নারী আসামিকে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠায় বরিশালের উজিরপুর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিয়াউল আহসান ও পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুল ইসলামকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
সোমবার (৫ জুলাই) দুপুরে জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মো. শাহজাহান হোসেন গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক কারণে এরইমধ্যে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এর আগে সকালে বরিশাল রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ের এ আদেশ জেলা পুলিশ সুপারকে বাস্তবায়নের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন রেঞ্জের ডিআইজি এস এম আক্তারুজ্জামান।
তিনি জানান, বরিশালের উজিরপুর উপজেলায় শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় এক নারী আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পর আদালত যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবে কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। পাশাপাশি ওই ঘটনার তদন্তে এরইমধ্যে রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয় থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে যদি কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যায় তাহলে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থাও নেওয়া হবে।
জেলা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উজিরপুর মডেল থানা পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. মাইনুল ইসলামের বিরুদ্ধে নারী আসামিকে রিমান্ডে নিয়ে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ ওঠার পাশাপাশি দায়িত্ব অবহেলার কারণে উজিরপুর মডেল থানার ওসি জিয়াউলকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ জুন বরিশালের উজিরপুর উপজেলার জামবাড়ি এলাকা থেকে বাসুদেব চক্রবর্তী নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় তার ভাই বরুন চক্রবর্তী ওই দিনই থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় এক নারীকে আসামি করা হলে ওই দিনই তাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরবর্তীতে পুলিশ আদালতের কাছে রিমান্ড আবেদন করেন। পুলিশের পাঁচ দিনের রিমান্ড আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩০ জুন বরিশালের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট উজিরপুর আমলী আদালত ওই নারী আসামির দু’দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
রিমান্ড শেষে গত ২ জুলাই ওই নারীকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় তাকে খুড়িয়ে হাঁটতে দেখে এর কারণ জানতে চান আদালত। পরে ওই নারী আদালতের কাছে তাকে শারীরিক এবং যৌন নির্যাতনের অভিযোগ করেন পুলিশের বিরুদ্ধে। আদালত একজন নারী কনস্টেবল দিয়ে তার শারীরিক পরীক্ষা করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন দেখতে পায়।
এরপর আদালত ওই নারীকে যথাযথ চিকিৎসা দিয়ে এবং তাকে নির্যাতনের বিষয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দেন বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিক্যাল কলেজ (শেবাচিম) হাসপাতালের পরিচালককে। পরে হাসপাতালের পরিচালক তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন। প্রতিবেদনে তিনি ওই নারীর শরীরে আঘাতের চিহ্নর কথা উল্লেখ করেন