মাঝে-মাঝে ঝড়ো হওয়া আর থেমে-থেমে বৃষ্টি। কাদাপানিতে একাকার রাস্তা-ঘাট। কিন্তু তারপরও বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেই কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ফেরিতে যাত্রী ও ব্যক্তিগত গাড়ি পারাপার থামছে না।
করোনা সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর লকডাউনকে উপেক্ষা করে প্রতিদিনের মতো আজো রাজধানী ঢাকায় ছুটছে দক্ষিণাঞ্চলের হাজার হাজার কর্মজীবী মানুষ। তবে ফেরিতে পারাপার হওয়া যাত্রীদের মাঝে মাস্ক ব্যাবহার, স্বাস্থ্যবিধি কিংবা সামাজিক দূরত্ব মানার কোন আগ্রহই চোখে পরেনি।
শুক্রবার (৩০ জুলাই) দেখা যায়, বৈরি আবহাওয়ার মধ্যেও মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া প্রান্তে ভোর থেকেই দক্ষিণবঙ্গের মানুষের উপচে পড়া ভিড়। আজও স্বাভাবিকের চাইতে অনেক বেশি যাত্রী ও পণ্যবাহীসহ ব্যাক্তিগত গাড়ি ছিল চোখে পড়ার মতো।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্পোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) এর শিমুলিয়া ঘাটের সহকারি ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মো. মাহবুবুর রহমান জানান, মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে সকাল থেকেই মাদারিপুরের বাংলাবাজার ঘাট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকামুখী কর্মজীবী মানুষের ভিড় রয়েছে। এ নৌপথে ভোর থেকে যাত্রী ও যানবাহন পারাপারে ১৭টি ফেরির মধ্যে রো রো চারটি, কে টাইপ চারটি ও মিডিয়াম একটিসহ মোট ৯টি ফেরি চলাচল করছে। লঞ্চ ও স্পিডবোট চলাচল সম্পুর্ণ বন্ধ রয়েছে। পণ্যবাহী যানবাহন ও ব্যাক্তিগত গাড়িসহ প্রায় ২শতাধিক গাড়ি রয়েছে পারের অপেক্ষায়।
জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ ও প্রশাসন) সুমন দেব জানিয়েছেন, শিমুলিয়া চৌরাস্তা থেকে ফেরিঘাট পর্যন্ত বেশ কিছু চেকপোস্ট রয়েছে। শিমুলিয়া ঘাট অভিমুখে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ সারি রয়েছে। শিমুলিয়া ঘাটে ফেরির পল্টুনে দুটি চেক পোস্ট দেওয়া হয়েছে। যাতে গাড়িগুলো সারিবদ্ধভাবে ফেরিতে উঠতে পারে। ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কের নিমতলায়ও চেকপোস্ট রয়েছে। সেখান থেকে যাত্রী এবং ব্যাক্তিগত গাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আলমগির হোসেন জানান, লকডাউনকে কেন্দ্র করে শিমুলিয়া ঘাটসহ জেলার বিভিন্ন প্রবেশ পথগুলোতে আজও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চেকপোস্ট রয়েছে। জরুরি পরিষেবার গাড়ি ছাড়া অন্যান্য গাড়ি চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ফেরিতে চড়ে দক্ষিণবঙ্গ আসা যাত্রীরা শিমুলিয়া ঘাটে এসে পায়ে হেঁটে, সিএনজি ও ব্যাক্তিগত গাড়িযোগে যাত্রীরা ঢাকায় ছুটছেন। তবে বৈরি আবহাওয়ার কারণে পদ্মা নদীতে পানি বৃদ্ধি ও তীব্র স্রোতের কারণে শিমুলিয়া থেকে বাংলাবাজার ঘাটে যেতে ফেরিগুলোর দ্বিগুণ সময় লাগছে। প্রতিটি ফেরিকে স্রোতের বিপরীতে ও নদীতে ৩-৪ কিলোমিটার অধিক পথ ঘুরে যেতে হচ্ছে। পদ্মার তীব্রস্রোতে ফেরিতে যানবাহন পারাপারে বেগ পেতে হচ্ছে।