লিওনের মেসি ও নেইমারকে ছাড়াই শুক্রবার ব্রেস্টের বিপক্ষে লিগ ওয়ানে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নেমেছিল পিএসজি। কিন্তু বড় জয় তুলে নিতে প্যারিসের জায়ান্টদের কোন সমস্যাই হয়নি। দলের দুই মূল স্ট্রাইকার মেসি-নেইমার ছাড়াই ৪-২ গোলের জয়ের ম্যাচটিতে কাজটুকু সেড়েছেন কিলিয়ান এমবাপ্পে ও এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া।
এই দুই তারকার সাথে বাকি দুই গোল করেছেন এ্যান্ডার হেরেরা ও ইদ্রিসা গানা গুয়ে। এ্যাওয়ে ম্যাচটিতে জয়ী হয়ে তিন ম্যাচে পুর্ন ৯ পয়েন্ট নিয়ে লিগ টেবিলের শীর্ষেই রয়েছে পিএসজি। এনিয়ে টানা দ্বিতীয় ম্যাচে পিএসজি ৪-২ গোলে জয়ী হলো।
যদিও কাল ব্রেস্টের স্তাদে ফ্রান্সিস-লি ব্লে’র মাঠে উপস্থিত ১৫ হাজার সমর্থক মেসির খেলা উপভোগ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ফিটনেসের কারনে এখনো এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টাওে পিএসজির জার্সি গায়ে অভিষেক হয়নি। অন্যদিকে গত মাসে কোপা আমেরিকার ফাইনাল শেষে অনুশীলনে ফিরলেও মূল দলে কালও জায়গা করে নিতে পারেননি নেইমার। লিগ ওয়ানের নতুন মৌসুমে সে কারনেই মাঠে নামাটা আরো কিছুটা বিলম্বিত হলো এই ব্রাজিলিয়ান তারকার।
এই ম্যাচে আরো একবার পিএসজির রক্ষনভাগের দূর্বলতা চোখে পড়েছে। বেশ কিছু ডিফেন্ডার দলের বাইরে থাকাটা ধীরে ধীরে কোচ মরিসিও পচেত্তিনোকে দু:শ্চিন্তায় ফেলছে। কাল ম্যাচ শেষে পচেত্তিনো বলেছেন, ‘আমি জেতার জন্যই মাঠে নামি। কিন্তু সবসময়ই মাথায় থাকে কোন গোল হজম না করে যেন জিততে পারি। আমাদের দলে বেশ কিছু তারকা খেলোয়াড় আছে, কিন্তু সবাইকে একসাথে পাওয়া যাচ্ছেনা। এই মুহূর্তে এটাই বড় চ্যালেঞ্জ। বিষয়টা খুব একটা সহজ নয়। প্রতিভাবান সব খেলোয়াড়ের মাঝে ভারসাম্য রক্ষা করাটা জরুরী। যদিও বিষয়টা সময়সাপেক্ষ।’
২০২০ ইউরো বিজয়ী ইতালিয়ান গোলরক্ষক গিয়ানলুইজি ডোনারুমা এসি মিলান থেকে আসার পর কাল প্রথমবারের মত দলে ছিলেন। কিন্তু কেইলর নাভাসের কাছে তাকে মূল দলের জায়গাটি আপাতত ছেড়ে দিতে হয়েছে। ডোনারুমার ইউরোপীয়ান চ্যাম্পিয়ন সতীর্থ মার্কো ভেরাত্তি নতুন মৌসুমে প্রথমবারের মত মধ্যমাঠে খেললেও অধিনায়ক মারকুইনহোস এখনো দলের বাইরে রয়েছেন।
ভবিষ্যত নিয়ে এখনো শঙ্কায় থাকা এমবাপ্পে বেশ কিছুদিন ধরেই মেসিকে ছাপিয়ে আলোচনায় উঠে এসেছেন। এবারের মৌসুমের পর তার সাথে পিএসজির চুক্তি শেষ হয়ে যাচ্ছে। এখনো চুক্তি নবায়ন না করায় রিয়াল মাদ্রিদে তার যাবার বিষয়টি অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। যদিও ট্রোয়েস ও স্ট্রাসবার্গের বিপক্ষে লিগের প্রথম দুই ম্যাচে সতীর্থদের চারটি গোলের যোগানদাতা ছিলেন বিশ্বকাপ বিজয়ী তরুণ তারকা এমবাপ্পে। কালকের ম্যাচে দলের জয়ে মূল ভূমিকা পালন করেছেন এই ফরাসি স্ট্রাইকারই।
২৩ মিনিটে এমবাপ্পের ক্রসে হেরেরা ভলি জালে জড়ালে এগিয়ে যায় পিএসজি। ৩৬ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুন করেন এমবাপ্পে। জর্জিনিও উইজনালডামের শট ব্রেস্ট গোলরক্ষক মার্কো বিওট রুখে দিলে ফিরতি শটে এমবাপ্পে মৌসুমের প্রথম গোল করেন। বিরতির ঠিক আগে রোমেইন ফেইভরের ব্যাক-হিল থেকে ফ্রাংক হোনোরাত ব্রেস্টের হয়ে এক গোল পরিশোধ করেন।
৭৩ মিনিটে ৩৫ মিটার দুর থেকে গুয়ের শক্তিশালী শট ব্রেস্টের ডাচ গোলরক্ষকের আটকানোর সাধ্য ছিলনা। ৩-১ গোলে পিছিয়ে থেকেও অবশ্য ম্যাচ ছেড়ে দেয়নি ব্রেস্ট। ম্যাচ শেষের পাঁচ মিনিট আগে স্টিভ মুনি গোল করলে পিএসজি শিবিরে দু:শ্চিন্তা দেখা দেয়। তবে শেষ মিনিটে আচরাফ হাকিমির সাথে বল আদান প্রদান করে ডি মারিয়া গোল করলে ৪-২ গোলের জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে সফরকারীরা। এর আগে ৮১ মিনিটে এমবাপ্পের বদলী হিসেবে প্রথমবারের মত কাল মাঠে নেমেছিলেন ডি মারিয়া।