পৃথিবীর চেয়ে ৮.৮ গুণ বড়- এমন অনন্য একটি এক্সোপ্ল্যানেট (সৌরজগতের বাইরের গ্রহ) আবিষ্কার করেছেন বিজ্ঞানীরা। এছাড়া এর মাধ্যমে এই প্রথম কোনো এক্সোপ্ল্যানেটের ১০০ দিনের বেশি কক্ষপথের কথা জানা গেছে। যে নক্ষত্রটিকে ঘিরে এটি প্রদক্ষিণ করে চলেছে, তা এতো উজ্জ্বল যে খালি চোখে দেখা যাওয়ার মতো।
নতুন আবিষ্কৃত এই গ্রহটিতে পৃথিবীর চেয়ে বেশি পানি রয়েছে। এর অবস্থান পৃথিবী থেকে মাত্র ৫০ আলোকবর্ষ দূরে লুপাস নক্ষত্রমণ্ডলে। নক্ষত্রমণ্ডলটির এনইউ-২ লুপি নক্ষত্রের কথা বিজ্ঞানীরা আগে থেকেই জানতেন। এতোদিন মনে করা হতো সেখানে মাত্র দুটি গ্রহ রয়েছে। গ্রহ দুটিকে ‘বি’ এবং ‘সি’ অক্ষর দিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছিল। কিন্তু ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সির কিওপস স্পেস টেলিস্কোপের সাম্প্রতিক ছবিতে সেখানে ধরা পড়েছে আরেকটি গ্রহের অস্তিত্ব। ‘ডি’ অক্ষর দিয়ে চিহ্নিত এই তৃতীয় গ্রহটি পৃথিবীর চেয়ে একটু বড়ো এবং নেপচুনের চেয়ে একটু ছোট। আর এই গ্রহের এক বছরের দৈর্ঘ্য ১০০ দিনের চেয়ে বেশি।
ইউরোপীয়ান স্পেস এজেন্সি (ইসা) জানিয়েছে, আগে আবিষ্কৃত দুটি গ্রহে বছরের দৈর্ঘ্য ছিল ১১.৬ এবং ২৭.৬ দিন। আর এই তৃতীয় গ্রহে সেই দৈর্ঘ্য ১০৭.৬ দিন। শুধু তাই নয়, এখানে পৃথিবীর মোট পানির তুলনায় প্রায় তিনগুণ বেশি পানি রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। তবে সেই পানি তরল অবস্থায় নেই। হয় প্রবল চাপে জমে বরফ হয়ে রয়েছে, অথবা প্রবল উষ্ণতায় জলীয় বাষ্পে পরিণত হয়েছে। ফলে পানির অস্তিত্ব সত্ত্বেও প্রাণধারণের উপযুক্ত পরিবেশ নেই।
বিজ্ঞানীদের মতে, ‘বি’, ‘সি’ এবং ‘ডি’- তিনটি গ্রহের কোনোটিই বসবাসের উপযোগী নয়। তবে ‘ডি’ গ্রহটি হাবল স্পেস টেলিস্কোপ এবং জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপের গবেষণার আকর্ষণীয় বিষয় হতে পারে এর দীর্ঘ কক্ষপথের কারণে। গ্রহটি পৃথিবীর মতো প্রায় একই আকৃতির হলেও কেন একইরকম নয়, তা জানার সুবর্ণ সুযোগ দেবে ভবিষ্যতের গবেষণা।