রোববার থেকে শুরু হচ্ছে ২০২২-২৩ ইতালিয়ান সিরি-এ লিগের নতুন মৌসুম। বর্তমান চ্যাম্পিয়ন এসি মিলানের পাশাপাশি শিরোপা প্রত্যাশী অপর বড় দল ইন্টার মিলান, জুভেন্টাস, রোমাও চাইবে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের। যে কারনে গ্রীষ্মকালীণ ট্রান্সফার উইন্ডোতে দলগুলোর ব্যস্ততা নজরে এসেছে।
এবারের লিগে বড় দলগুলোতে এসেছেন বেশ কিছু তারকা খেলোয়াড়। তাদের কেউ কেউ নতুন করে পুরনো ক্লাবে ফিরেছেন, কেউ আবার সিরি-এ লিগে একেবারেই নতুন। তেমনই কয়েকজন তারকার কথা এখানে তুলে ধরা হলো :
রোমেলু লুকাকু (ইন্টার মিলান) : এবারের গ্রীষ্মকালীণ ট্রান্সফার উইন্ডোতে রোমেলু লুকাকুর ইন্টার মিলানে ফিরে আসা অন্তত এটাই প্রমান করে যে এ বছর সিরি-এ লিগের শিরোপা জয়ে এই ক্লাবটি সুস্পষ্ট ফেবারিট। যদিও তাদের মূল লক্ষ্য ছিল পাওলো দিবালা ও গ্লেইসন ব্রেমারের দিকে। এই দুজনই শেষ পর্যন্ত অপর দুই জায়ান্ট রোমা ও জুভেন্টাসে যোগ দিয়েছেন। চেলসিতে হতাশাজনক মৌসুম কাটিয়ে আবারো মিলানে ফিরে এসে বেলজিয়ান স্ট্রাইকার লুকাকু নিজেকে ফিরে পেতে মরিয়া হয়ে আছেন। নতুন মৌসুমকে সামনে রেখে স্ট্যামফোর্ড ব্রীজ থেকে ধারে ইন্টারে ফিরে এসেছেন লুকাকু। আগের দুই মৌসুমে ইন্টারের হয়ে ৯৫ ম্যাচে ৬৪ গোল করেছিলেন লুকাকু। ২০২১ সালে জুভেন্টাসের আধিপত্য খর্ব করে ১১ বছরের শিরোপ খরা কাটিয়ে ইন্টার সিরি-এ লিগের শিরোপা জয় করেছিল যার পিছনে লুকাকুর যথেষ্ঠ অবদান ছিল।
পল পগবা (জুভেন্টাস) : ফ্রি-এজেন্ট সুবিধায় ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড থেকে পুরনো ডেরায় ফিরেছেন পল পগবা। ফরাসি এই মিডফিল্ডারকে আবারো জুভেন্টাসে ফিওে পেয়ে কোচ মাসিমিলিয়ানো আলেগ্রিও দারুন খুশী। যদি প্রাক-মৌসুমে হাঁটুর ইনজুরিতে পড়ে মৌসুমের শুরুতে মাঠে থাকা হচ্ছেনা পগবার। যে কারনে দ্বিতীয়বারের মত জুভেন্টাসের অভিষেকটা কিছুটা বিলম্বিত হয়ে গেল। নভেম্বর-ডিসেম্বরে কাতার বিশ্বকাপকে সামনে রেখে পগবার এখন মূল লক্ষ্য ইনজুরি কাটিয়ে দ্রুত ফ্রান্স জাতীয় দলে ফিরে আসা। যে কারনে আপাতত অস্ত্রোপচার করাচ্ছেন না পগবা। চিকিৎসকরাও অবশ্য তাতে সম্মতি জানিয়েছেন। পগবার আগমনে জুভেন্টাসের মধ্যমাঠের দূর্বলতা অনেকাংশেই কমে যাবে বলে আলেগ্রি আশাবাদী।
জর্জিনিও উইজনালডাম (রোমা) : গত মৌসুমে প্রথমবারের মত আয়োজিত ইউরোপা কনফারেন্স লিগের শিরোপা জেতার পর অনেকটাই আত্মবিশ্বাস ফিরে পেয়েছে ইতালিয়ান জায়ান্ট রোমা। পিএসজি থেকে ধারে ডাচ মিডফিল্ডার জর্জিনিও উইজনালডামকে দলে ভিড়িয়ে কোচ হোসে মরিনহো অন্তত একটি বিষয় নিশ্চিত করেছেন এবারের আসরে তারা শিরোপা জয়ের ব্যপারে বেশ সিরিয়াস। অনেকেই ইতোমধ্যেই রোমাকে শিরোপা জয়ে ডার্ক হর্স হিসেবে চিহ্নিত করেছে। রোমার মধ্যমাঠে ৩১ বছর বয়সী লিভারপুলের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বিজয়ী উইজনালডাম সেই প্রত্যাশায় বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাবে।
এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া (জুভেন্টাস) : এবারের গ্রীষ্মে আরেক ফ্রি-এজেন্ট হিসেবে জুভেন্টাস দলে ভিড়িয়েছে আর্জেন্টাইন তারকা স্ট্রাইকার এ্যাঞ্জেল ডি মারিয়াকে। কোপা আমেরিকা বিজয়ী ডি মারিয়া পিএসজি থেকে ছাড়া পেয়ে তুরিনে নাম লিখিয়েছেন। প্যারিসের জায়ান্টদের হয়ে সাত বছরে ডি মারিয়া পাঁচটি লিগ ওয়ান শিরোপা ও পাঁচটি ফরাসি কাপ শিরোপা জয় করেছেন। কিন্তু বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে ২০২০ সালের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে পরাজিত দলটিতে অবশ্য তিনি ইনজুরির কারনে খেলতে পারেননি।
চার্লস ডি কেটেলায়ের (এসি মিলান) : বর্তমান সিরি-এ চ্যাম্পিয়ন এসি মিলানে এবারের গ্রীষ্মে একমাত্র বড় চুক্তি হিসেবে ৩৫ মিলিয়ন ইউরোর বিনিময়ে ক্লাব ব্রুজ থেকে যোগ দিয়েছেন বেলজিয়ান ফরোয়ার্ড ডি কেটেলায়ের। এর আগে অবশ্য ফ্রি এজেন্ট হিসেবে আরেক বেলজিয়ান উইঙ্গার ডিভোক ওরিগি লিভারপুল থেকে মিলানে এসেছেন।
২১ বছর বয়সী ডি কেটেলায়ের পাঁচ বছরের চুক্তিতে স্টিফানো পিওলির দলে এসেছেন। আটবার তিনি বেলজিয়াম জাতীয় দলের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছেন। গত তিন মৌসুমে ক্লাব ব্রুজের হয়ে ঘরোয়া লিগ শিরোপা জয় করেছেন। গত মৌসুমে কিছুটা হলেও সমস্যায় থাকা মিলানের আক্রমনভাগে ডি কেটেলায়ের বাড়তি অনুপ্রেরণা যোগাবেন বলেই সকলে আশাবাদী।
পাওলো দিবালা (রোমা) : ফ্রি-এজেন্ট হিসেবে আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড পাওলো দিবালার রোমায় যোগদান নিয়ে আলোচনা কম হয়নি। অনেকেই হোসে মরিনহোর দলকে শুধুমাত্র দিবালার আগমনের কারনে লিগ শিরোপা জয়ের অন্যতম দাবীদার হিসেবে বিবেচনা করছে। জুভেন্টাস থেকে ছাড়পত্র পাবার পর ইন্টারই প্রথম এই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিল। কিন্তু লুকাকুর ফিরে আসা শেষ পর্যন্ত দিবালাকে রোমায় যোগ দিতে বাধ্য করেছে। এমনকি বেতন কমিয়েও মরিনহোর ডাকে সাড়া দিয়ে রোমায় এসেছেন দিবালা। চ্যাম্পিয়ন্স লিগে খেলতে না পারলেও মে মাসে কনফারেন্স লিগে জয়ের পর লিগ শিরোপা জয়ে রোমাকেও অনেকে এগিয়ে রেখেছেন।