জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কালো টাকা সাদার করার গড় ট্যাক্স ১০ শতাংশ হিসাবে মোট ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব সংগ্রহ করেছে। যা দেশ স্বাধীনের পর কালো টাকা সাদা করা অতীতের সব রেকর্ড অতিক্রম করেছে।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্য মতে, সদ্য সমাপ্ত ২০২০-২১ অর্থবছরে ১১ হাজার ৮৫৯ ব্যক্তি ২০ হাজার ৬০০ কোটি কালো টাকা সাদা করেছেন।
সাদা করা অর্থ শেয়ারবাজার, নগদ, ব্যাংক আমানত, বন্ড, ফ্ল্যাট, জমি ও অন্যান্য খাতে বিনিয়োগ করেছে।
এদের মধ্যে ৭ হাজার ৫৫ জন ব্যক্তি নগদ, বন্ড এবং ব্যাংক আমানত সাদা করে ১৬০০ কোটি টাকার বেশি ট্যাক্স দিয়েছেন। তারা ১৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকা সাদা করেছেন এই সুযোগের আওতায়। তবে ২৮৬ জন ৪০০ কোটি টাকা সাদা করেছেন এবং পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছেন।
আরও ১৬৪৫ জন ব্যক্তি ১৯৭০ কোটি টাকা সাদা করে জমিতে বিনিয়োগ করেছেন। অপর দিকে ২৮৭৩ জন ১৪৪০ কোটি টাকা সাদা করে ফ্ল্যাট, অ্যাপার্টমেন্ট বা বাড়ি কিনেছেন।
চলতি বছরের ৩০ জুন কালো টাকা সাদা করার সুযোগ শেষ হওয়ার আশঙ্কায় এনবিআরের কর্মকর্তারা অজ্ঞাতপরিচয় অর্থের মালিকদের কাছ থেকে কালো টাকা সাদা করার বিপুল সাড়া পেয়েছে।
কর্মকর্তারা বলেন, কালো টাকা সাদা করার এই সুযোগ তাদের অর্থ প্রকাশের জন্য উৎসাহি করেছিল। কর কর্মকর্তারা ভবিষ্যতে আইনী জটিলতা এড়াতে এই সুযোগে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিতে উৎসাহ দিয়েছেন।
সরকারি কর্মকর্তা অবসর প্রাপ্তসহ, পোশাক কারখানার মালিক, অন্যান্য ব্যবসায়ী ৪৭৯ জন কর অঞ্চল-৪ এ ১ দশমিক ৬৭০০ কোটি টাকা ট্যাক্স দিয়ে ১৬৭৭ কোটি টাকা সাদা করেছেন।
২০২০-২১ অর্থবছরে ৩১জন বৃহৎ করদাতা (প্রধানত ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক) ১৫২ কোটি টাকা কর দিয়ে ১৫২৭ কোটি টাকা সাদা করেছেন।
কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়েছেন ৭৩৯ জন চিকিৎসক। তারাও ১৪২ কোটি টাকা কর দিয়েছেন।
আরও ৬১১ জন ঢাকা কর অঞ্চল-১ এ ১৫৩০ কোটি টাকা কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন। এদের মধ্যে গাড়ি আমদানিকারক, পোশাক কারখানার মালিক, স্বর্ণ ব্যবসায়ী, জুয়েলারি ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার রয়েছেন।
২০২০ সালের ১ জুলাই দেওয়া সুযোগে চলতি বছরের ২৫ মে পর্যন্ত আরও ১০ হাজার ৪০৪ জন কালো টাকা সাদা করেছেন।
১৪ হাজার ৪৫৯ কোটি টাকা সাদা করায় সরকার তাদের কাছ ১৪৪৫ কোটি টাকা কর পেয়েছে।
২০০৫-০৬ হতে ২০১৯-২০ অর্থ বছর পর্যন্ত কালো টাকা সাদার করার সুযোগ দিয়ে সরকারের আয় হয়েছে ১৪ হাজার ৫৯৫ কোটি টাকা।