বাংলাদেশ থেকে ভারত পাচারকালে বিপুল সোনার চালান জব্দ করেছে ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। এক প্রেস বিবৃতিতে বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের ডিআইজি এ কে আরিয়া জানান, নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ভারত ও বাংলাদেশের ঘোজাডাঙ্গা-ভোমরা সীমন্তের কাছে গুনারমাথ এলাকায় উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ৪১ কেজি ৪৯১ গ্রাম সোনা। ভারতে যার আনুমানিক বাজার মূল্য প্রায় ২১ কোটি ২২ লাখ রুপি।
বিএসএফ সূত্রে জানানো হয়েছে, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে গোয়েন্দা তথ্যের উপর ভিত্তি করে ভারতীয় সীমান্তের গুনারমাথ বর্ডার আউটপোস্ট এলাকায় অভিযান চালায় বিএসএফের ১৫৮ নম্বর ব্যাটালিয়ন। দেখা যায় সীমান্তবর্তী ইচ্ছামতী নদী পার করে অন্ধকারের আড়ালে একটি ছোট কাঠের নৌকায় বাংলাদেশ থেকে ভারতের ভূখণ্ডে প্রবেশের চেষ্টা করছে বেশ কয়েকজন পাচারকারী। এসময় অপেক্ষারত বিএসএফ জওয়ানরা তাদের চ্যালেঞ্জ করলে বাধা পেয়ে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে যায় পাচারকারীরা। পরে তল্লাশি চালিয়ে নৌকা থেকে উদ্ধার করা হয় ৫টি ব্যাগ, যা থেকে পাওয়া যায় বিশুদ্ধ ২৪ ক্যারেটের ৩২১টি সোনার বিস্কুট, ৪টি সোনার বার, ১টি সোনার কয়েন। যার সর্বমোট ওজন প্রায় ৪১ কেজি ৪৯১ গ্রাম। এছাড়া উদ্ধার করা হয় একটি কাঠের দেশীয় নৌকা, চারটি মোবাইল ফোন, প্যাকিং সামগ্রী এবং বাংলাদেশি সংবাদপত্র।
বিএসএফ বলছে, পাচারকারীদের ধরতে চিরুনি তল্লাশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে ভারতীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার দ্বারা সাম্প্রতিক সময়ে এটিই সবচেয়ে বড় একক সোনা আটকের ঘটনা বলে জানা গেছে। এছাড়া ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
এদিকে একই দিনে বাংলাদেশে পাচারের সময় সীমান্তে ১৩ লাখ ৩০ হাজার ১২০ রুপি মূল্যের মাছের ডিমসহ এক ভারতীয় পাচারকারীকে আটক করেছে বিএসএফ। ঘোজাডাঙ্গা সীমান্তের কাছে আকতারুল সরদার নামে ওই ভারতীয় পাচারকারীকে আটক করে বিএসএফের ১৫৩ নম্বর ব্যাটালিয়নের টহলদার বাহিনী।
বিএসএফ সূত্রে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ঘোজাডাঙ্গা থেকে উত্তরপাড়া গ্রামের সীমান্ত এলাকায় যাওয়ার সময় এক সন্দেহভাজন মোটরবাইক আরোহীকে আটক করে বিএসএফ। এসময় তল্লাশি চালিয়ে ১৬টি বড় মাছের ডিমের প্যাকেট উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার করা হয় মোটরবাইক আরোহী বসিরহাটের বাসিন্দা পাচারকারী আকতারুল সরদারকে। জব্দ করা হয়ছে তার মোটরবাইক।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আকতারুল সরদার জানিয়েছে, গত ২১ জুলাই তিনি এক ভারতীয় চোরাকারবারির কাছ থেকে এসব মাছের ডিম নিয়েছিল। এসব মাছের ডিম বিএসএফের ডিউটিলাইন অতিক্রম করে বাংলাদেশি পাচারকারীর কাছে হস্তান্তর করার কথা ছিল। এই কাজের জন্য তিনি মাত্র ৩০০ রুপি পেতেন পাচারকারীদের থেকে। কিন্তু আন্তর্জাতিক সীমান্তের কাছে পৌঁছতেই সীমান্ত নিরাপত্তা বাহিনী তাকে মাছের ডিমসহ ধরে ফেলে।
গ্রেপ্তার চোরাকারবারি ও বাজেয়াপ্ত মাছের ডিম পরবর্তী আইনি প্রক্রিয়ার জন্য বসিরহাট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।