‘অর্থনীতিতে রেমিট্যান্স খাতের জাদু শেষ হতে চলেছে’ এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম বাংলাদেশ-এর আহ্বায়ক ও সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের এ মন্তব্যের জবাব দিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রেমিট্যান্স কোনো জাদু নয়, তাই রেমিট্যান্স যে জায়গায় ছিল সে জায়গায়ই থাকবে।’
বুধবার (১১ আগস্ট) ২২তম অর্থনৈতিক সংক্রান্ত এবং ২৭তম সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক শেষে অনলাইন ব্রিফিংয়ে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
গত রোববার (৮ আগস্ট) এক ভার্চুয়াল সভায় দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য্য রেমিট্যান্সের জাদু শেষ হয়ে আসছে বলে যে মন্তব্য করেন তার জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘রেমিট্যান্স কি জাদু নাকি? রেমিট্যান্স যদি জাদু হয় তবে জাদু শেষ হওয়ার সম্ভাবনা আছে। কিন্তু রেমিট্যান্স তো জাদু নয়। সুতরাং রেমিট্যান্স কখনো শেষ হবে না। রেমিট্যান্স যে জায়গায় ছিলে সে জায়গায়ই থাকবে।’
তিনি বলেন, ‘তবে সমস্যা হচ্ছে যে ২০১৯ সালে যখন আমরা রেমিট্যান্সের বিষয়ে প্রণোদনা দেওয়া শুরু করি তখন থেকেই একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়। তারা বলে আসছিল প্রণোদনা দিয়ে রেমিট্যান্স বাড়ানো যাবে না এবং তারা বলেছে এটা কখনো বাড়বে না। তারা বলেছিল, এটা সাময়িক, সাসটেইনেবল নয়। এটা যে কোনো মুহূর্তে শেষ হয়ে যাবে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আপনারা জানেন ২০১৯ সালে আমরা যখন প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছিলাম তার আগে আমাদের রেমিট্যান্স ছিল প্রতি বছর ১৩ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার। কিন্তু ২ শতাংশ প্রণোদনা দেওয়ার পর প্রথম বছরই আমরা সংগ্রহ করলাম ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার। ১৩ দশমিক ১ থেকে ১৮ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে চলে যায়। দ্বিতীয় বছরে রেমিট্যান্স প্রায় ২৫ বিলিয়ন ডলারে চলে যায়। এটা অবিশ্বাস্য। রেমিট্যান্স ২৫ বিলিয়ন ডলার আসার পর তারা বলছে অনেক বেশি এসে গেছে। তারা চায় কম বেশি আসুক।’
বিদেশগামীদের কতটা সহায়তা দেওয়া হয়েছে সেটি নিয়ে প্রশ্ন আছে- এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘রেমিট্যান্সের সঙ্গে এটার কোনো সম্পর্ক নেই। সঠিকভাবে পাঠাতে পেরেছি। আমাদের কাছে এমন অভিযোগ নেই যে তারা যেতে পারেনি। সবচেয়ে বড় কথা যেখানে তারা যাবে সেখানে তারা যাচ্ছে। সেটা বন্ধ হয়নি, এটি চলমান। যখন স্বাভাবিক হবে তখন আরও বেশি মানুষ যাবে। আমার বিষয়টি হলো রেমিট্যান্সের সমস্যা ছিল সেটি ভালো হচ্ছে। বিদেশে যাওয়া নিয়ে বিশেষ ব্যয় করা হয়েছে, সব শর্তে ঋণের ব্যবস্থা আছে। তাদের জন্য সব ধরনের ব্যবস্থাই আছে।’
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘এ মাসের প্রথম ৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছে ৫৬৭ মিলিয়ন ডলার। একই সময় গত বছর ৯ দিনে রেমিট্যান্স এসেছিল ৪৫০ মিলিয়ন ডলার। এর পরও এটা সুবাতাস দেবে না এটা তারা কেন বলেন, দেশকে ভালোবাসা, জনগোষ্ঠীর ভালোর বিষয়গুলো ভাবা প্রয়োজন। এক মাসে কম ছিল, বাকি মাসগুলোতে সেটি পূরণ হয়ে গেছে। অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে আমাদের দল ৪-১ এ সিরিজ জিতল, চারটা জিতলাম একটা জিততে পারিনি। তারা বলে বেড়াচ্ছেন বা বলতে চাইবেন, বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে গেছে। সিরিজ জিতেছি সেটা বলবে না।’
জিডিপি নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘আমরা যদি দেখি ব্যাহত হচ্ছে বা ইনফেকটেড হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে সেক্ষেত্রে সেটি দেখা হবে। এ মুহূর্তে আমাদের জিডিপির যে অবস্থা তাতে আমরা এটি কাভার করতে পারব বলে আশা করি।’