প্রবাসে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক এবং সাবেক পররাষ্ট্র সচিব মহিউদ্দিন আহমদ ইন্তেকাল করেছেন। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। সোমবার সন্ধ্যায় রাজধানীর উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর। গত রোববার (১৯শে জুন) এই বীর মুক্তিযোদ্ধার জন্মদিন ছিলো।
মরহুমের স্ত্রী বিলকিস মহিউদ্দিন জানান, দীর্ঘদিন ধরে মহিউদ্দিন আহমদ লিভার সিরোসিস রোগে ভুগছিলেন তিনি। গুরুতর অবস্থায় গত মাসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিলো। প্রায় এক মাস হাসপাতালে থাকার পর গত সপ্তাহে বাসায় ফেরেন মহিউদ্দিন আহমদ। সোমবার আবারও অবস্থার অবনতি হলে উত্তরার ক্রিসেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেই ইন্তেকাল করেন তিনি।
পেশাদার কূটনীতিবিদ মহিউদ্দিন আহমদ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় লন্ডনে পাকিস্তান হাইকমিশনে দ্বিতীয় সচিব থাকা অবস্থায় বাংলাদেশে গণহত্যার প্রতিবাদে পদত্যাগ করেন। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। বঙ্গবন্ধু পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে লন্ডন পৌঁছলে হিথ্রো বিমানবন্দরে তিনি স্বাগত জানান এবং সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন।
নব্বইয়ের পর বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার তাঁকে চাকরিচ্যুত করে। তার অপরাধ ছিল, তিনি জাতিসংঘে তার অফিসে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ছবির পাশাপাশি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবিও টাঙ্গিয়েছিলেন। পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এসে তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করে এবং পররাষ্ট্র সচিব হিসেবে তিনি অবসর নেন।
তাঁর মৃত্যুতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। মন্ত্রী শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে বলেন, মহিউদ্দিন আহমেদ বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একজন দেশপ্রেমিক নাগরিক ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে তার অবদান অনস্বীকার্য।
১৯৪৪ সালের ১৯শে জুন ফেনীর নুরপুর গ্রামে মহিউদ্দিন আহমদের জন্ম। মহিউদ্দিন আহমেদের মরদেহ মঙ্গলবার তার গ্রামের বাড়ি ফেনীতে নেওয়া হবে। সেখানে তাকে দাফন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিবার।