করোনা মহামারি ঠেকাতে সরকার ঘোষিত কঠোর বিধিনিষেধের দশম দিনে সড়কে বাড়ছে মানুষের চলাচল। গণপরিবহন না থাকায় জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়া সাধারণ মানুষদের গন্তব্যে পৌঁছতে একমাত্র ভরসা রিকশা।
সকালে অফিসমুখী মানুষের চাপ থাকায় সড়কে প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, স্টাফবাস ও মোটরসাইকেলসহ অন্যান্য ব্যক্তিগত যানবাহনের কিছুটা ভিড় থাকে। বেলা বৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ে রিকশার সংখ্যা।
শনিবার (১০ জুলাই) রাজধানীর পান্থপথ সিগন্যাল, রাসেল স্কয়ার মোড়, কলাবাগান, শুক্রাবাদসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, সবগুলো সড়কেই রিকশার বেশ চাপ রয়েছে।
শনিবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় ব্যাংক, বিমাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকলেও খোলা রয়েছে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠানে কর্মরত মানুষদের ঘর থেকে বের হয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে নির্ভর করতে হয়েছে রিকশার ওপর। এছাড়াও সপ্তাহের অন্যান্য দিনের তুলনায় সড়কে রিকশার পরিমাণও ছিল অনেক বেশি।
পান্থপথ সিগন্যাল থেকে কমলাপুর যাওয়ার জন্য রিকশাচালকদের সঙ্গে দরদাম করতে দেখা যায় বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা আবদুল ওয়াহিদ মিয়াকে। দেখা যায়, রিকশা চালকরা ভাড়া হাঁকছেন ২৮০ টাকা আর তিনি বলছেন ২০০ টাকা। কিন্তু ভাড়া না মেলায় শাহবাগ মোড়ের উদ্দেশ্যে হাঁটা শুরু করেন।
তিনি বলেন, শাহবাগ মোড় থেকে ২০০ টাকায় অনায়াসে আমি কমলাপুর পৌঁছাতে পারব। এখান থেকে ওরা (রিকশাচালকরা) অতিরিক্ত ভাড়া চাইছে।
তবে রিকশাচালকরা বললেন, অতিরিক্ত ভাড়া নয়, ন্যায্য ভাড়াই দাবি করেছি। লকডাউনের কারণে সব জিনিসের দাম ঊর্ধ্বগতি হওয়ায় বাধ্য হয়েই নির্দিষ্ট টাকার চেয়ে ১০-২০ টাকা বেশি নিতে হচ্ছে।
মনির নামের এক রিকশাচালক বলেন, লকডাউনের কারণে জিনিসপত্রের দাম বেশি। এর মাঝে পরিবার-পরিজনকে টাকা পাঠাতে হয়। তারপর ঢাকায় থাকা-খাওয়ার খরচ আছে। সব মিলিয়ে যদি কিছু টাকা অতিরিক্ত না আসে তবে না খেয়ে মরতে হবে।
আরেক রিকশাচালক সাহেব আলী বলেন, লকডাউনের কারণে মানুষজন ঘর থেকে কম বের হচ্ছে। আর রিকশার পরিমাণ বেশি হওয়াতে যাত্রী পাওয়া যাচ্ছে কম। তাই যে কয়জন পাওয়া যাচ্ছে তাদের থেকেই কিছু টাকা অতিরিক্ত দাবি করছি।
অপরদিকে ছুটির দিন হওয়াতে সড়কে ব্যক্তিগত যানবাহন ও প্রাইভেট কারের সংখ্যা কম হলেও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেকপোস্টে কড়াকড়ি দেখা যায়। যেসব গাড়ি ও মোটরসাইকেল সড়কে চলাচল করছিল সেগুলোকে থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে দেখা যায়।
ধানমন্ডি ৩২ এলাকার পুলিশের চেকপোস্টে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে দেখা যায় সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশ ও মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগকে।