তিনদিনের টানা বর্ষণ আর উজানের ঢলে রংপুর, সিরাজগঞ্জ, শেরপুর ও গাইবান্ধায় বেড়েছে নদ-নদীর পানি। ভাঙছে নদী, ডুবে আছে তীরের বিস্তীর্ণ জনপদ আর ফসলিজমি। ভেসে গেছে ঘেরের মাছ। পানিবন্দি এসব অঞ্চলের কয়েক হাজার মানুষ।
পশ্চিমবঙ্গের গজলডোবায় ব্যারেজের গেট খুলে দেওয়ায় তিস্তা নদীর পানি বেড়ে ঢুকেছে রংপুরের গঙ্গাচড়া উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ২৫টি গ্রামে। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন বহু মানুষ।
পানি বেড়েছে সিরাজগঞ্জের যমুনা নদীতেও। স্রোতে ভাঙছে যমুনার পূর্বপাড়ের বাঘুটিয়া, চরবিনানই, ভুতের মোড় ও দেওয়ানগঞ্জ। আতঙ্কে বাড়িঘর ছাড়ছেন নদীতীরের বাসিন্দারা। এনায়েতপুরেও শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। শুক্রবার সকালে নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায় ১৮টি বাড়ি। গাইবান্ধায় তিস্তা যমুনা ও ব্রহ্মপুত্র নদীর পানি বেড়ে প্লাবিত হয়েছে নিম্নাঞ্চল। তলিয়ে গেছে সবজি ক্ষেতসহ অন্যান্য ফসলিজমি।
শেরপুরের মহারশী, চেল্লারখালী এবং ভোগাই নদীর পানি বেড়ে দুই পাড়ের প্রায় চল্লিশটি গ্রামে পানি ঢুকেছে। ভেসে গেছে ঘেরের মাছ, প্লাবিত হয়েছে ফসলিজমি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দশ হাজার মানুষ।
অন্যদিকে, কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিপাতে হাওরের পানি বাড়ায় সিলেট ও সুনামগঞ্জে আবারও বন্যার আশংকা দেখা দিয়েছে। কয়েকদিনের টানা বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে লালমনিরহাটের তিস্তা ও শেরপুরের বিভিন্ন নদনদীর পানি বাড়তে শুরু করেছে। তলিয়ে গেছে এসব জেলার নিুাঞ্চল। দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে নদী তীরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের।
লালমনিরহাটে তিস্তা নদীতে পানি বাড়ায় খুলে দেয়া হয়েছে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট। প্লাবিত হয়েছে নিুাঞ্চল। এছাড়া ধরলা, সতীসহ জেলার নদ-নদীগুলোর পানি বেড়েছে। নিুাঞ্চল প্লাবিত হয়ে পানিবন্দী কয়েক হাজার মানুষ। পাহাড়ি ঢল আর বৃষ্টি অব্যাহত থাকলে লালমনিরহাটে বন্যা বাড়ার আশংকা করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
অন্যদিকে, আগের বন্যার ক্ষয়ক্ষতি কাটিয়ে উঠার আগেই নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে সিলেট ও সুনামগঞ্জে। পানি বাড়ছে দুই জেলার হাওরে। বেড়েছে সুরমা, কুশিয়ারা, ধলাই, যাদুকাটা, পাটলাই নদীর পানি।
টানা বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা ঢলে সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে অস্বাভাবিক হারে বাড়ছে যমুনা নদীর পানি। আকস্মিক নদী ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে ৩টি তাঁত কারখানাসহ অন্তত ১০টি বসতভিটা ও বিস্তীর্ন ফসলি জমি। ভাঙ্গনের ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাটবাজারসহ বহু বসতবাড়ি। স্থানীয়দের অভিযোগ, ভাঙ্গন রোধে সঠিক পরিকল্পনার অভাবেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।