আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) কাছে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার ঋণ চেয়েছে বাংলাদেশ। নিজেদের অর্থনীতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ মোকাবিলায় বৈশ্বিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির কাছে সহায়তা চেয়েছে পাকিস্তান ও শ্রীলংকা। এবার দক্ষিণ এশিয়া থেকে সেই তালিকায় যুক্ত হলো বাংলাদেশ।
দেশের সংবাদমাধ্যম ডেইলি স্টারের বরাত দিয়ে মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক প্রভাবশালী গণমাধ্যম আলজাজিরার এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, পোশাক রপ্তানিতে বিশ্বখ্যাত বাংলাদেশ। ব্যয় ও বাজেটের প্রয়োজনীয়তার মধ্যে ভারসার্য আনতে এ ঋণ আবেদন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলাও রয়েছে। সার্বিকভাবে দেশের অর্থনীতির ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে এ অর্থ চাওয়া হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) এ নিয়ে রিপোর্ট করেছে ডেইলি স্টার। তারা বলছে এ সংক্রান্ত ডক্যুমেন্ট তাদের হাতে আছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঋণ চেয়ে গত রোববার আইএমএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ক্রিস্টালিনা জর্জিয়েভার কাছে আবেদন পাঠিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল। তবে অর্থ মন্ত্রণালয় এবং আইএমএফের কর্মকর্তারা এ নিয়ে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য করেননি।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সৃষ্ট বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সঙ্কটে আমদানি ব্যয় বেড়ে গেছে। ফলে পণ্য আমদানিতে অতিরিক্ত খরচ মেটাতে হচ্ছে। পরিপ্রেক্ষিতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক জানিয়েছে, দেশের রিজার্ভ কমে যাচ্ছে। তাই ডলার সংরক্ষণে বিলাসী পণ্য আমদানি নিরুৎসাহিত করা হয়েছে। এছাড়া এ লক্ষ্যে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
গত ২০ জুলাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ৩৯ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারে নেমে এসেছে। যা দিয়ে আগামী ৫ মাস পণ্য আমদানি ব্যয় মেটানো যাবে। তবে চলতি বছরের শুরুতে রিজার্ভের পরিমাণ ছিল ৪৫ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই থেকে মে পর্যন্ত বাংলাদেশের চলতি হিসাবের ঘাটতি ১৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। ৩০ জুন শেষ হওয়া অর্থবছরের প্রথম ১১ মাসে আমদানি বেড়েছে ৩৯ শতাংশ। সেখানে রপ্তানি বৃদ্ধি পেয়েছে ৩৪ শতাংশ।
গত মাসে ১ দশমিক ৮৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসী বাংলাদেশিরা। সেই হিসাবে প্রবাসী আয় কমেছে ৫ শতাংশ।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, গত ৩ মাসে যুক্তরাষ্ট্রের মুদ্রার বিপরীতে টাকার মান হ্রাস পেয়েছে ২০ শতাংশ। বাংলাদেশ ব্যাংক রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রি করেও টাকার অবমূল্যায়ন ঠেকাতে পারছে না।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম বলেন, ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলার পর আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানির দাম বেড়ে যায়। ফলে সঙ্কটের মুখোমুখি হয় কর্তৃপক্ষ।
তিনি বলেন, আমাদের পেমেন্ট ব্যালান্স নেগেটিভ জোনে রয়েছে। আমাদের বিনিময় হার স্থিতিশীল করতে হবে।