নিজেদের সক্ষমতা জানান দিতে এবার সিরিজ নির্বাচন করার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। এরই ধারাবাহিকতায় উপজেলা নির্বাচনের পরপরই সারাদেশে মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া পৌরসভা ও সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করবে সাংবিধানিক এই প্রতিষ্ঠানটি। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ শুরু হয় প্রথম সভার দিন থেকে। পরবর্তী পাঁচ বছর নির্বাচিত পরিষদ দায়িত্ব পালন করেন। মেয়াদপূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, উপজেলা পরিষদের মেয়াদ পূর্তির আগের ১৮০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। বর্তমানে দেশে ৪৫২টি উপজেলা পরিষদ নির্বাচন উপযোগী হয়ে আছে। জুনের মধ্যে এসব উপজেলায় নির্বাচন করতে হবে। এছাড়া আগামী মার্চের মধ্যে অল্পসংখ্যক ছাড়া প্রায় সবগুলো উপজেলা নির্বাচন উপযোগী হবে।
বর্তমান সরকার ২০১৫ সালে আইন সংশোধন করে ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ, পৌরসভা ও সিটি করপোরেশন নির্বাচন দলীয় প্রতীকে করার সিদ্ধান্ত নেয়।সেসব স্থানীয় সরকার নির্বাচনে আওয়ামী লীগ, জাতীয় পার্টি ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এর প্রার্থীরা দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করেন।
সুত্র জানিয়েছে, দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন নিয়ে নানান আলোচনা ও সমালোচনা থাকলেও নির্বাচনকে স্বকৃতি দিতে পেরেছে নির্বাচন কমিশন। এজন্য তারা এখন বেশ আত্মবিশ^াসী মুডে আছে। আর তাই এবার উপজেলা নির্বাচন উপলক্ষে নানা কৌশল হাতে নিয়ে কাজ করছে নির্বাচন কমিশন। এজন্য নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য করতে নানান পরিকল্পনা করে এবার দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ইতোমধ্যে নির্বাচনের দিনক্ষণও ঠিক করা হয়েছে। চলতি বছর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনসহ আরও কিছু স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচন করতে হবে ইসিকে। সারাদেশে উপজেলা পরিষদ রয়েছে ৪৯৫টি। সাধারণত সব উপজেলায় একসঙ্গে নির্বাচন করা হয় না। একাধিক ধাপে এ নির্বাচন হয়। এবারও ধাপে ধাপে নির্বাচন করার চিন্তা করছে ইসি। সারাদেশে চার ধাপে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের প্রস্তুতি শুরু করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। আগামী ৪ মে প্রথম ধাপের মাধ্যমে শুরু হবে ৪৫২টি উপজেলা পরিষদের এই ভোটগ্রহণ। এক সপ্তাহ করে বিরতি দিয়ে শেষ ধাপের নির্বাচন হবে ২৫ মে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, স্বতন্ত্র প্রার্থী দিয়ে জাতীয় নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক দেখাতে গিয়ে আওয়ামী লীগের মাঠ পর্যায়ে যে কোন্দল সৃষ্টি হয়েছে, তা মেটাতে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি।এজন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলের মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি দলীয় সদস্যদের স্বতন্ত্র হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ দেওয়ার পর স্থানীয় সরকার নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ।
দলের একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠকে নৌকা প্রতীক না দেওয়ার জন্য দুটি কারণ উল্লেখ করা হয়। প্রথম কারণ; সাংগঠনিক বিশৃঙ্খলা এড়ানো। দ্বিতীয় কারণ; স্থানীয় নির্বাচনকে উৎসবমুখর ও অংশগ্রহণমূলক করা।