বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিআরআরআই) আগামী দুই দশকের সম্ভাব্য অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ ও সরকারের ভিশন ২০৪১-এর সঙ্গে সমন্বয় করে ধান উৎপাদনের কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করেছে। ব্রি কর্মকর্তারা বলছেন, এটি বাস্তবায়ন করা গেলে দুটি প্রধান মৌসুমি ধান বোরো ও আমনের উৎপাদন বাড়ানো সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ বর্তমানে বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ধান উৎপাদনকারী এবং ভোক্তা, পাশাপাশি বাংলাদেশ এখন আর আমদানির ওপর নির্ভরশীল নয় বলে মন্তব্য করেছেন ব্রি কর্মকর্তারা।
ব্রি মহাপরিচালক ড. শাহজাহান কবির বলেন, ‘এসডিজি-২ লক্ষ্য অর্জনের জন্য ২০৪১ সালের মধ্যে উদ্বৃত্ত চাল উৎপাদনের জন্য কৌশলগত পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘তাদের পরিকল্পনা একটি গবেষণার ওপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে, যার লক্ষ্য ছিল দুটি প্রধান মৌসুমি ধান বোরো ও আমনের উৎপাদন বাড়ানো।’
কবির বলেন, ‘দেশের আবাদযোগ্য জমি প্রতিবছর এক শতাংশ হারে কমে যাচ্ছে এবং জলবায়ু পরিবর্তনের জন্যও কৃষি খাত হুমকির মুখে পড়েছে। এই বিষয়টি মাথায় রেখে এই পরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।’
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী দেশে এখন প্রায় তিন কোটি ৬০ লাখ টন ধান উৎপাদিত হচ্ছে। এ ক্ষেত্রে ব্রি’র লক্ষ্যমাত্রা ২০৪০ সালে উৎপাদন পাঁচ কোটি ৪১ লাখ টন এবং ২০৫০ সালে ছয় কোটি নয় লাখ টনে উন্নীত করা। প্রধানত আমন ও বোরোর উচ্চফলনশীল প্রজাতির উন্নয়নের মাধ্যমে এই উৎপাদন বাড়ানো হবে।
সরকারি পরিসংখ্যানে ২০২০ সালে দেশের জনসংখ্যার আকার ১৬ কোটি ৪৭ লাখ ধরা হয়। জনসংখ্যা বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, প্রতি বছর বাংলাদেশে ২০ লাখ নবজাতকের মাধ্যমে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এতে আগামী তিন দশকে জনসংখ্যার আকার দাঁড়াবে ২১ কোটি।
কবির বলেন, ‘আমরা স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছি। জিনগত উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতি বছর আমরা হেক্টর প্রতি ৪৪ কেজি হারে উৎপাদন বৃদ্ধির পরিকল্পনা করছি। কৃষি-বাস্তুসংস্থান ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ফলনের ব্যবধান এক শতাংশ কমিয়ে আনছি এবং নতুন জাতের দ্রুত সম্প্রসারণ করছি।’
ব্রি প্রধান বলেন, সহযোগী কৃষি বিজ্ঞানীদের মতে পরিকল্পনার ৭৫ শতাংশ বাস্তবায়ন হলেও বাংলাদেশে খাদ্য মজুদ, রপ্তানি এমনকি, মাছের খাবারের জন্য উদ্বৃত ধান উৎপাদন সম্ভব হবে।’ তিনি বলেন, ‘এই পরিকল্পনার আওতায় ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে উদ্বৃত্ত দাঁড়াবে ৪২ লাখ টন, ২০৪০ সালে ৫৩ লাখ টন এবং ২০৫০ সালে উদ্বৃত্ত দাঁড়াবে ৬৫ লাখ টন।’