জাতির জনক শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার ষড়যন্ত্র বেশ আগে থেকেই আঁচ করেছিলেন অনেকে; সতর্কও করেন তাঁকে। হত্যাকান্ডের পাঁচ-ছয় ঘন্টা আগেও রাতে যারা বঙ্গবন্ধুর সাথে শেষ দেখা করেছিলেন তাদের মধ্যেও কেউ কেউ তাঁকে হত্যার আশঙ্কার কথা জানিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কখনোই বিশ্বাস করেননি বাঙালি তাকে মারবে। হত্যাকাণ্ডের সময় ভোরে নিকটতম প্রতিবেশিরাও গুলির শব্দে কল্পনা করেননি বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হচ্ছিলো। আজ ১৫ই আগস্ট সেই কলঙ্কজনক হত্যাকাণ্ডের ৪৭তম বার্ষিকীর আগে সেসব বেদনাবিধুর স্মৃতি জানিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর ঘনিষ্ট কয়েকজন।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ভোরে রাজধানীর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করেছিলো সেনাবাহিনীর বিপথগামী একটি দল। দেশের বাইরে থাকায় প্রাণে বাঁচেন বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বাঙালি তাঁকে হত্যা করবে এটা ছিল বঙ্গবন্ধু মুজিবের কাছে অবিশ্বাস্য।
এমনকি হত্যাকাণ্ডের পাঁচ-সাত ঘন্টা আগেও পঁচাত্তর সালের ১৪ই আগস্ট রাতে যারা বঙ্গবন্ধুর বাসায় গিয়ে দেখা করেছিলেন, তাদের স্মৃতিতেও জাতির জনকের সেই দৃঢ় বিশ্বাস আজও উজ্জ্বল।
পঁচাত্তরের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে ঘিরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি উৎসবের দিন হবার কথা ছিলো। কিন্তু বাঙালির জীবনে আজকের তারিখটি চিরকালীন বেদনার দিবস হয়ে গেছে।
বঙ্গবন্ধুকে ভোরে হত্যার সময়ের দুঃসহ স্মৃতি আজও তাড়িত করে ধানমন্ডির ঘনিষ্ট প্রতিবেশিদের। তাদের একজন জানান, সেদিনের বিভিষীকাময় দিনটির কথা।
বাঙ্গালী জাতির প্রতি নিখাঁদ ভালোবাসা ছিলো অকুতোভয় বঙ্গবন্ধুর প্রাণজুড়ে। বাঙালীকে স্বাধীন দেশ উপহার দিয়েছেন। তাঁর এই বাড়িই হয়েছিল বাঙালীর স্বাধীনতার ঠিকানা। এই বাড়িতেই তাঁর প্রাণ কেড়ে নেয় নিজের দেশের একদল সেনা। নির্ভয়ে নিজের প্রাণ বিসর্জনের মর্মান্তিক পর্বটি বিশাল হৃদয়ের বঙ্গবন্ধুকে মহান করলেও, বাঙালি জাতির জন্য হয়ে আছে চিরকালীন কলঙ্কের অধ্যায়।