মহামারি মোকাবিলায় আরেকটি বিশেষ বিসিএসের আয়োজন করতে যাচ্ছে সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)। ৪৪তম এ বিসিএসে নিয়োগ দেওয়া হবে ৪০৯ জন চিকিৎসককে।
অন্যান্য বিশেষ বিসিএসে প্রিলিমিনারি এবং ভাইভা হলেও এ বিসিএসে শুধু মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে নিয়োগ দেওয়া হবে। এ জন্য সরকারি কর্ম কমিশনের নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে চলতি মাসেই সার্কুলার দেওয়া হতে পারে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্রটি জানায়, বিশেষ বিসিএসে শুধু মৌখিক পরীক্ষার (ভাইভা) মাধ্যমে ৪০৯ জন চিকিৎসককে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেস্থেসিওলজি) হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হবে। এজন্য বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা-১৯৮১ সংশোধন করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। চলতি মাসেই ৪৪তম বিশেষ বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হতে পারে।
জানা গেছে, দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটারে অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট সংকট রয়েছে। এ কারণে অনেক হাসপাতালে অস্ত্রোপচার বন্ধ রয়েছে। এসব পদে জরুরিভিত্তিতে অ্যানেস্থেসিওলজিস্ট নিয়োগ দেওয়ার জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে চাহিদাপত্র পাঠায় হাসপাতালগুলো। এসব হাসপাতালের চাহিদাপত্র জনপ্রশাসনে দেওয়া হলেও কোনো সাড়া মেলেনি। এবার সেই নিয়োগ আলোর মুখ দেখতে যাচ্ছে। এছাড়াও অ্যানেস্থেসিওলজির শূন্য পদ দ্রুত পূরণের জন্য প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকেও নির্দেশনা রয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বিধিমালা সংশোধন করে গত ২৮ জুন গেজেট প্রকাশ করা হয়। এ পদে নিয়োগ পেতে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা লাগবে। এছাড়া এ বিষয়ে পোস্ট গ্র্যাজুয়েট বা ডিপ্লোমা ডিগ্রি থাকতে হবে।
জানতে চাইলে শুক্রবার (২ জুলাই) সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) চেয়ারম্যান মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, যেকোনো ধরনের বিশেষ বিসিএস নিতে হলে পিএসসির নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করতে হয়। সরকার যদি প্রয়োজন মনে করে তবে সেটা করা হতে পারে।
৪৪তম বিসিএসে শুধু ভাইভার মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ নিয়োগ বিধিমালা সংশোধনের কোনো চাহিদা বা পত্র এখনও আমরা পায়নি। পেলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিধি অনুবিভাগ) আবুল কাশেম মো. মহিউদ্দিন বলেন, দেশের হাসপাতালগুলোয় জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেস্থেসিওলজি) পদ শূন্য। এতে অপারেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা দিতে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এজন্য এসব পদে নিয়োগ দিতে বিশেষ বিসিএসের আয়োজন করা হবে। বিসিএস নিয়োগ বিধিমালা সংশোধন করে শর্ত শিথিল করা হয়েছে। নিয়োগের প্রস্তাব গত বুধবার (৩০ জুন) স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চিকিৎসকরা অ্যানেস্থেসিওলজি নিয়ে পড়তে আগ্রহী নন। ফলে হাসপাতালে অনেক পদ শূন্য রয়েছে। এসব পদ দ্রুত পূরণে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত নিয়োগের জন্য এখন কাজ চলছে।
এদিকে করোনা সংক্রমণের কারণে দুটি বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে চিকিৎসক নিয়োগের উদ্যোগ নেয় সরকার। এর মধ্যে ৩৯তম বিসিএসে (বিশেষ) ২০০ নম্বরের এমসিকিউ এবং ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে পাঁচ হাজারের মতো চিকিৎসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। আর ৪২তম বিশেষ বিসিএসের প্রিলিমিনারি পরীক্ষা ফলাফলের পর মৌখিক পরীক্ষা চলছে। করোনার কারণে আপাতত ভাইভা স্থগিত রাখা হয়েছে ।
পিএসসি জানায়, প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী ৩৯তম বিসিএসের নন-ক্যাডার থেকে দুই হাজার চিকিৎসক নেওয়া হয়। তারা ক্যাডার হিসেবে নিয়োগের জন্য সুপারিশপ্রাপ্ত হন ৩৯তম বিসিএসের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে। স্বাস্থ্য ক্যাডারের সহকারী সার্জন হিসেবে তাদের নিয়োগের সুপারিশ করা হয়। এছাড়াও করোনাকালে ৫ হাজার ৫৪ জন নার্স নিয়োগের সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন ২০১৮ সালের সিনিয়র স্টাফ নার্স নিয়োগ পরীক্ষার অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে।