পৃথিবীর বয়স যত বাড়ছে ততই যেন একের পর এক সমস্যা ধেয়ে আসছে। বর্তমানে শক্তিশালী তিন সমস্যায় মুখোমুখি বিশ্ব। তিন সমস্যার মধ্যে রয়েছে করোনা মহামারি, রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধ এবং মাস্কিপক্স। করোনা মহামারি শেষ না হতেই পৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করেছে মাস্কিপক্স। এ নিয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নতুন করে মাথা ব্যাথা শুরু হয়েছে। রোগটি সম্পর্কে ইতোমধ্যে সংস্থাটি বিশ্বকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দিয়েছে। খবর বিবিসি।
মাস্কিপক্স নিয়ে জেনেভায় এক আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়। যেখানে জাতিসংঘের স্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থার বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় ড. টেড্রোস আধানম গেব্রেইসাস বলেন, আফ্রিকার প্রায় ১৫ টি গোষ্ঠীর মধ্যে এই রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।
এছাড়া ইউরোপ, যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, অস্ট্রেলিয়া ও ইসরায়েলসহ বিশ্বের প্রায় ৮০’র অধিক দেশে এর প্রাদুর্ভার ছড়িয়ে পড়েছে। যদিও বিরাট এক জনগোষ্ঠীর জন্য এই রোগ তেমনটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়।
মাঙ্কিপক্স ভাইরাস যা মধ্য এবং পশ্চিম আফ্রিকার প্রত্যন্ত অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। মানুষের মাঝে এ ভাইরাস খুব দ্রুত ছড়াচ্ছে না। এছাড়া অসুস্থার প্রবণতা কিছুটা কম।
যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য পরিসেবা সংস্থা জানিয়েছে অধিকাংশ মানুষ এ ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আবার সুস্থ হয়েছে।
তবে হঠাৎ করে রোগটি নতুন করে ছড়িয়ে পড়ায় বিজ্ঞানীরা হতবাক হয়েছে। যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সংস্থা নতুন আদেশ জারি করেছে। আদেশের মধ্যে রয়েছে- কোনো ব্যক্তি এ রোগে আক্রান্ত হলে তাকে তিন সপ্তাহ নিজস্ব আইসোলেটে থাকতে হবে। এদিকে বেলজিয়ামই প্রথম দেশ যারা শুক্রবার থেকে কোনো ব্যক্তি এই মাস্কিপক্সে আক্রান্ত হলে বাধ্যতামূলকভাবে তাকে তিন সপ্তাহ কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দিয়েছে।
রোববার বিশ্ব সংস্থার এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সংস্থাটির প্রধান ড. টেড্রোস বলেন, আমরা শুধু করোনা মহামারি সংকট পার করছি না। পৃথিবীতে আরও অনেক সমস্যা রয়েছে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবী জুড়ে আমরা সংকট দেখতে পাচ্ছি। এর মধ্যে ইবোলা, মাস্কিপক্স এবং হেপাটাইসিস সমস্যা। এছাড়া যুদ্ধের কারণে আফগানিস্তান, ইথিওপিয়া, সোমালিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া এবং ইউক্রেন ও ইয়েমেনে মানবিক সংকট সৃষ্টি হয়েছে।
মাস্কিপক্স সর্বপ্রথম যুক্তরাজ্যে শনাক্ত হলেও এরপর ইউরোপে অন্যান্য দেশে ছড়িয়ে পড়ে। এর মধ্যে স্পেন, পর্তুগাল, জার্মানি, বেলজিয়াম, ফ্রান্স, নেদারল্যান্ড, ইতালি এবং সুইডেন। এছাড়া নতুন করে অস্ট্রেলিয়া ও সুইজারল্যান্ডেও এ ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।