শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ০৬:০৬ পূর্বাহ্ন

এসএসসি পরীক্ষার প্রথম দিন : স্বাস্থ্যবিধি মানায় উদাসীন অভিভাবকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
আপডেট : নভেম্বর ১৪, ২০২১

 

সকাল ১০টায় পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার মধ্য দিয়ে এবারের বিলম্বিত এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হলো।  তাতে বিজ্ঞান বিভাগের ৫ লাখ ৬ হাজার ৮৩১ জন শিক্ষার্থীর অংশ নিয়েছে। তবে এবারের পরীক্ষা হচ্ছে কিছু নিয়মনীতি মেনে। প্রস্তুতি সেরে কেবল প্রবেশপত্র-কলম গুছিয়ে কেন্দ্রে ঢুকে যাওয়া নয়, করোনাভাইরাসের চোখ রাঙানির মধ্যে বাড়তি সতর্কতা নিয়েই এবার পরীক্ষায় বসতে হয়েছে মাধ্যমিকের পরীক্ষার্থীদের। মাস্কে নাক-মুখ ঢেকে, হাতে স্যানিটাইজার নিয়ে অভূতপূর্ব এক পরিস্থিতির মধ্যে রোববার তাদের ঢুকতে হয়েছে পরীক্ষার কেন্দ্রে।

শিক্ষামন্ত্রণালয় সূত্রমতে, এবার এসএসসিতে পরীক্ষার্থী ২২ লাখ ২৭ হাজার ১১৩ জন; সারা দেশে ৩ হাজার ৬৭৯টি কেন্দ্রে এই পরীক্ষা হচ্ছে। এসএসসির বাধা পেরিয়ে যেতে পারলেই কলেজ, শিক্ষাজীবনের নতুন অধ্যায়। কিন্তু এবার সেই পথে রয়েছে অদৃশ্য অন্য এক কাঁটা, যার নাম করোনাভাইরাস। পরীক্ষার মধ্যে জ্বর এলেই শেষ হয়ে যেতে পারে পরীক্ষার্থীর একটি বছর।

মহামারীকালের এই পরীক্ষায় স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে সব কেন্দ্রে হাত জীবাণুমুক্ত করা ও তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা রাখতে বলা হয়েছে। রাখতে হবে আইসোলেশন রুমও। কেন্দ্র এলাকায় অভিভাবকদের ভিড় না করতে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

মহামারীর মধ্যেই হচ্ছে এবারের এসএসসি পরীক্ষা, ঢাকার শেরেবাংলা নগর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রবেশের আগে এক পরীক্ষার্থীর শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। ছবি: আসিফ মাহমুদ অভিরাজধানীর কয়েকটি কেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, শিক্ষার্থীরা কোভিড বিধি মেনে কেন্দ্রে প্রবেশ করলেও বাইরে অভিভাবকদের জটলায় তা উপেক্ষিত ছিল। কিছু কেন্দ্রে যথাযথ সুরক্ষা ব্যবস্থাও দেখা যায়নি।
পরীক্ষা চলাকালে পরীক্ষার্থী ও কেন্দ্রের কর্মী ছাড়া অন্য যেন পরীক্ষা কেন্দ্রের ২০০ গজের ভেতরে প্রবেশ না করে, সে বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছিল ঢাকা মহানগর পুলিশ।

শিক্ষামন্ত্রীও অভিভাবকদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। শিক্ষার্থীর সাথে একজনের বেশি অভিভাবক না আসতে অনুরোধ জানিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।

তবে মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে দেখা যায়, শিক্ষার্থীদের সাথে তিন-চারজন করেও অভিভাবক এসেছেন। অভিভাবকদের ব্যাপক চাপে কেন্দ্রের প্রবেশপথে ঢোকা কঠিন হয়ে পড়ে। স্কুলের সামনের প্রধান সড়কে তৈরি হয় যানজট। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা অভিভাবকদের সরে যেতে বললেও তাতে কাজ হয়নি।

সোয়া ৯টা থেকে এই কেন্দ্রে পরীক্ষার্থীরা ঢুকতে শুরু করে। অভিভাবকদের উপচে পড়া ভিড় ঠেলে কেন্দ্রে প্রবেশ করা শিক্ষার্থীরাও এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। মনিপুর স্কুলের পরীক্ষার্থী কাজী আফরা জাহান বললো, অভিভাবকদের জটলায় কেন্দ্রে ঢুকতেই বেশ সময় লেগেছে তার।

“গার্ডিয়ানদের কারণেই অনেক সমস্যা হচ্ছে। ভিড় ঠেলে ধাক্কাধাক্কি করে অনেক কষ্টে চিৎকার চেঁচামেচি করে ঢুকতে হয়েছে। তাদের কারণে দেরি হচ্ছে ঢুকতে। করোনার ভয় তো আছেই।”

গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের তাপমাত্রা মাপতে দেখা যায়নি। নিরাপত্তা রক্ষীদের হাতে স্যানিটাইজার থাকলেও সব শিক্ষার্থীদের তা দিতেও দেখা যায়নি।

এক শিক্ষার্থীর সঙ্গে একাধিক অভিভাবক থাকায় জটলার বিষয়ে প্রশ্ন করলে ফারুক হোসেন বলেন, “পাবলিক পরীক্ষায় বাবা-মাকে তো আসতেই হয়। আর বাচ্চারা বের হয়ে তো গার্ডিয়ান খুঁজবে। মোবাইল নাই, দূরে থাকলে পাবে কী করে?”

আরেক অভিভাবক নাসরীন জাহান বললেন, “বাচ্চাদের জন্য তো টেনশন হয়। সে পরীক্ষা দেবে, তখন তো আমি বাসায় বসে থাকতে পারব না।”

তার যুক্তি, “এত শিক্ষার্থী একসাথে পরীক্ষা দিলে ভিড় হবেই। এটা আটকে রাখা সম্ভব না।”

 


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ