রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:২৫ অপরাহ্ন

বঙ্গবন্ধুর নাম কেউ মুছে ফেলতে পারবে না : এনামুল হক শামীম

রিপোর্টারের নাম :
আপডেট : আগস্ট ১২, ২০২২

পানি সম্পদ উপমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক একেএম এনামুল হক শামীম বলেছেন, কাগজের নাম ছিড়ে ফেলা যায়, দেয়ালের নাম মুছে ফেলা যায়, কিন্তু হৃদয়ে লেখা নাম মুছে ফেলা যায় না। কেউ মুছে ফেলতে পারবে না। কারণ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের হৃদয়ে।

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম না হলে বাংলাদেশ সৃষ্টি হতো না। বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ এক ও অভিন্ন। ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট খুনি মোশতাক, জিয়াউর রহমান গংরা মনে করেছিল জাতির পিতাকে হত্যা করে তার নাম মুছে ফেলবে। কিন্তু তাঁর নাম মুছে ফেলা যায়নি।’

১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আজ ডিআরইউ’র নসরুল হামিদ মিলনায়তনে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি আয়োজিত “বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ” শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠু’র সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম হাসিবের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. হারুন-অর-রশিদ। সম্মানিত আলোচক ছিলেন ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি এম শফিকুল করিম।

এনামুল হক শামীম বলেন, বঙ্গবন্ধু হচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসে একমাত্র নেতা যিনি প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি না হয়েও যা বলতেন তৎকালীণ পূর্ব বাংলার সাড়ে ৭ কোটি মানুষ তাই করতেন। এটা একদিনে হয়নি। ধাপে ধাপে ধীরে ধীরে আটচল্লিশ, বায়ান্ন, বাষট্টি, ছিষট্টি, উনসত্তুর, একাত্তরে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে অনেকেই মহাত্মা গান্ধী, কায়েদ-ই-আজমসহ অনেক বিশ্ব নেতার সঙ্গে তুলনা করেন। মহাত্মগান্ধী কিন্তু কংগ্রেস সৃষ্টি করেন নাই। কংগ্রেসে যোগ দিয়েছিলেন। কায়েদ-ই-আজম মুসলিম লীগ সৃষ্টি করেন নাই। মুসলীম লীগের যোগ দিয়েছিলেন। আর বঙ্গবন্ধু হচ্ছে পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল একজন নেতা যিনি একটি রাজনৈতিক দলকে তিলে তিলে গড়ে তুলে সেই রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে একটি দেশকে স্বাধীন করেছিলেন। সেই দেশের নাম হচ্ছে বাংলাদেশ। তিনি বলেছিলেন আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না মানুষের অধিকার চাই। আসলে তিনি স্বাধীনতা চেয়েছিলেন। অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি সংগ্রাম করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তিনি হতে পারতেনই। মন্ত্রীত্বকে তিনি ইস্তফা দিয়েছেন আওয়ামী লীগকে শক্তিশালী করার জন্য। কারণ তার লক্ষ্য নির্ধারিত ছিলো। তার লক্ষ্য ছিলো আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগকে তিলে তিলে গড়ে তুলে সংগঠনকে শক্তিশালী করতে হবে। পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে আমাদের বিজয়ী হতে হবে।

উপমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু ৭ মার্চের ভাষণের আব্রাহাম লিংকনের গেটিসবার্গের ভাষণের সঙ্গে তুলনা করেন, আরো অনেক ভাষণের তুলনা করেন। আসলে এই ভাষণের সঙ্গে অন্য কোনো ভাষণের তুলনা হয় না। একটি জাতিকে গেরিলা যুদ্ধের মাধ্যমে মুক্ত করার জন্য স্বাধীণ করার জন্য যা কিছু করার দরকার তিনি তা করেছিলেন। চিন্তা করেন একটি বাক্য যদি ভুল হতো সেখানে অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারতো।
শামীম বলেন, বাংলাদেশের নামও তিনি আগে থেকেই ঠিক করে রেখেছিলেন। তিনি ছাত্রলীগকে দিয়ে আগেই পতাকা উড়িয়েছিলেন সবুজের বুকে লাল। রবীন্দ্রনাথের ‘আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি’ জাতীয় সংগীত করার বিষয়ে আগেই ঠিক করে রেখেছিলেন।

স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধুর পাশপাশি বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিবের অবদানও উল্লেখ করেন তিনি। স্বামী বঙ্গবন্ধু জেলে থাকা অবস্থায় সেই সংকটকালে সন্তানদের মুক্তিযুদ্ধে পাঠিয়েছিলেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কারাগারে দেখা করে তার বার্তা আওয়ামী লীগ নেতাদের কাছে পৌঁছে দিতেন শেখ ফজিলাতুন নেছা। এ সময় মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য শ্রীমতি ইন্ধরা গান্ধীর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সাবেক উপাচার্য হারুন-অর রশীদ বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করতে পেরেছে কিন্তু দেশের মানুষের হৃদয় থেকে তার নাম মুছে ফেলতে পারে নি। এটা কখনো সম্ভব নয়। বঙ্গবন্ধু খুনিদের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছিল কিন্তু বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আজ বিচার হয়েছে। এর মাধ্যমে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের মুখচ্ছবি, তিনি চিরঞ্জিব। যারা বঙ্গবন্ধুকে ইতিহাস থেকে মুছে ফেলতে চেয়েছে তারাই ইতিহাস থেকে মুছে গেছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

অন্যান্য সংবাদ