শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০২:১৮ অপরাহ্ন

জুন মাসে সড়কে প্রাণ হারিয়েছে ৫২৪ জন, আহত ৮২১

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : জুলাই ৪, ২০২২

চলতি বছরের জুন মাসে দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪৬৭টি। এর মধ্যে নিহত হয়েছে ৫২৪ জন এবং আহত ৮২১ জন। রোড সেইফটি ফাউন্ডেশনের হিসাবে, জুন মাসেই ১৯৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৪ জনের প্রাণ গেছে সড়কে।

সোমবার (৪ জুন) রোড সেফটি ফাউন্ডেশন জুন মাসের সড়ক দুর্ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানা গেছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯৭টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ২০৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। এই হিসেবে মোট দুর্ঘটনার ৪২. ১৮ শতাংশ মোটর সাইকেলের। আর মোট মৃত্যুর ৩৮ দশমিক ৯৩ শতাংশ ঘটেছে এই দুই চাকার বাহনে।

নয়টি জাতীয় দৈনিক, সাতটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেক্ট্রনিক সংবাদমাধ্যমে আসা খবরের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে রোড সেইফটি ফাউন্ডেশন।

সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সড়ক দুর্ঘটনায় জুন মাসে প্রতিদিন গড়ে ১৭ দশমিক ৪৬ জন নিহত হয়েছে। দুর্ঘটনায় ১৮ থেকে ৬৫ বছর বয়সী কর্মক্ষম মানুষ নিহত হয়েছেন ৪১৩ জন, অর্থাৎ ৭৮ দশমিক ৮১ শতাংশ। ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী যানবাহন চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যান্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছে।

মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। গণপরিবহন সহজ, সাশ্রয়ী ও উন্নত করে, যানজট কমিয়ে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা অতীব জরুরি বলে মনে করে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ঢাকা বিভাগে ১১৭টি দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৩৯ জন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম ১৩টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত হয়েছেন। ঢাকা জেলায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ২৯টি দুর্ঘটনায় ৪১ জন নিহত। সবচেয়ে কম রাঙামাটি, মাগুরা, লালমনিরহাট ও সুনামগঞ্জ জেলায়। এই ৪টি জেলায় ৯টি সাধারণ মাত্রার দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানী ঢাকায় ১৪টি দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত ও ৬ জন আহত হয়েছেন।

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ৩৭.২৫ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে আঞ্চলিক সড়কে। এছাড়া জাতীয় মহাসড়কে ৩৪.০৪ শতাংশ, গ্রামীণ সড়কে ১৫.৪১ শতাংশ, শহরের সড়কে ১২ শতাংশ দুর্ঘটনা ঘটেছে। কোনও না কোনও যানবাহনের চাপায় নিহতদের মধ্যে পথচারী ১০৭ জন, যা মোট মৃত্যুর ২০.৪১ শতাংশ। দুর্ঘটনায় নিহতদের মধ্যে যানবাহন চালক বা সহকারী ছিলেন ৮৬ জন, যা মোট মৃত্যুর ১৬.৪১ শতাংশ।

সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে রোড সেফটি ফাউন্ডেশন কিছু সুপারিশ জানিয়েছে। সংগঠনটি বলছে—দক্ষ চালক তৈরি উদ্যোগ বৃদ্ধি, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা নির্দিষ্ট করা, বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি, যানবাহন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও পথচারীদের মধ্যে ট্রাফিক আইনের বাধাহীন প্রয়োগ নিশ্চিত করা, মহাসড়কের স্বল্প গতির যানবাহন চলাচল বন্ধ করে সেগুলোর জন্য আলাদা রাস্তা তৈরি, সকল মহাসড়কে রোড ডিভাইডার নির্মাণ, গণপরিবহণের চাঁদাবাজি বন্ধ, রেল ও নৌপথ সংস্কার ও সম্প্রসারণ করে সড়ক পথের ওপর চাপ কমানো, টেকসই গণপরিবহণ কৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করা এবং সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮ বাস্তবায়ন করতে পারলে সড়ক দুর্ঘটনা অনেকাংশে কমে আসবে।

সংগঠনটি আরও মনে করছে—ট্রাকসহ পণ্যবাহী দ্রুতগতির যানবাহন ও মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। মানসিক ও শারীরিকভাবে অসুস্থ ড্রাইভারদের বেপরোয়া গতিতে পণ্যবাহী যানবাহন চালানো এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ও যুবকদের বেপরোয়া মোটরসাইকেল চালানোর কারণে তারা নিজেরা দুর্ঘটনায় পতিত হচ্ছে এবং অন্যান্য যানবাহনকে আক্রান্ত করছে।

বিজ্ঞপ্তিতদে বলা হয়েছে, ‘মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আমাদের ভয়াবহ পরিণতির দিকে নিয়ে যাচ্ছে। গণপরিবহণ সহজ, সাশ্রয়ী ও উন্নত করে, যানজট কমিয়ে মোটরসাইকেল নিরুৎসাহিত করা অতীব জরুরি।’

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ন্ত্রণে ‘সড়ক পরিবহণ আইন-২০১৮’ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কোনো আগ্রহ দেখা যাচ্ছে না। সড়ক দুর্ঘটনা ঘটছে সড়ক পরিবহণ খাতের নৈরাজ্য ও অব্যস্থাপনার কারণে। এ অবস্থার উন্নয়নে টেকসই সড়ক পরিবহন কৌশল প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। এজন্য প্রয়োজন সরকারের রাজনৈতিক সদিচ্ছা।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ