দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে চলমান করোনা মহামারিতে বিশ্বজুড়ে মৃতের সংখ্যা ৫০ লাখ ছাড়িয়েছে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের এক হিসাব থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
করোনায় সবচেয়ে বেশি মানুষ মারা গেছে দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোতে। করোনায় মোট মৃত্যুর ২১ শতাংশই ঘটেছে দক্ষিণ আমেরিকায়। এ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে আছে উত্তর আমেরিকা ও পূর্ব ইউরোপ। উভয় অঞ্চলে করোনায় মৃত্যুর হার ১৪ শতাংশের বেশি। তবে, নির্দিষ্ট দেশ হিসেবে মহমারিতে সবচেয়ে বেশি মৃত্যু দেখেছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, ব্রাজিল, মেক্সিকো এবং ভারত।
গত সপ্তাহে করোনায় প্রতিদিন বিশ্বে গড়ে মারা গেছে ৮ হাজার মানুষ। প্রতি মিনিটে মৃত্যু হয়েছে ৫ জনের। তবে, কয়েক সপ্তাহ আগে এ সংখ্যা আরও বেশি ছিল।
এদিকে, বিশ্বজুড়ে দিন দিন করোনার টিকা বণ্টনে বৈষম্য প্রকট হয়ে উঠছে। অনেক উন্নত দেশ যেখানে তাদের নাগরিকদের করোনা টিকার তৃতীয় বা বুস্টার ডোজ দেওয়া শুরু করেছে, সেখানে বিশ্বের মোট জনসংখ্যার (৭৮৯ কোটি) অর্ধেকেরও বেশি এখন পর্যন্ত করোনা টিকার একটি ডোজও নিতে পারেনি।
তবে, আশার কথা হলো—বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) টিকা বিতরণ প্রকল্প কোভ্যাক্স ইনিশিয়েটিভসে কিছু পরিবর্তন এনেছে। গত সপ্তাহে ডব্লিউএইচওর সহকারী মহাপরিচালক ও টিকা বিতরণ বিভাগের প্রধান ম্যারিয়েঞ্জেলা সিমাও সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের অবহিত করেছেন।
ডব্লিউএইচওর সহকারী মহাপরিচালক বলেছেন, ‘অক্টোবর থেকে করোনার টিকা বণ্টনে কিছু পরিবর্তন আনা হচ্ছে। এখন থেকে আমরা শুধু সেসব দেশেই টিকা পাঠাব, যারা এ পর্যন্ত সবচেয়ে কম টিকার ডোজ পেয়েছে বা একেবারেই পায়নি।‘
উল্লেখ্য, কোভ্যাক্স কর্মসূচির আওতায় চলতি বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ১৪০টি দেশে জনসংখ্যার অনুপাতে টিকা পাঠানো হয়েছে। করোনা মহামারির শুরু থেকে বিশ্বের যেসব দেশে করোনায় মৃত্যু সবচেয়ে বেশি হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে শীর্ষ তিন দেশ হলো—যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও রাশিয়া।
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতে টিকাদান কর্মসূচি জোরালোভাবে এগিয়ে চলছে। এ দুটি দেশের সরকারি তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৫৬ শতাংশ এবং ভারতে ৪৭ শতাংশ করোনা টিকার দুই ডোজ নিয়েছেন। তবে এই দুই দেশের তুলনায় বেশ পিছিয়ে আছে রাশিয়া। অথচ, এ দেশটি বিশ্বে প্রথম করোনা টিকা উদ্ভাবন করেছিল। প্রতিবেদনে রয়টার্স জানিয়েছে, রাশিয়ার মোট প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার মাত্র ৩৩ শতাংশ করোনা টিকার দুই ডোজ পেয়েছেন।