শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সাইবার আইনের প্রত্যাহার হচ্ছে ৫৮১৮ মামলা নদী দূষণমুক্ত করা গেলে পরিবেশ উন্নত হবে ২৫ জেলায় নতুন জেলা প্রশাসক অফিস আদালত খুলেছে, যানচলাচল স্বাভাবিক ছাগলকাণ্ডে মতিউর ও তার স্ত্রী এবং সন্তানদের ব্যাংক হিসাব স্থগিত বরুড়ায় মামার বিরুদ্ধে ভাগিনার প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ! মোশারফ প্যারিস অলিম্পিকে ডাক পেলেন অলিম্পিক রিংয়ে সাজবে আইফেল টাওয়ার প্রতি ভরি সোনার দাম এক লাখ ১৭ হাজার ৫৭৩ টাকা! বরিশাল প্লে-অফে শক্তিশালী হচ্ছেন রওশন, দুর্বল জিএম কাদের! খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮ মিনিট পরপর চলবে মেট্রোরেল আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেলেন ৪৮ নারী প্রার্থী সিরিজ নির্বাচন করতে চায় ইসি

সংক্রমণ আর মৃত্যুর রেকর্ডের মাস জুলাই !

খালেদ মাহমুদ রকি
আপডেট : জুলাই ৩০, ২০২১

  #২৫ বছর বয়সীরাও টিকা পাবেন # ১৮ বছর বয়সীদের টিকার নিবন্ধন ৮ আগস্ট থেকে

 

 

দেশে মহামারি করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ও মৃত্যুর সংখ্যা কমছে না বরং বাড়ছে। সংক্রমণ রোধে সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের পরও        নিয়ন্ত্রণেআসছে না শনাক্ত ও মৃত্যু। পরিস্তিতি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে,  গত বছরের তুলনায় চলতি বছরে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে।

বিশেষ করে জুলাই মাসের পরিসংখ্যান দেখা গেছে, গত বছরের জুলাই মাসের শেষ সপ্তাহের মোট শনাক্ত ও মৃত্যু চলতি জুলাইয়ের এক দিনের পরিসংখ্যানের সমান। ২০২০ সালের ২৪ জুলাইয়ে করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ছিল ২৫৪৮ জন এবং ওই দিন মারা গিয়েছিলেন-৩৫ জন। ২৫ জুলাই শনাক্ত-২৫২০, মৃত্যু-৩৮। ২৬ জুলাই শনাক্ত-২৯২৮, মৃত্যু-৫৪। ২৭ জুলাই শনাক্ত-২৭৭২, মৃত্যু-৩৭। ২৮ জুলাই শনাক্ত-২৯০৭, মৃত্যু-৩৫ এবং ২৯ জুলাই শনাক্ত-২৯৬০, মৃত্যু-৩৫। অর্থাৎ গত বছর জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহের ৬ দিনে মোট শনাক্ত হয়েছিলেন-১৬৬৩৫ জন আর মৃত্যু হয়েছিল-২৩৪ জনের। চলতি বছর ২০২১ সালের ২৪ জুলাই শনাক্ত-৬৭৮০, মৃত্যু-১৯৫। ২৫ জুলাই শনাক্ত-১১২৯১, মৃত্যু-২২৮। ২৬ জুলাই শনাক্ত-১৫১৯২, মৃত্যু-২৪৭। ২৭ জুলাই শনাক্ত-১৪৯২৫, মৃত্যু-২৫৮ এটাই এযাবৎকালে দেশে একদিনে সর্বোচ্চ মৃত্যু, পাশপাশি এ দিনের মৃত্যু গত বছরের জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহের ৬ দিনের মোট মৃত্যুও থেকেও বেশি । ২৮ জুলাই শনাক্ত-১৬২৩০ যা এ যাবৎকালে একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। পাশাপাশি এ দিনের শনাক্ত রোগীর সংখ্যা গত বছরের জুলাইয়ের শেষ সপ্তাহের ৬ দিনের সমান প্রায়। ২৯ জুলাই শনাক্ত-১৫২৭১, মৃত্যু-২৩৯ জন। এ মাসে সপ্তাহের শেষ ৬ দিনে মোট শনাক্ত হয়েছেন-৭৯৬৮৯ জন এবং মোট মৃত্যু-১৪০৪ জন।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানোর করোনা বিষয়ক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, দেশে গত একদিনে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন আরও ২৩৯ জন। তাদের নিয়ে সরকারি হিসাবে মোট মারা গেলেন ২০ হাজার ২৫৫ জন। এ সময়ে নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছেন আরও ১৫ হাজার ২৭১ জন। তাদের নিয়ে দেশে করোনায় সরকারি হিসাবে এখন পর্যন্ত শনাক্ত হলেন ১২ লাখ ২৬ হাজার ২৫৩ জন। একদিনে সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৩৩৬ জন। তাদের নিয়ে দেশে মোট সুস্থ হলেন ১০ লাখ ৫০ হাজার ২২০ জন।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, গত একদিনে রোগী শনাক্তের হার ২৯ দশমিক ২১ শতাংশ, আর এখন পর্যন্ত শনাক্তের হার ১৬ শতাংশ। ২৪ ঘণ্টায় শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৮৫ দশমিক ৬৪ শতাংশ এবং শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যুহার এক দশমিক ৬৫ শতাংশ। একদিনে নমুনা সংগৃহীত হয়েছে ৫৫ হাজার ৯৮২টি, আর নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৫২ হাজার ২৮২টি। দেশে এখন পর্যন্ত করোনার মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৬ লাখ ৬৪ হাজার ৮৭০টি। এর মধ্যে সরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার ৯২০টি এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরীক্ষা করা হয়েছে ২০ লাখ ২৬ হাজার ৯৫০টি। গতকাল মারা যাওয়া ২৩৯ জনের মধ্যে পুরুষ ১২৩ জন, আর নারী ১১৬ জন। দেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত পুরুষ মারা গেলেন ১৩ হাজার ৭৫০ জন এবং নারী ছয় হাজার ৫০৫ জন। গতকাল মৃত্যুবরণকারীদের মধ্যে বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে ৯১ থেকে ১০০ বছরের মধ্যে রয়েছেন একজন, ৮১ থেকে ৯০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ৭১ থেকে ৮০ বছরের মধ্যে ৪৩ জন, ৬১ থেকে ৭০ বছরের মধ্যে ৬৫ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৫৭ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ২৬ জন, ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ১৫ জন, ২১ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে ১৪ জন, ১১ থেকে ২০ বছরের মধ্যে তিন জন এবং শূন্য থেকে ১০ বছর বয়সীর মধ্যে রয়েছে একজন। মারা যাওয়া ২৩৯ জনের মধ্যে ঢাকা বিভাগের আছেন ৭৬ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৫৭ জন, রাজশাহী বিভাগের ১৩ জন, খুলনা বিভাগের ৪৫ জন, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের ১৪ জন করে, রংপুর বিভাগের ১১ জন এবং ময়মনসিংহ বিভাগের আছেন ৯ জন।

অপরদিকে করোনা ভাইরাস প্রতিরোধে টিকা নেওয়ার জন্য বয়সসীমা কমিয়ে ২৫ করেছে সরকার। টিকা পাওয়ার জন্য নিবন্ধন সাইট সুরক্ষা অ্যাপে দেখা গেছে, দেশের ২৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সীরা এখন টিকা নিতে পারবেন। সুরক্ষা অ্যাপে ২৫ বছর বা তার চেয়ে বেশি বয়সের নাগরিকরা টিকার জন্য নিবন্ধন করতে পারছেন। করোনা ভাইরাস নিবন্ধনের সুরক্ষা অ্যাপে নিবন্ধনের পরিচয় যাচাই কলামের শ্রেণি বা ধরনের প্রথমেই দেখা যায়, নাগরিক নিবন্ধন (২৫ বছর বা তদূর্ধ্ব)।

দেশে টিকা নিবন্ধনের শুরুর দিকে ৫৫ বছর বয়সীদের টিকার জন্য নিবন্ধন করার অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। পরে নিবন্ধন কম হওয়ায় আরও বেশি সংখ্যক মানুষকে টিকার আওতায় আনতে বয়স কমানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ৫৫ থেকে বয়স কমিয়ে ৪৪ বছর করা হয়। এরপর দ্বিতীয় দফায় আরও কমিয়ে ৪০ বছর করা হয়। তৃতীয় দফায় কমিয়ে ৩৫ বছর করা হয়। চতুর্থ দফায় তা আরও কমিয়ে ৩০ বছর করা হয়েছে। যা বর্তমানে ২৫ বছর করা হয়েছে।

এর থেকেও আরও নতুন খবর হলো করোনার টিকা নেওয়ার সর্বনিম্ন বয়স হতে যাচ্ছে ১৮। তবে ১৮ ও তদূর্ধ্ব বয়সীদের টিকার নিবন্ধন ৮ আগস্ট থেকে শুরু হবে বলে একটি গণমাধ্যমকে জানান তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

এ বিষয়ে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ৮ আগস্ট থেকে যাদের বয়স ১৮ বা তার চেয়ে বেশি, তাদের নিবন্ধন শুরু হবে। যাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) আছে তারা অনলাইনে নিবন্ধন করতে পারবেন। যাদের এনআইডি নেই তাদের জন্য কী ব্যবস্থা জানতে চাইলে পলক বলেন, কারও বয়স ১৮ হলেই তিনি টিকা নেওয়ার জন্য উপযুক্ত হবেন। যাদের এনআইডি নেই তারা সংশ্লিষ্ট টিকাদান কেন্দ্রে সরাসরি উপস্থিত হয়ে টিকা নিতে পারবেন, তবে সেজন্য সংশ্লিষ্ট এলাকার মেয়র, উপজেলা পরিষদ অথবা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র লাগবে। অর্থাৎ ওই এলাকার জনপ্রতিনিধির প্রত্যয়নপত্র প্রয়োজন হবে। প্রতিমন্ত্রী জানান, ১৮ ও তদূর্ধ্ব বয়সীরা টিকা নেওয়ার পরে তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়ার ব্যাপারেও সুপারিশ করা হবে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ