্ট) ৩৩ জনের মৃত্যু হয়। সবমিলিয়ে ডেঙ্গু উপসর্গ নিয়ে চলতি বছর ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।
এর আগে, ২০১৯ সালে ডেঙ্গুর প্রকোপ মারাত্মক আকার ধারণ করে। সে বছর এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন, মারা যান ১৪৮ জন। ডেঙ্গুতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যু হয় ২০০২ সালে, সেবার ৫৮ জনের মৃত্যুর সংবাদ দেয় স্বাস্থ্য অধিদফতর। এ ছাড়া, ২০০১ সালে ৪৪ জন মারা যান। ২০১৯ সালে ডেঙ্গু ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করলেও করোনা মহামারি মধ্যে ২০২০ সালে ডেঙ্গু তেমন প্রভাব ফেলতে পারেনি। তবে এবার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগী।