স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য বিমোচনসহ সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতে ওয়েস্টমিনিস্টার ও সিপিএভুক্ত পার্লামেন্টগুলো একত্রে কাজ করতে পারে। লন্ডনের ওয়েস্টমিনিস্টার ভবনে স্পিকারের কার্যালয়ে হাউস অব কমন্সের স্পিকার লিন্ডসে হোয়েলের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতের সময় তিনি কথা বলেন।
ব্রিটিশ পার্লামেন্টে স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সফর উপলক্ষে ওয়েস্টমিনিস্টার প্রাঙ্গনে যুক্তরাজ্যের পতাকার পাশাপাশি বাংলাদেশের পতাকাও উত্তোলন করা হয়।
সাক্ষাতের সময় শিরীন শারমিন ও লিন্ডসে হোয়েল জলবায়ু পরিবর্তন, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়ন, রোহিঙ্গা ইস্যু, বাংলাদেশের ডায়াসপোরা এবং সামাজিক উন্নয়নসহ কমনওয়েলথভুক্ত পার্লামেন্টসমূহের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
স্পিকার বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলা, দারিদ্র্য বিমোচন, নারীর ক্ষমতায়নসহ সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিতকরণে ওয়েস্টমিনিস্টার ও কমনওয়েলথভুক্ত পার্লামেন্টসমূহ একসঙ্গে কাজ করতে পারে।”
বিগত সময়ে সিপিএ’র চেয়ারপারসন হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে কমনওয়েলথভুক্ত পার্লামেন্টসমূহ এবং আইপিইউসহ অন্যান্য পার্লামেন্টারি সংস্থাসমূহের সঙ্গে সমন্বয় করে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে তিনি অবদান রেখেছেন বলে উল্লেখ করেন। এসব ক্ষেত্রে ব্রিটিশ পার্লামেন্টের সহযোগিতা ও সমর্থন কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করেন স্পিকার। তিনি বলেন, ‘কমনওয়েলথ দেশগুলোর কনফারেন্স কমনওয়েলথ হেডস অব গভর্মেন্ট মিটিং-এ সরকারি পর্যায়ে আলোচনার পাশাপাশি পার্লামেন্টসমূহের সঙ্গে বিদ্যমান ও উদীয়মান ইস্যু নিয়ে মতবিনিময় করা যেতে পারে। বর্তমানে জাতিসংঘ, বিশ্বব্যাংক, আইএমএফসহ বিশ্বের বিভিন্ন সংস্থা পার্লামেন্টগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন ইস্যুতে মতবিনিময় করে যাচ্ছে। কমনওয়েলথও এই পদক্ষেপ অনুসরণ করতে পারে।’
স্পিকার বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে যে সব দেশের সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবার আশংকা রয়েছে। এরমধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। তবে, সরকারের যুগোপযোগী পদক্ষেপ গ্রহণের কারণে বাংলাদেশ সফলতার সঙ্গে সংকট মোকাবিলা করছে। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনার পাশাপাশি বাংলাদেশ দীর্ঘমেয়াদী প্রেক্ষিত পরিকল্পনা ও ডেল্টা প্লান গ্রহণ করেছে।’ এ সব ক্ষেত্রে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের বিষয়টি তুলে ধরেন।
ব্রিটিশ স্পিকার স্যার লিন্ডসে হোয়েল জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের গৃহীত পদক্ষেপ ও উদ্যোগসমূহের প্রশংসা করে বলেন, ‘বাংলাদেশের ডায়াসপোরা ব্রিটেনে বেশ প্রশংসার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। ব্রিটিশ পার্লামেন্টসহ স্থানীয় সরকার ব্যবস্থায় ব্রিটিশ বাংলাদেশিগণ নিষ্ঠার সঙ্গে ব্রিটেনের উন্নয়নে অবদান রেখে যাচ্ছেন। একইসঙ্গে তাঁরা বাংলাদেশের উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছেন।’
স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে ব্রিটেনের অব্যাহত সমর্থন কামনা করেন। বাংলাদেশ পার্লামেন্টের পঞ্চাশ বছর পূর্তিতে সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি ব্রিটিশ স্পিকারকে আমন্ত্রণ জানান। স্পিকার লিন্ডসে হোয়েল এ আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন এবং সুবর্ণজয়ন্তীর অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন।
সাক্ষাতকালে ব্রিটেনে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাইদা মুনা তাসনিম ও যুগ্মসচিব এম এ কামাল বিল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।