মানিকগঞ্জ ও মাদারীপুরে স্কুল শিক্ষার্থীদের অসুস্থ হওয়ার ঘটনায় স্কুলগুলো মনিটর করা হচ্ছে। এ ঘটনায় স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় এখনো আসেনি বলে মন্তব্য করেছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী বলেন, মানিকগঞ্জের ওই শিক্ষার্থীর বিষয়ে আমরা খোঁজ নিয়েছি। তার সহপাঠীদের করোনা পরীক্ষা করা হয়েছে। সবারই রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। বিষয়টি আমাদের সার্বক্ষণিক তদারকিতে আছে।
মন্ত্রী আরও বলেন, করোনা এমন একটি ভাইরাস যে কেউ যে কোনো সময় আক্রান্ত হতে পারে। এ ব্যাপারে আমাদের মনিটরিং কার্যক্রম অব্যাহত আছে। অভিভাবক, শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টদের প্রতি আমার আহ্বান, সবাই যেন নিয়ম মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসেন এবং ক্লাস নেন।
এদিকে মানিকগঞ্জে করোনায় আক্রান্ত হয়ে সুবর্ণা ইসলাম রোদেলা নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। সুবর্ণা জেলা শহরের বেউথা এলাকার বশির উদ্দিন মোল্লার মেয়ে এবং এসকে সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী। ক্লাসে তার রোল নম্বর এক ছিল।
বুধবার (২২ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় ঢাকার কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত তিন দিন ধরে সুর্বণার জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। স্থানীয় চিকিৎসকের পরামর্শে ওষুধও খেয়েছে। কিন্তু গত শনিবারে শ্বাসকষ্ট, গলা ও বুকে ব্যথা উঠে অচেতন হয়ে পড়ে সে। পরে তাকে দ্রুত মুন্নু জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে পরীক্ষায় তার করোনা পজিটিভ ধরা পড়ে। তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে মানিকগঞ্জ থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে গাবতলী এলাকায় সে অ্যাম্বুলেন্সে নিস্তেজ হয়ে পড়ে। এ সময় ইবনে সিনা হাসপাতালে তাৎক্ষণিক নেওয়া হলে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মুন্নু জেনারেল হাসপাতালের উপপরিচালক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, রোগীর অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। পরীক্ষার পর তার করোনা শনাক্ত হওয়া এবং খুবই সংকটাপন্ন অবস্থা হওয়ায় তাকে দ্রুত রাজধানীর কুর্মিটোলা হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল।
মানিকগঞ্জ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা হাসপাতালের আবাসিক স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. কাজী একেএম রাসেল বলেন, একজন ছাত্রী করোনায় আক্রান্তের খবর ছড়িয়ে পড়লে ওই বিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন ছাত্রী করোনা পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে এসেছিল।
জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আব্দুল লতিফ বলেন, মেয়েটি গত ১৫ সেপ্টেম্বর সর্বশেষ স্কুলে গিয়েছিল। তখন তার শরীরে কোনো সমস্যা ছিল না। গত তিন দিন ধরে তার জ্বর এবং শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। গত শনিবার দুপুরে তাকে মুন্নু হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং সেখান থেকে ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। সে করোনায় আক্রান্ত ছিল কিনা তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এর আগে ওই বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী করোনা পজিটিভ হওয়ায় ওই শ্রেণির পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছিল। পরবর্তীতে তার ৫৮ সহপাঠীকে করোনা পরীক্ষা করোনো হয়েছিল। তবে কারও দেহে করোনা শনাক্ত না হওয়ায় এবং আক্রান্ত শিক্ষার্থী সুস্থ হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে ওই শ্রেণির পাঠদান পুনরায় চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।