এখন করোনাকাল। স্কুল বন্ধ তাই দীর্ঘদিন ঘরবন্দি। বড়রা যাওবা বাইরে বের হচ্ছে শিশুরা কিন্তু হচ্ছে না। তাহলে শিশুরা করবে কী?
এমনিতেই ঘরে বসে বই পড়া, সিনেমা দেখা আর বাগান করা তো অনেক হলো, এবার চাই ভিন্ন কিছু। কী করা যায় নতুন করে?
১. সেলাইয়ের প্রথম পাঠ
কাপড়ের ছোট ছোট টুকরো কিংবা ছেঁড়া অংশ নিয়ে শিশুরা পুতুলের জামা তো বানায়। এবার সেটাকেই খানিকটা পেশাদার রূপ দিতে পারেন। বিশেষ করে ৫-৬ বছর বয়সে শিশুদের এসব শেখার প্রতি আগ্রহ অনেক। ক্রাফটিং ঘরানার কিছু সেলাই এসময় তাদের শিখিয়ে ফেলতে পারেন ইউটিউব ভিডিও থেকে। এতে তাদের সৃজনীশক্তি বাড়বে, মস্তিষ্কের নিউরাল নেটওয়ার্কও হবে শক্তিশালী।
২. স্বেচ্ছাসেবীর কাজ
স্বেচ্ছাসেবী হিসেবেও যে কাজ করে আনন্দ পাওয়া যায় তা শেখাতে পারেন ঘরে থেকেই। এ সময় অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা কম করা ভালো। তবে সুযোগ পেলে আশপাশের রাস্তা পরিষ্কার রাখা কিংবা প্রতিবেশীর খোঁজখবর নেওয়ার মাধ্যমে তারা খেলাচ্ছলেই শিখবে স্বেচ্ছাশ্রমের গুরুত্ব। এটা শিশুদের জড়তা কাটাতে সাহায্য করবে। পরে বড় হলেও এ অভিজ্ঞতা তাকে ঢের অনুপ্রেরণাও যোগাবে।
৩. অরিগামি
কাগজ ভাঁজ করে এটা ওটা বানালে মগজেরও ভালো ব্যায়াম হয়। জাপানি এ শিল্পটি চর্চা শুরু করলে দেখা যাবে শিশুর আর একঘেয়ে সময় কাটছে না। বলা তো যায় না, এর মাধ্যমেও শিশুর শিল্পীসত্ত্বা বিকশিত হতে পারে আচমকা।
৪. কারাতে
ইউটিউব দেখে টুকটাক কারাতে চর্চা করাটা একটা মজার কাজ হবে ওদের জন্য। এতে আর বাড়তি করে ব্যায়াম করতে হবে না। এটা মানসিক ভারসাম্য স্থির রাখতেও সাহায্য করে। পাশাপাশি এই খেলাটি মানুষকে সম্মান করতেও শেখায়।
৫. মহাকাশ বিজ্ঞান
এটা নিয়ে প্রতিটি শিশুরই অনেক কৌতুহল। এ বিষয়ে শিশুকে ব্যস্ত রাখতে চাইলে দরকার হবে একটি ভালো মানের দূরবীন। যা অনলাইনেই অর্ডার করতে পারবেন।
৬. ছবি তোলা
ছবি তোলার শখ কার নেই। শিশুকে এই ফাঁকে শিখিয়ে ফেলুন ফটোগ্রাফির টুকিটাকি। আপনি না জানলেও সমস্যা নেই। শিশুদের জন্যও ফটোগ্রাফি শেখার ইউটিউব চ্যানেল আছে ভুরি ভুরি। শিশুকে একটি ছোটখাট ক্যামেরাও কিনে দিন। নিজের মতো তুলতে থাকুক আশপাশের ছবি। তাকে বলুন, সে যেন ভালো করে দেখেশুনে ছবি তোলে। হয়তো এতেই বেরিয়ে আসবে দারুণ কিছু।
৭. স্ক্র্যাপবুকিং
যেসব শিশুর কাঁচি ধরার মতো বয়স হয়েছে তাদের জন্য এটি মজার এক খেলা। পুরনো খবরের কাগজ কিংবা এটাওটা থেকে মজার ছবি কেটে নিজের ডায়রিতে জুড়ে দেওয়াটাই হলো স্ক্র্যাপবুকিং। এতে কোলাজ-শিল্পের ধারণা পাবে শিশু। ঘটাবে চিন্তাশক্তিরও বিকাশ।
৮. পাখি দেখা
পাখি দেখা বড়দের এক বিচিত্র শখ বটে। আর এ শখ তৈরি করা গেলে আপনার শিশুর আরও প্রকৃতিঘেঁষা হবে। তৈরি হবে মমত্ববোধ। পাখি দেখে দেখেও সে হয়ে উঠতে পারে কল্পনাপ্রবণ। তবে এর জন্য একটা ভালোমানের বাইনোকুলার কিনে দিতেই হবে তাকে।
৯. রুটি বানানো
রুটি বানানো কিন্তু চাট্টিখানি কথা নয়। রীতিমতো গাণিতিক দক্ষতার ব্যাপার। টুকটাক এসব লাইফস্কিল শেখাতে পারলে পরে জীবনটা তার অনেক সহজ হয়ে যাবে। আবার এসব কাজেকর্মের শিশুর হাতের ব্যায়ামটাও হবে। তবে শুরুতে আবার একেবারে চুলা বা বটি দিয়ে রান্না শেখাতে যাবেন না।
১০. জমানোর শখ
বিরল পয়সা, ডাকটিকিট, পুরনো ছবি কিংবা পত্রিকার কাটিং; একটা কিছু জমানোর শখ থাকলেও শিশু আর বিষণ্ন সময় কাটাবে না। পাশাপাশি এ ধরনের শখ থাকলে ইতিহাস সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ে শিশুদের। জানতে পারবে ভূগোল সম্পর্কেও।
১১. লেখালেখি
লেখালেখির উপকার বলে শেষ করা যাবে না। পড়াশোনায় তো বটেই, ভবিষ্যতে এটা ওটা রিপোর্ট লিখতেও এ গুণ কাজে আসবে অনেক। তাই এখন থেকেই ছোটখাট মজার কোনও বিষয়ে লিখতে উৎসাহ দিন। শিশু লিখতে না চাইলে তার জন্য উপহারের ব্যবস্থা রাখুন।