মহামারি সংক্রমণ রোধে সরকার ঘোষিত কঠোর ‘লকডাউনে’ খেটে খাওয়া মানুষের জীবনে নেমে এসেছে দুর্ভোগ।
একদিকে যেমন শিল্প কারখানা বন্ধ, তেমনি যানবাহনও নেই সড়কে। ‘লকডাউনে’র ফলে মানুষ ঘর থেকেও বের হচ্ছেন কম। এমন অবস্থায় এ কঠোর ‘লকডাউনে’ যেন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে খেটে খাওয়া মানুষের জীবন।
বুধবার (২৮ জুলাই) রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে তেমন চিত্রই। দেখা যায়, রাজধানীতে ভাসমান দরিদ্র ও দুস্থ মানুষের সংখ্যা কম নয়। তাদের বেশির ভাগেরই ঘর বলতে কিছু নেই। আবার যাদের ঘর আছে, তারাও এ পরিস্থিতিতে হয়ে পড়েছেন কর্মহীন।
রাজধানীর মিরপুরের সালমা নামে এক গৃহকর্মী বলেন, বাড়িতে বাড়িতে কাজ করি, এ ‘লকডাউনে’ কাজ করতে পারি না। আমার স্বামীও অসুস্থ। সে খেলনা বিক্রি করতো, এখন সেটাও পারে না ‘লকডাউনে’র কারণে। দুই সন্তান নিয়ে টাকার অভাবে একদিকে যেমন খাদ্য সংকট, তেমনি স্বামীর চিকিৎসাও করাতে পারছি না। করোনাতে নয়, অবস্থা যা, তাতে আমরা ‘লকডাউনে’ই মরে যাব।
কাজ না হারালেও রাজধানীতে যারা রিকশা চালান, তাদের অবস্থাও অনেক করুন। বিশেষ করে ‘লকডাউনে’ রাস্তায় কিছু রিকশা দেখা গেলেও প্যাসেঞ্জার তেমন মেলে না বলেই মত তাদের। ফলে তারাও আছেন বিপাকে।
মগবাজারের রিকশাচালক বশীর বলেন, লকডাউনে’র কথা আর কি বলব ভাই, এখন কোনো খ্যাপ (ভাড়া) নাই। আগে তো মানুষ রাস্তায় বের হলেই ভাড়া মিলতো। এখন মানুষও রাস্তায় কম, আবার বাজার বন্ধ থাকায় মালামাল টানার কাজও নাই। দুই-একজন প্যাসেঞ্জার যা মেলে, তাও অনেক কষ্টে।
রাজধানীর খেটে খাওয়া মানুষের এক বিশাল অংশ- রিকশাচালক, দিনমজুর, হোটেল শ্রমিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, হকার, কুলি, গৃহকর্মীসহ অন্যান্য অসংখ্য পেশার মানুষ। তারা দিন এনে দিন খান। এসব মানুষের বসবাস বস্তিতে অথবা খোলা রাস্তার ধারে। কঠোর এ ‘লকডাউনে’র সব চেয়ে খারাপ প্রভাব যেন তাদের ওপরেই পড়েছে। নেই তাদের পাশে কেউ। কেবল কষ্টই তাদের সঙ্গী.....