শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:২০ পূর্বাহ্ন

২০১৮ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না: সিইসি

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুলাই ২৬, ২০২২

২০১৮ সালের মতো নির্বাচন আর হবে না বলে আশ্বাস দিলেন প্রধান নির্বাচন কমশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। মঙ্গলবার (২৬ জুলাই) জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের সাথে সংলাপে তিনি এ আশ্বাস দেন।

নির্বাচন কমিশনের ওপর আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে সিইসি বলেন, তার দেয়া প্রতিশ্রুতির মূল্য অবশ্যই থাকবে। কারণ তারা প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতেই এসেছেন, ডিগবাজি দিতে নয়।

তিনি আরও জানান, আগামীতে কোন নির্বাচনে, দুর্নীতিতে জড়াবে না ইসি। ভোটে অর্থ ও পেশিশক্তির ব্যবহার বন্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলার আহ্বানও জানান প্রধান নির্বাচন কমিশনার।

সিইসি বলেন, অর্থশক্তিকে আমরা কিভাবে সামাল দেবো? আপনারা আমাকে একটা বুদ্ধি দেন। দেশে অর্থ বেড়েছে। আামাদের সকলের বাড়িতে বস্তা বস্তা টাকা। বস্তা বস্তা অর্থ আমরা নির্বাচনে ব্যয় করি। এই অর্থ নিয়ন্ত্রণ করবো কিভাবে? যেটা প্রকাশ্যে হয় তার কিছুটা নির্বাচন কমিশনে দেখানো হয় যে, ৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছে। তার বাহিরে গিয়ে যদি আমি গোপনে ৫ কোটি টাকা খরচ করি, কিভাবে আপনি আমাকে ধরবেন বা আমি আপনাকে ধরবো। এগুলো সম্ভব, এ জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।

তিনি বলেন, একটি অপসংস্কৃতি হয়ে গেছে। পয়সা নিয়ে ঢালতেছি। মাস্তান হায়ার করতেছি। প্রফেশনাল কিলারও হায়ার করতে খুববেশি পয়সা লাগবে না। এই সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে আমাদের সকলকে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। অর্থশক্তি, পেশিশক্তির ব্যাপারে আমরা এখনি কিছু বলতে পারবো না। মাঠে আপনাদের থাকতে হবে। তথ্যগুলো পাঠালে আমরা কিন্তু সাহায্য করবো।

ভোটে ইভিএম প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, লাঠি দিয়ে হকি স্টিক দিয়ে ইভিএম মেশিনটা ভেঙ্গে ফেলতে পারবেন। কিন্তু এখানে ভোটের নড়চড় হবে না। একজন লোক যদি ১০০টা করে (ব্যালটে), পাঁচজন লোক যদি ৫০০টা করে ভোট দেয়। ভোট দিলো পাঁচজন কিন্তু ভোট কাউন্ট হলো ৫০০। ভোটের হার তো অনেকবেশি। কিন্তু সেটি কি ৫০০ ভোট নাকি ৫ ভোট। পাঁচজন যে ভোটাধিকার প্রয়োগ করলো সেটি ৫০০ জনের পক্ষে। বিভিন্ন ধরণের সমস্যা আছে। আমি যেটা বলতে চাচ্ছি। সমস্যাগুলো বুঝে নিয়ে আমরা কিভাবে একটু ব্যালেন্স করে একটি অর্থবহ যতিদূর সম্ভব নিরপেক্ষ, যতদূর সম্ভব দূর্নীতিমুক্ত একটি নির্বাচন করা যায়।

ইসির উপর আস্থা রাখার জন্য রাজনৈতিক দলের উদ্দেশে সিইসি বলেন, আমাদের উপর একটু আস্থা রাখুন। আস্থা রাখতে গিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখলে হবে না। আপনাদের নজরদারি থাকতে হবে। আমরা কি আসলেই সাধু পুরুষ না ভেতরে ভেতরে অসাধু। সেই জিনিসটা আপনারা যদি নজরদারি না রাখেন, তাহলে আপনারাও আপনাদের দায়িত্ব পালন করলেন না। কঠোর নজরদারিতে আমাদেরকে রাখতে হবে। কোনো কমপ্লেইন পেয়েছেন? সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরকে পাঠান। অনেকগুলো টেলিফোন থাকবে সে সময়। ক্যামেরা দিয়ে হয়তো আমরা অনেকগুলো সেন্টার ওয়াচ করতে পারবো। আমরা প্রতিশ্রুতি যে দিচ্ছি তার কিছু মূল্য থাকা উচিত। একেবারে যে আমরা ডিগবাজি খেয়ে যাবো তা তো নয়। সেটি হওয়ার কথা নয়।

সিইসি আরো বলেন, ১৮ সালের যে নির্বাচনের কথা বলেছেন, না ওভাবে নির্বাচন হবে এটি আপনারা আশা করেন না। আমরা সেটি জানিও না, দেখিওনি। নির্বাচন নির্বাচনের আইন অনুযায়ী হবে। সময় দেওয়া হবে। ভোটাররা যাবেন। ভোট দিতে থাকবেন। আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে আমাদের অংশের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করবো। পাশাপাশি আপনাদের (রাজনৈতিক দল) অনুরোধ থাকবে, আপনারাও কিছু দায়িত্ব নেবেন। দায়িত্ব নিয়ে অর্থশক্তি, পেশিশক্তি, ভোটকেন্দ্রের শৃঙ্খলা রক্ষার চেষ্টা করবেন। আমরা দায়িত্বটা শেয়ার করবো।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ