বরুড়ায় মামার বিরুদ্ধে ভাগিনার প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ
হাসান জাবেদ ইমরুল:
কুমিল্লায় বরুড়ায় আপন মামার বিরুদ্ধে প্রবাসী ভাগিনার অর্থ ও সম্পত্তি নিয়ে প্রতারণার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। ঘটনার বিবরণে জানা গেছে কুমিল্লা জেলার বরুড়া উপজেলার ঝলম ইউনিয়নের শশইয়া গ্রামে নিরঞ্জন সরকারের ছেলে প্রবাসী শ্রীরুপ সরকারে পুত্র সঙ্গে তারই আপন মামা দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তার প্রবাসে থাকা অর্থ আত্মসাৎ করে তার( শ্রীরুপের) ক্রয় করা জমি তাকে রেজিষ্ট্রেশন না করে দিয়ে অন্যত্র বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে গত ০৫ জুন ২০২৪ ইং বিষয়টি জানতে পেরে শ্রীরুপ তার মামাকে বিষয়টি জিজ্ঞেস করতে গেলে বাধে বিপত্তি। সূত্র জানিয়েছে, শ্রীরুপ প্রবাসে থাকা অবস্থায় তার মামা দুলাল চন্দ্র তার ভাগিনার কাছে তার জমি ও পুকুর বিক্রি করতে প্রস্তাব দেন। তখন জমির দাম নির্ধারণ করা হয় ৩ লাখ টাকা।কিন্তু শ্রীরুপ প্রবাসে।তাহলে জমির রেজিষ্ট্রেশন হবে কিভাবে? তখন মামা দুলাল চন্দ্র বলেন তুমি দেশে আসলেই রেজিষ্ট্রেশন করে দেবো।মামার সরল প্রতিশ্রুতিতে মন গলে যায় ভাগিনা শ্রীরুপের।তিনি জমির জন্য নগদ তিন লাখ টাকা পাঠান দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসকে।
এতোদিন সম্পর্ক ঠিক ঠাকই ছিল।কিন্তু দেশে এসে যখন জমি নিজ নামে রেজিষ্ট্রেশন করে দিতে মামা দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসকে অনুরোধ করেন তখন তিনি নানা টালবাহানা করেন। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে ভাগিনা শ্রীরুপ জানতে পারেন তিনি এই জমি ও পুকুর অন্যত্র বিক্রি করে দিতে চেষ্টা করছেন। খবর পেয়ে গত ০৫ জুন ২০২৪ ভাগিনা শ্রীরুপ মামাকে বিষয়টি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করলে তিনি রেগে গিয়ে তাকে অতর্কিত হামলা চালিয়ে আহত করেন এবং নানান হুমকি ধমকি দিচ্ছেন।
অনুসন্ধানে জানা গেছে টাকা ফেরত না দিয়ে শশইয়া গ্রামের মৃত হরেন্দ্র সরকারের ছেলে পরিমল সরকারের নিকট বিক্রি করার বিষয়ে জানতে পেরে ভাগিনা এলাকার মুরুব্বিদের নিয়ে বিষয়টি জানার জন্য পরিমল চন্দ্র সরকারের বাড়ীতে গেলে শ্রীরুপ সরকারকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ ও হুমকি প্রদান করে। পূর্বে বিরোধের জেরে গত ০৫ জুন সকলা ৭:৩০ দিকে শ্রীরুপ সরকার কে তাহার বাড়ীর পরিমল সরকারসহ অন্যান্য বিবাদীরা মারধর করে। এই ঘটনার বিষয়ে নিরাঞ্জন সরকার ছেলে শ্রীরুপ সরকার বাদী হয়ে (০১) পরিমল চন্দ্র সরকার, (০২) দুলাল বিশ্বাস, (০৩) সুমন বিশ্বাস, (০৪) পলাশ সরকার, (০৫) বিনোদ সরকার সহ অজ্ঞাত ১০/১২ জনের বিরুদ্ধে গত ০৫ জুন বরুড়া থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করে।
এ অভিযোগের বিষয়ে বরুড়া থানায় এস.আই লক্ষণ চন্দ্র শীল বলেন তিনি জানান আমি ঘটনাস্থলে গিয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী আইনী পদক্ষেপ গ্রহন করে আমি তদন্ত রিপোর্ট পেশ করবো।
এ বিষয়ে অভিযোগ কারী শ্রীরুপ সরকার বলেন বিগত ১৮ বছর পূর্বে আমার মামা দুলাল বিশ্বাসের ভিটি ও পুকুর বিক্রি করার শর্তে আমার নিকট হইতে নগদ তিন লক্ষ টাকা গ্রহণ করে, তখন আমি প্রবাসে ছিলাম। আমাকে বলেছিল দেশে আসলে পরে আমাকে দলিল করে দিবে। আমার আপন মামা হাওয়া আমি সরল বিশ্বাসে নগদ দেওয়া টাকার কোনো প্রমাণপত্র রাখার প্রয়োজন মনে করি নাই।
এদিকে অভিযুক্ত দুলাল চন্দ্র বিশ্বাসের সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তিনি বলেন শ্রীরুপ সরকার আমার আপন ভাগিনা হয়। প্রবাসে থাকাকালীন সময়ে তিন লক্ষ টাকা দিয়েছিল ঘটনা সত্য। কিন্তু পরবর্তী সময়ে হিসাব করলে আমি তাহার নিকট হইতে আরও টাকা পাওনা পাবো।কিভাবে বেশি টাকা পাবেন জানতে চাইলে অভিযুক্ত দুলাল বিশ্বাস সেটি বলতে পারেননি।
এবিষয়ে বরুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মে: রিয়াজ উদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি।ইতোমধ্যে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়েছে। অচিরেই রিপোর্ট আসবে।ঘটনার সত্যতা পেলে কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন।